বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার যুগান্তকারী কর্মসূচিগুলো ইতিহাস হয়ে থাকবে

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না, সেটা আজ প্রমাণিত সত্য। বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছি। উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, তা যেন অব্যাহত থাকে, যেন থেমে না যায়, সেজন্যই প্রয়োজন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই।
মিঞা মুজিবুর রহমান
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বঙ্গবন্ধু বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম মহানায়ক। সেরা মুক্তি সংগ্রামী, সেরা রাষ্ট্রনায়ক। জননন্দিত নেতা হিসেবে তার তুলনা তিনি নিজেই। দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ও দায়বোধ তাকে মহীরুহে পরিণত করেছিল। ব্যক্তি শেখ মুজিব হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু। বাঙালি জাতি, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দে পরিণত।

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে মুক্তিযুদ্ধের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আসন্ন যুদ্ধের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বানও জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রকণ্ঠ আজও কাঁপন ধরায় বাঙালির রক্তে। আলোড়ন তোলা সেই আহ্বানের জন্যই যেন বাঙালি জাতি অধীর অপেক্ষায় ছিল। বিদু্যৎবেগে সেই আহ্বান সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো' স্স্নোগানে স্বাধীনতার জন্য উন্মুখ জাতি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল।

স্বাধীনতা যে কোনো জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও তা এক মহাসত্য। এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে রক্তস্নাত পথ ধরে। স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষকে আত্মোৎসর্গ করতে হয়েছে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ী আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তারা রাতের আঁধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর।

শুরু হয় ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম গণহত্যা। জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে ২৬ মার্চের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ডাক দেন সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আর এর মাধ্যমেই অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মহিমান্বিত বিজয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ৯ মাস যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে নতুন একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত হন বঙ্গবন্ধু। দেশের অর্থনীতিকে সচল করতে সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মৃতু্যর আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াই করে গেছেন। অন্যের দুঃখ-কষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সর্বদাই আবেগাপস্নুত করত। বঙ্গবন্ধু নিজের কিংবা তার পরিবারের জন্য কখনোই কিছু চাইতেন না। খুবই সাধারণ জীবনযাপন করতেন। রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েও সরকারি বাসভবনে থাকতেন না। নিরাভরণ, ছিমছাম আর আটপৌরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটিতেই আমৃতু্য থেকেছেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন ব্যাপক অগ্রগতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার প্রবর্তক। সংবিধানে তিনি অর্থনৈতিক মুক্তিকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতির বিষয়টি লিপিবদ্ধ করেছেন। আজ তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেকসই প্রবৃদ্ধি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আদর্শ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের পরিচয় পেয়ে গেছে। এখন আমরা দ্রম্নত এগুচ্ছি পুরোপুরি মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম ও অতুলনীয়া। তার দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার। তার সাহসিকতা এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প আলোর মুখ দেখেছে। বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে তিনি 'ভিশন ২০২১' ও 'ভিশন ২০৪১' কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন এবং সে অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও এর বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাস হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক, বিশ্বে প্রভাবশালী নারী প্রধানমন্ত্রী, অনুকরণীয় অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। শেখ হাসিনার শাসনামলে দেশে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, মূল্যবোধ, কৃষি, অর্থনীতি, রেমিট্যান্স, বিদু্যৎ, বৈদেশিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশবাসীকে যুগান্তকারী সাফল্য এনে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু আর্থিক বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়েছে, বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন রকমের সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

শুধু দেশেই নয়- আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তার কাজের স্বীকৃতি মিলেছে। বাংলাদেশের সফলতা ও নেতৃত্বগুণের জন্য তিনি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন ও নানাবিধ সম্মানে ভূষিত হয়ে বাংলাদেশের নাম বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল করেছেন। বিশ্বের প্রভাবশালী নেতারা এখন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে। বিশ্ব গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা এখন বহুল আলোচিত ও প্রশংসিত নেতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনা ছাড়া এমন গুণাবলি সম্পন্ন আর কোনো নেতা বাংলাদেশের মানুষ পায়নি। এ কারণে তার সঙ্গে অন্য কোনো নেতার তুলনা চলে না, শেখ হাসিনা নিজেই নিজের তুলনা।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না, সেটা আজ প্রমাণিত সত্য। বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছি। উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, তা যেন অব্যাহত থাকে, যেন থেমে না যায়, সেজন্যই প্রয়োজন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই।

তিনি বারবার অবসর চাইলেও তাকে অবসর দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে তাকে আমৃতু্য রাষ্ট্রের প্রধানের দায়িত্বে দেখতে চাই।

মিঞা মুজিবুর রহমান: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও চেয়ারম্যান বাংলাদেশ মিডিয়া অ্যান্ড ম্যানেজম্যন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66269 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1