শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিষিদ্ধ রেনিটিডিন

যথাযথ পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

সম্প্রতি দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান গস্ন্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) তাদের তৈরি রেনিটিডিন ট্যাবলেটে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের উপস্থিতির কারণে বিশ্ববাজার থেকে এটি তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয়। আর স্বাভাবিকভাবে এ কারণে বাংলাদেশেও এই ওষুধ নিষিদ্ধ করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হলো- এরপরেও বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ রেনিটিডিন। প্রসঙ্গত বলা দরকার, রোববার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঘোষণার পরও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন ওষুধের দোকানে বিক্রি হচ্ছে রেনিটিডিন- এমন তথ্য পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে।

আমরা বলতে চাই এই বিষয়টি আমলে নেয়া জরুরি যে, ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের রেনিটিডিন বিক্রি বন্ধের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। যে কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নির্মূলে বহুল প্রচলিত এ ওষুধটি বিক্রি এখনো বন্ধ হয়নি। তা ছাড়া এর চাহিদাও অনেক। আর ওষুধ কোম্পানিগুলো এখন পর্যন্ত এ ওষুধ ফিরিয়ে নেয়ার কোনো নির্দেশনাও দেয়নি। তাই এখনো বিক্রি চলছে। আমরা মনে করি, বিষয়টি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বাজারে নিবন্ধিত বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ২২০ ধরনের রেনিটিডিন ওষুধ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মাত্রার রেনিটিডিন ট্যাবলেট, সিরাপ ও ইনজেকশন। রেনিটিডিন প্রস্তুতকারী প্রায় প্রতিটি ফার্মা কোম্পানিরই বিভিন্ন মাত্রায় এই তিন ধরনের ওষুধই রয়েছে।

উলেস্নখ্য, গস্নাক্সোস্মিথক্লাইনের রেনিটিডিন ওষুধটিতে মার্কিন ফুড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অল্পমাত্রায় এনডিএম (মেটালো বেটা ল্যাকটামেজ) পেয়েছে। ফলে এটা মনে রাখা দরকার, এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া দূষিত বাতাসে পাওয়া যায়, যা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে চিহ্নিত হয় বলে জানা গেছে। এর আগে বস্নাড প্রেসারের ওষুধ ভালসার্তান ও লোসার্তানের ব্যাপারে তদন্ত করে উচ্চমাত্রায় এনডিএম পেয়েছিল এফডিএ। সেসময় ওই ওষুধটিও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যদিও রেনিটিডিনে তা অল্প মাত্রায় পাওয়ায় সেটি মারাত্মক ক্ষতিকর কিনা সেটা যাচাই করতেই ওষুধটি সাময়িক স্থগিত করেছে। এমনকি বাংলাদেশ থেকেও তারা ওষুধটি ফিরিয়ে নেবে বলে জানিয়েছে।

আমরা বলতে চাই যে, যেহেতু এনডিএম সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে থাকে। দূষিত বাতাস থেকে এটি মানবদেহে প্রবেশ করেই মারাত্মক ক্ষতি করে। সে ক্ষেত্রে যদি ওষুধের মাধ্যমে সরাসরি রক্তের সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে ক্যান্সারের ফ্যাক্টর বা সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে কাজ করতে পারে। সঙ্গত কারণেই ভোক্তাদের নিজ দায়িত্ব থেকেই ওষুধটি কেনা ও সেবন বাদ দেয়া উচিত। তাই বাজারে থাকলেও রেনিটিডিন না কেনার পরামর্শই দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। ফলে বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে সংশ্লিষ্টরা এগিয়ে আসবেন এমনটি কাম্য।

সর্বোপরি বলতে চাই, রেনিটিডিন ট্যাবলেটে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের উপস্থিতির কারণে বিশ্ববাজার থেকে এটি তুলে নেয়ার ঘোষণা এসেছে এবং বাংলাদেশেও এই ওষুধ নিষিদ্ধ করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ফলে বিষয়টি আমলে নিতে হবে এবং নিষিদ্ধ করার পরে এর যথাযথ বাস্তবায়নও নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেয়া প্রয়োজন যে, সাম্প্রতিক সময়েই এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে, বেশকিছু ওষুধের নিবন্ধন বাতিল করেছে সরকারের ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে চারটি অ্যান্টিবায়োটিক, তিনটি অ্যানোসথেটিক, পাঁচটি অ্যান্টিসাইকোটিক, ৬১টি ভিটামিন কম্বিনেশন ও নয়টি ইলেক্ট্রোলাইট কম্বিনেশন রয়েছে। কিন্তু নিবন্ধন বাতিলের পরও ওষুধ এখনো উৎপাদন ও বাজারজাত করছে কোম্পানিগুলো এমন অভিযোগ সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, নিষিদ্ধ রেনিটিডিনসহ সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<69201 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1