শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বুয়েট ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা

নৃশংসতার শেষ কোথায়?
নতুনধারা
  ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছেই। পত্রপত্রিকার পাতা উল্টালেই খুন, ধর্ষণ থেকে শুরু করে নানামাত্রিক অপরাধের চিত্র পরিলক্ষিত হয়। এমন সব ঘটনা সামনে আসে তার ভয়াবহতা যেন আদিম বর্বরতাকেও হার মানায়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের নিচতলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে চাই, এইভাবে যদি একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে তবে এর ভয়াবহতা কীরূপ তা অনুধাবন করা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প থাকতে পারে না।

জানা গেছে, ওই রাতে হলটির ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা বরকত উলস্নাহ ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেছেন। তবে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চকবাজার থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক ১০ জনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার। এ ছাড়া এই ১০ জনকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়েছে ডিবি খবরে এমন তথ্য সামনে এসেছে।

আমরা এই হত্যাকান্ডের প্রসঙ্গে বলতে চাই, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে যদি একজন শিক্ষার্থীকে এমন নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার মতো অপরাধ সংঘটিত হয়, তবে তার ভয়াবহতা কতটা- সেটা আমলে নেয়া অপরিহার্য। যেভাবে আবরারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটলো তা ভয়াবহতা অনুধাবন করে হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার যেমন বিকল্প নেই, তেমনি এই বিষয়টিও আমলে নেয়া জরুরি যে- দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভেতর যখন এমন হত্যাকান্ড ঘটানোর মতো ভয়ানক অপরাধ সংঘটনের প্রবণতা তৈরি হচ্ছে এবং পিটিয়ে মুহূর্তেই একটা জীবন শেষ করে দেয়া হচ্ছে, তখন তা এমন এক ভয়াবহ পরিস্থিতিকে ইঙ্গিত করে- যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। উলেস্নখ্য যে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক কিছু চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে আবরারের স্ট্যাটাস এ হত্যার কারণ বলে বুয়েটের ক্যাম্পাসে আলোচনা ছিল এমনটিও খবরে উঠে এসেছে। আমরা চাই, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যত দ্রম্নত সম্ভব সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিচারসহ ৭ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ হয়েছে। আমরা মনে করি, হত্যাকারীদের দ্রম্নত শাস্তি যেমন নিশ্চিত করতে, হবে তেমনি সংশ্লিষ্টদের একই সঙ্গে এটাও আমলে নিতে হবে যে, কেন একের পর এক এমন নৃশংস ঘটনা ঘটছেই। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা রোধ করা না গেলে তা মানুষের বসবাসের স্বাভাবিকতাকেই বিপর্যস্ত করবে- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, দেশ যখন নানাভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে- তখন দেশে এইভাবে বুয়েটের মতো উচ্চ বিদ্যাপীঠে একজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হবে- এমনটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই দেষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন এবং এর পাশাপাশি এই হিংস্র ও অপরাধপ্রবণতা কেন তৈরি হচ্ছে, কেন খুন থেকে শুরু করে নানামাত্রিক অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে, সেগুলো আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরকেই। একের পর এক মানুষ খুন হবে, ঘর থেকে বের হয়ে ঘরে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এমন পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ানক। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে- যেন আর কোনো আবরার হত্যাকান্ডের শিকার না হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<70192 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1