শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দারিদ্র্য বিমোচন

সরকারের পদক্ষেপ ইতিবাচক
  ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের প্রথাগত ও নতুন উপায় উভয়ই দরকার বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে যে উলেস্নখযোগ্য অগ্রগতি, এর বেশিরভাগই সম্ভব হয়েছে শ্রম আয় বৃদ্ধির কারণে। ২০১০-২০১৬ সময়ে ৮০ লাখ বাংলাদেশি দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। জোরালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমাচ্ছে। তবে দারিদ্র্য কমছে তুলনামূলক কম গতিতে। ২০১০ সাল থেকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বাড়লেও দারিদ্র্য বিমোচনের গতি কমছে।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য নিয়ে বিশ্বব্যাংক পুরাতন ডাটা দিয়েছে। আপডেট ডাটা দিলে দারিদ্র্যের চিত্র আরও উন্নত হতে পারতো। কেননা, দারিদ্র্য বিমোচনে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, কৃষি আধুনিক হচ্ছে। বাংলাদেশে ওয়ার্কিং পপুলেশনও শক্তিশালী। সরকারের প্রচেষ্টায় ২০৩০ সাল নাগাদ দারিদ্র্য থাকবে না। এখন স্বাভাবিক নিয়মেই প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের ওপরে। ৮ দশমিক ৩০ থেকে ১০ শতাংশে যাবে প্রবৃদ্ধি। তখন দারিদ্র্য আরও কমবে। কেবল কৃষি নয়, গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য হার কমাতে শিল্প ও সেবা খাত বেশি অবদান রেখেছে।

এটা সত্য, দারিদ্র্য একটি অভিশাপ এই কথা নতুনভাবে বলার অবকাশ নেই। দারিদ্র্য এর কারণে ব্যক্তির মনই কেবল সংকোচিত থাকে না, পরিবার সমাজ তথা রাষ্ট্রের অবস্থাও সঙ্গিন হয়ে পড়ে। জীবন সংগ্রামে পরাজিত মানুষ বেশিরভাগ সময় এ কঠিন সত্য উপলব্ধি করতে পারে। কারণ বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে নিজের চেষ্টা ও সংগ্রামে বেঁচে থাকতে হয়, নিজের ভাগ্য নিজেই গড়তে হয়। এখানে সমাজ, সরকার, রাষ্ট্রের বড় ধরনের ভূমিকা এর আগে চোখে পড়েনি। অথচ একটি গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়। ফলে দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে তেমন কোনো উলেস্নখযোগ্য সাফল্য আমাদের ছিল না। বর্তমান সরকার দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ফলে এ ক্ষেত্রে ইতিবাক পরিবর্তন ঘটেছে। বিশ্বব্যাংক যা-ই বলুক, বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। এর আগে বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে দারিদ্র্য দূরীকরণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। কারণ এ বিষয়ে কোনো কৌশলপত্র ছিল না সরকারের। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রণীত জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে সরকার, সে অনুযায়ী কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপও নিয়েছে। বিশেষ করে এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে নানা ধরনের আর্থিক প্রণোদনা। এর ফলে দারিদ্র্য হ্রাস পাবে এটাই স্বাভাবিক। এবার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থা, পানি সরবরাহ, অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও ধর্মীয় জাতিসত্তার সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। দারিদ্র্য হার কমিয়ে আনতে সব দরিদ্র পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। সরকারের এই ধরনের নানামুখী পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ অত্যন্ত ইতিবাচক। পরিবার সমাজ তথা রাষ্ট্র থেকে দারিদ্র্য দূর হোক এটাই আমরা চাই। তবে দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে না পারলে দারিদ্র্য পুরোপুরি দূর করা সম্ভব নয়। এ কারণে আমাদের যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা সে অবস্থায় এখনো যেতে পারিনি। এসব বাধা দূর করতে পারলে দারিদ্র্য আশানুরূপ হ্রাস করা সম্ভব। সম্ভব পর্যায়ক্রমে মধ্যম আয়ের ও উন্নত দেশের কাতারে পোঁছাও। আমরা প্রত্যাশা করছি বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ হবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি গর্বিত দেশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<70193 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1