বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকা

কারসাজি বন্ধ করুন
নতুনধারা
  ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বেড়েই চলছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম সব রেকর্ড ভেঙেছে। খুচরা বাজারে এখন পেঁয়াজের কেজি মানভেদে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। তাই ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ কিনতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘলাইনে অপেক্ষা করে ৪৫ টাকায় কিনছেন টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) পেঁয়াজ। রাজধানীতে পেঁয়াজ কিনতে মানুষের লম্বা সারি চোখে পড়ছে। প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ালে মিলছে পেঁয়াজ। তবে পেঁয়াজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রেতারা। এবার পেঁয়াজের দাম বাড়ার মূল কারণ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডব। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গত কয়েক দিন বন্দর থেকে পেঁয়াজ খালাস ব্যাহত হয়েছে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বেড়ে গেছে। অনেকেই বলছেন এটা ব্যবসায়ীদের অজুহাত মাত্র। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে।

এটা সত্য, পেঁয়াজ নিয়ে রীতিমতো নৈরাজ্য শুরু হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। এই যে পেঁয়াজ নৈরাজ্য, এটা দেখার যেন কেউ নেই। বারবার পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, পেঁয়াজের বাজারে কারসাজি অব্যাহত রয়েছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে ৬৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ভারত রপ্তানি বন্ধের পর থেকে এই অনুমতি নেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আমদানির অপেক্ষায় আছে ৬১ হাজার টন। আমদানির অনুমতি নেওয়া হলেও এখনো পেঁয়াজের বড় চালান দেশে এসে পৌঁছায়নি। সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে মিসর থেকে। দেশটি থেকে ৫৮ হাজার টন পেঁয়াজ আসার কথা। অথচ কয়েক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম খুচরায় ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা মুনাফা লুটলেও সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস বাড়ছে। রসনাবিলাসের জন্য পেঁয়াজের গুরুত্ব অপরিসীম। রন্ধনশিল্পে পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিদিনের রান্নায় পেঁয়াজের যোগান জরুরি। ৪০ টাকার পেঁয়াজ কী করে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করা আবশ্যক। বাণিজ্যমন্ত্রী এর আগে বলেছিলেন, অক্টোবর মাসের শেষে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কয়েকদিন আগে তিনি বলেছেন নতুন পেঁয়াজ আসার আগ পর্যন্ত প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার নিচে নামবে না। অথচ এখন ক্রেতাদের প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) উদ্যোগ বাজারে কোনো প্রভাব ফেলেনি।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে- বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কি কম? বলা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাজারে সংকট থাকায় হু হু করে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। এটা কতটা যৌক্তিক। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষের এখন করুণ অবস্থা। তারা এখন আর পেঁয়াজ খেতে পারছে না। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে- পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের নৈরাজ্য আর কতদিন চলবে। এর আগেও তারা চাল, পেঁয়াজ ও চিনি নিয়ে এমন কারসাজি করেছিল। এবারও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমন অরাজক পরিস্থিতির দ্রম্নত অবসান জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<75200 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1