অগ্নিকান্ডের ঘটনা রোধ হচ্ছে না। সম্প্রতি আবারও ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলও। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, টিকাটুলীর রাজধানী সুপার মার্কেটের বর্ধিত অংশ নিউ রাজধানী সুপার মার্কেটের অর্ধশত দোকান আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে মার্কেটের দোতলায় একটি তৈরি পোশাক বিক্রির দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলেই জানা যায়। দোতলার সব দোকান তৈরি পোশাক বিক্রির দোকান বলে আগুন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় মার্কেট খোলা ছিল। আগুন দেখে আত্মরক্ষার্থে চিৎকার করে দোকানের ক্রেতা ও বিক্রেতারা হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রথম দফায় ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানো শুরু করে। আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকায় পর্যায়ক্রমে ২৫টি ইউনিট দুই ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ আগুনে অর্ধশত দোকানের সব মালামাল পুড়ে যাওয়া ছাড়াও মার্কেটের দোকান মালিকরা ধারণা করছেন, ক্ষয়ক্ষতি প্রায় অর্ধকোটি টাকা।
প্রসঙ্গত আমরা উলেস্নখ করতে চাই যে, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিলে এটা স্পষ্ট হয়- অগ্নিকান্ডজনিত দুর্ঘটনা যেন বেড়েই চলেছে। এবারের ঘটনায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, যদিও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা যাচ্ছে- তবে সংশ্লিষ্টদের এটা মনে রাখা সমীচীন যে, এর আগে এমনসব ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে- যেখানে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রচুর প্রাণহানিও ঘটেছে। আমরা বলতে চাই, একের পর এক অগিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকলে তা আমলে নিতে হবে এবং অগ্নিকান্ডের মতো ভয়ানক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না কেন, তা খতিয়ে দেখা জরুরি এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এটা পরিলক্ষিত হয় যে, কোনো দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ সাধারণত দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্ত কমিটি ইত্যাদির আয়োজন করে কিছুদিন বেশ সরব ভূমিকা পালন করে। কিন্তু পরে বিষয়টি বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যায়- যা কাম্য নয়।
আমরা উলেস্নখ করতে চাই, এর আগে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল, তখন এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, সেই ঘটনা যেন ৯ বছর আগে সংঘটিত নিমতলী ট্র্যাজেডিরই পুনরাবৃত্তি। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলী অগ্নিকান্ডে প্রাণ হারিয়েছিল ১২০ জনেরও বেশি নারী-পুরুষ। এ ছাড়া আরো ভয়ানক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। বিভিন্ন সময়েই মার্কেটে আগুন, বস্তিতে আগুনসহ নানাভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং এই ধরনের ভয়ানক ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। বলা দরকার, এবারের অগ্নিকান্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, রাজধানী সুপার মার্কেট বন্ধ থাকে রোববার। ফলে আগুন যখন লাগে তখন সব দোকান খোলাই ছিল। আর আগুনে অর্ধশত দোকান পুড়ে যায়।
আমরা বলতে চাই, মার্কেটে আগুন, বিভিন্ন ভবনে আগুনসহ সামগ্রিকভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। মনে রাখা দরকার, অগ্নিকান্ড যে কোনো সময়ই ঘটতে পারে। সঙ্গত কারণেই পর্যাপ্ত প্রস্তুতির বিকল্প থাকতে পারে না। একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকবে এটা হতে পারে না। ফলে অগ্নিকান্ডের বিষয়ে সবারই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা অপরিহার্য বলেই আমরা মনে করি। কেননা, একটু সচেতনতা ও সাবধানতা আমাদের রক্ষা করতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা থেকে। আর এই বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে, সচেতনতা বাড়াতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে অগ্নিকান্ডের মতো ভয়ানক ঘটনার পনুরাবৃত্তি রোধ হোক এমনটি কাম্য।