শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক সাহায্যের আবেদন

নতুনধারা
  ২৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আমি এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বশ্রদ্ধ সালাম নেবেন। আমি আওয়ামী লীগের একজন নিঃস্বার্থ ও একনিষ্ঠ কর্মী এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক। রাজনীতি জীবনের শুরু থেকেই প্রতিটি নির্বাচনে আমি দলের জন্য কাজ করেছি। আমি ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক। সন্তানদের সাধ্যমতো পড়ালেখা করিয়েছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, শত চেষ্টার পরেও সন্তানদের কারও একটা সরকারি চাকরি হয়নি। অবশেষে কোনো রকমে ছোট ছেলেটি ছাড়া সবার বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। অন্যদিকে আমি এবং আমার স্ত্রী হৃদরোগ, কিডনি রোগ, শ্বাস-কষ্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত। বলতে লজ্জা নেই, চাইলেও পারি না ভালো চিকিৎসা নিতে। চাল-চলনে কাউকে বুঝতে দিইনি অভাব-অনটন। ছোট ছেলেটি বেশ কয়েকটা ভাইভা দিয়েও তারও কোনো চাকরি হয়নি। এই হতাশায় সে একবার আত্মহত্যা করতে চাইলেও কোনো রকমে বেঁচে যায়। কারণ এই বৃদ্ধ বয়সে আজও একা আমাকেই পরিবারের ভরণ-পোষণ করতে হচ্ছে। এমন হতাশায় সে আবারও আত্মহত্যা করে কিনা বা কোনো আইনবিরোধী কাজে জড়িয়ে পড়ে কিনা সে নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। অন্যদিকে বহু কষ্টে ছোট একটা ব্যবসা করতে গিয়ে একটা কোম্পানি আমাকে ঠকিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি এবং আমার স্ত্রী রীতিমতো দিশাহারা। বয়স না থাকায় সে এখন আর চাকরিতে আবেদনও করতে পারছে না। তা ছাড়া চাকরি না থাকায় তাকে এখন পর্যন্ত বিয়েও দিতে পারছি না। কারণ বিয়ের ক্ষেত্রে চাকরিটা এই এলাকায় অনেক বড় বিষয়। এই অবস্থায় কখন কে মারা যাই আলস্নাহ্‌? মালুম। আমাদের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন ছিল অন্তত যোগ্যতা অনুযায়ী তার একটা সরকারি চাকরি হবে। বাধ্য হয়েই আজ আপনার শরণাপন্ন হলাম। আপনিই আমার শেষ ভরসা ও শেষ আশ্রয়স্থল। তাই মৃতু্যর আগে আপনার মতো মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন বৃদ্ধ, হতভাগ্য পিতার করজোর সমেত বিনীত অনুরোধ, কোনো টাকা-পয়সা নয় বরং যোগ্যতা অনুযায়ী আমার সন্তানটির জন্য ভালো কিছু করবেন। ফলে সে একটা স্বাভাবিক জীবন পাবে, কয়েকজন নির্ভরশীল মানুষ হাফ ছেড়ে বাঁচবে এবং আমরাও শান্তিতে মরতে পারব।

মো. আজগর আলী

বাহুবল, হবিগঞ্জ

শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য শিক্ষা নয়

আমরা ছোটবেলায় যখন স্কুলে যেতাম, তখন বইকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে স্কুলে যেতাম। পথে বৃষ্টি এলে গায়ের জামা খুলে বই পেঁচিয়ে যেন বৃষ্টির পানি বইয়ে না লাগে, হয় কোথাও আশ্রয় নিয়েছি, না হয় দৌড়ে বাড়ি ফিরেছি। আর আজকের সমাজে? আজকের সমাজে ছেলেমেয়েরা বইকে পায়ের সঙ্গে ধাক্কিয়ে ধাক্কিয়ে স্কুল বা কলেজে নিয়ে যাচ্ছে। পথে বৃষ্টি এলে বইকে ছাতা হিসেবে ব্যবহার করছে। ইদানীং রাস্তাঘাটে বা যানবাহনে উঠলে চোখে পড়ে, বইকে একটা ব্যাগে ঝুলিয়ে বাসা থেকে বের হয়। ব্যাগের ফিতা বা বেল্ট এতো লম্বা থাকে যে, ওই ব্যাগটা গিয়ে পায়ের সঙ্গে আঘাত করে। এক সময় আমরা দেখতাম আমাদের মুরব্বিদের কখনো অসতর্কতাবশত কোনো লেখাওয়ালা কাগজ বা বইয়ে পা লাগলে সঙ্গে সঙ্গে সালাম করতো। আমরাও তাই করেছি। এখন কিন্তু আর তা দেখা যায় না। কারণ, এখন প্রতিনিয়ত আমরা বইকে পায়ের সঙ্গে ধাক্কিয়ে স্কুল-কলেজে নিয়ে যাই। তাই আমাদের বইয়ের প্রতি কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। সার্টিফিকেট সংগ্রহের নেশা বইয়ের প্রতি অনীহা ও জ্ঞানের প্রতি অনীহার কারণ।

বইয়ের প্রতি যেহেতু কদর কমে যাচ্ছে, তাই বর্তমান ছেলেমেয়েরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে অমনোযোগী হয়ে পড়েছে। বর্তমান সমাজের ছেলেমেয়েরা সার্টিফিকেট অর্জনের শিক্ষার প্রতি যতোটুকু মনোযোগী, প্রকৃত শিক্ষার গ্রহণের প্রতি ততোটুকু মনোযোগী নয়। কারণ তারা জানে অর্জিত ডিগ্রি তাদের যতো তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত করবে, প্রকৃত শিক্ষা তাদের ততো তাড়াতাড়ি প্রতিষ্ঠিত করবে না। কারণ একজন প্রকৃত শিক্ষিত ব্যক্তি কোনো অনৈতিক কাজ করতে গেলে বিবেকে বাধা দেবে, যা একজন সার্টিফিকেট ডিগ্রিধারীর বিবেকে সে বাধাটি দিচ্ছে না। বর্তমান সমাজের দিকে তাকালে আমরা তাই-ই দেখতে পাই। যে যেই পেশায় আছেন সে সেই পেশায় ডিগ্রি অর্জন করে টাকা উপার্জনের পেছনে ছুটছে। ভুলে যাচ্ছে তাদের কর্তব্য ও মনুষ্যত্ববোধ। ঘুষ, হিংসা, দুর্নীতি মানুষের মনের ভেতরে গেঁথে গেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড হচ্ছে।

এসব মনোভাবসম্পন্ন সার্টিফিকেট অর্জনকারী ব্যক্তিদের থেকে জাতি কি আশা করতে পারে। তারা বর্তমানে সার্টিফিকেট অর্জনের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে পড়েছেন। আর এ কারণেই নকলের প্রবণতা বেড়ে গেছে। নকল করে সার্টিফিকেট অর্জনকারী শিক্ষা, দেশ ও জাতির কোনো সুফল বয়ে আনবে বলে মনে হয় না।

জসিম মজুমদার

পুরানা পল্টন, ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<77228 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1