বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিদু্যতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে
নতুনধারা
  ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বিদু্যতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনগণ দুর্ভোগে পড়ে- এমন বিষয় বারবার আলোচনায় এসেছে। সঙ্গত কারণে বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। এ ছাড়া মনে রাখা দরকার, পরিবহণ ভাড়াসহ বিদু্যতের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব শিল্পক্ষেত্রে ও বিনিয়োগ তথা সার্বিক অর্থনীতিতে পড়ে; যা বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরেও সামনে এসেছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বিদু্যতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিষয়টি উঠে এসেছে। জানা গেল, ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পাইকারিতে ইউনিটপ্রতি বিদু্যতের দাম ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজারে টিসিবি অডিটোরিয়ামে বিদু্যতের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানিতে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, প্রস্তাব পর্যালোচনা করে বিইআরসি বলছে, সরবরাহ ব্যয় সমন্বয় করতে ইউনিটপ্রতি ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানো যেতে পারে।

আমরা মনে করি, বিদু্যতের দাম বাড়লে এর নেতিবাচক বিষয়গুলো কী হতে পারে সেটি আমলে নিতে হবে এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মনে রাখা দরকার, বিদু্যতের দাম বৃদ্ধির কারণে যেমন উৎপাদন ব্যয় বাড়ে, তেমনি গ্রাহক পর্যায়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া উৎপাদন ব্যয় বাড়ার কারণে উদ্যোক্তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবে এমন আশঙ্কাও থেকে যায়। সঙ্গত কারণেই এসব প্রেক্ষাপটের সব দিক পর্যালোচনা করে বিদু্যতের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নেওয়া সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়।

তথ্য মতে, শুনানিতে পিডিবির জিএম (বাণিজ্যিক কার্যক্রম) বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পাইকারিতে বিদু্যতের সরবরাহ ব্যয় ছিল ৫ টাকা ৮৩ পয়সা। এখন বিদু্যতের পাইকারি মূল্য ৪ টাকা ৭৭ পয়সা। ফলে গত অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৬২৩ মিলিয়ন টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এ ছাড়া ২০২০ পঞ্জিকা বছরে গড় সরবরাহ ব্যয় হবে ৫ টাকা ৮৮ পয়সা; কিন্তু বর্তমান মূল্য বজায় থাকলে এ বছর ঘাটতি হবে ৮৫ হাজার ৬০৬ মিলিয়ন টাকা। আর এই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে ইউনিটপ্রতি বিদু্যতের পাইকারি মূল্য ১ টাকা ১১ পয়সা বাড়ানো প্রয়োজন এমনটিও উঠে এসেছে। আর দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে জানা যাচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, গ্যাসের মূল্য ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি, কয়লার ওপর নতুন করে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ, বিদু্যৎ উৎপাদনে ব্যয় বৃদ্ধি ও কোনো কোনো বিতরণ সংস্থা কর্তৃক সময়মতো টাকা পরিশোধ না করাকে উলেস্নখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বছর প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসানের পূর্বাভাস দিয়ে বিইআরসির দ্বারস্থ হয়েছে পিডিবি। পিজিসিবি চায়, চার বছর আগে নির্ধারণ করা তাদের সঞ্চালন চার্জ তিন ধাপেই বাড়ানো হোক। প্রসঙ্গত এটাও উলেস্নখ করা দরকার, সর্বশেষ ২০১৭ সালের নভেম্বরে পাইকারি বিদু্যতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ায় সরকার। আর চলতি বছরের ৩০ জুন গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিদু্যতের দাম ২৬ শতাংশ বাড়ানোর যে প্রস্তাব পিডিবি দিয়েছে তা আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। বিদু্যৎ খাতে লোকসান যেমন কাম্য নয় তেমনি দামবৃদ্ধির ফলে নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক এটাও প্রত্যাশিত হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই আমরা চাই, বিদু্যতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সব ধরনের বিষয় আমলে নেওয়া হোক। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<77663 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1