বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিআইডিএসের গবেষণা আমলে নিন

দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন
নতুনধারা
  ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সরকারের নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও কমছে না পেঁয়াজের দাম। ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে অত্যাবশ্যক এই পণ্যটি। নিম্নবিত্ত ও বিত্তহীনরা পেঁয়াজ খেতে পারছে না। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৪ লাখ মেট্রিক টন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ও আমদানির মাধ্যমে দেশের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করা হয়। পেঁয়াজ অত্যাবশ্যক পণ্য। ধনী-গরিব সবার কম-বেশি পেঁয়াজ লাগে। অথচ সরকার পেঁয়াজের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আর এই সুযোগ নিয়েছে এ দেশে অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা। তারা ইচ্ছেমতো পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যে পেঁয়াজ আমদানি করতে খরচ পড়েছে ৪০ টাকা তা বিক্রি করা হয়েছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। পেঁয়াজ নিয়ে এর চেয়ে ভয়াবহ অরাজকতা আর কী হতে পারে।

উলেস্নখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নূ্যনতম মূল্য প্রতি মেট্রিক টনে ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। দাম যাতে আর না বাড়ে, সে জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাজারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) পক্ষ থেকে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন দেশের পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি ও প্রতিযোগিতার অবস্থা তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গবেষণায় বলা হয়, পেঁয়াজ ৬০ শতাংশ দেশীয় উৎপাদন থেকে আসে, বাকি ৪০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ ভারত থেকেই মূলত পেঁয়াজ আমদানি করে। ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিকে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ ছাড়া দক্ষিণ ভারত, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট অঞ্চলে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছর ভারতের সব অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার ফলে উৎপাদিত পেঁয়াজের বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ভারতের স্থানীয় বাজারে অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এ কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এ বিষয়টি সরকার ভালোভাবে মনিটরিং করেনি। মনিটরিং না করার কারণেই এই সুযোগ নিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা, চরম দুর্ভোগে পড়েছে দেশের জনগণ।

বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজার ভারতনির্ভর, এ কথা সরকার জানে। এ বিষয়টি আগাম মনিটরিং করে বিকল্প বাজার খুঁজলে বর্তমান পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো। বাংলাদেশে পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভারতের বাজার সব সময় পর্যবেক্ষণ জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা। পেঁয়াজের বাজারে সরকারের মনিটরিং নেই। রাজধানীসহ সারা দেশে বাজারভেদে পেঁয়াজ ইচ্ছামাফিক দামে বিক্রি হচ্ছে। পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রির ক্ষেত্রেও একই চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি একই বাজারে ভিন্ন ভিন্ন দাম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় যে, পেঁয়াজের বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। এই অবস্থা কোনোভাবেই চলতে দেয়া যায় না।

মনে রাখতে হবে, পেঁয়াজের অত্যধিক দামের কারণে সাধারণ মানুষ পেঁয়াজ খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। অনেকেই অপেক্ষাকৃত কম দামে পেঁয়াজ কিনতে সরকারিভাবে ট্রাকে করে টিসিবি যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে, সেখানে লাইন ধরছেন। এই লাইনে শরিক হয়েছে দেশের মধ্যবিত্তরা। ট্রাকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির প্রভাব বাজারে না পড়ার কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছে না। আমরা মনে করি বিআইডিএস গবেষণাকে আমলে নিয়ে সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78922 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1