শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের জয়জয়কার

এসএ গেমসে সোনা জয়ীদের অভিনন্দন
নতুনধারা
  ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

১৩তম দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ রোববার ছয়টি সোনার পদক জয় করেছে। গেমস শুরুর দিনে বাংলাদেশ ১৬টি পদক জেতে। এর মধ্যে প্রথম স্বর্ণ জেতেন দিপু চাকমা। প্রথম দিন একটি স্বর্ণই আসে বাংলাদেশের পদক তালিকায়। পরদিন মঙ্গলবার কারাতে ডিসিপিস্নন থেকে আসে তিনটি সোনা। আর রোববার একদিনে ছয়টি সোনা জিতেছে বাংলাদেশের দামাল অ্যাথলেটরা। তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকালে রিকার্ভ ইভেন্ট থেকে তিনটি সোনার পদক পায় বাংলাদেশ। দুপুরে কম্পাউন্ড ইভেন্ট থেকে আসে আরও তিনটি সোনার পদক। নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠেয় এসএ গেমসে সোনা জয়ের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছেন বলেই প্রতীয়মান হয়।

তথ্য অনুযায়ী, এবারের ১৩তম দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ ২৫টি ডিসিপিস্ননে অংশ নিয়েছে। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার বিদেশের মাটিতে অনেক বেশি ভালো করবে বাংলাদেশ এমন আশাবাদের কথা জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে সোনা জয়ের মধ্যদিয়ে তার ইতিবাচক রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করছি। ফলে প্রত্যাশা থাকবে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন খেলোয়াড়দের আরও নিবিড় প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এটা বলা যেতে পারে যে, সাফল্যের ভিত্তি হচ্ছে মনোভাব বা দৃষ্টিভঙ্গি। খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদদের শক্তি ও সামর্থ্যের কতটা ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে- এটা দিয়ে সাফল্য নির্ধারিত হয়। তা ছাড়া সাফল্য নির্ভর করে খেলোয়াড়দের পরিশ্রম, দক্ষতা, মনঃসংযোগ ক্ষমতা ও পরিকল্পনার পুনরাবৃত্তির ওপর। বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা এর স্বাক্ষরও রাখছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই আমরা বিবেচনা করতে চাই।

ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের মানোন্নয়ন, বিভিন্ন খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রধান অনুপ্রেরণার চত্বর হলো এসএ গেমস। এটি ক্রীড়াঙ্গনের জন্য আলোর দিশারিও বটে। এই গেমসে অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে আমাদের ক্রীড়াঙ্গন যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি স্বপ্ন দেখাও সম্ভব হচ্ছে। জানা যায়, অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন পুরো বিষয়টিকে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দেখছে, এ জন্য বিভিন্ন উদ্যোগও নেয়া হয়েছে- যেটি আগে কখনো দেখা যায়নি। সুতরাং সার্বিকভাবে সচেতনতা বাড়ছে এবং খেলার গুরুত্ব রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনেও বাড়ছে- এমনটি মনে করা অমূলক হতে পারে না।

আমরা মনে করি, যে উদ্দেশ্য, চেতনা এবং স্বপ্ন নিয়ে এসএ গেমসের শুরু, সেই চেতনা এবং লক্ষ্য সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সদস্য দেশগুলোকে আন্তরিক থাকতে হবে। এশীয় অঞ্চলের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তা উভয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিপুল প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন ক্রীড়া বোদ্ধারা। ফলে আঞ্চলিক ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে এবং এই গেমসকে বাঁচিয়ে রাখতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে যে কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। নিয়মিতভাবে এই গেমস আয়োজন করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ নিঃসন্দেহে। সুতরাং বড় এই আসরটি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য, সুসম্পর্ক ও আস্থার বিষয়টিও জরুরি। আস্থা ও বিশ্বাসের অভাবে যেন দক্ষিণ এশিয়ার ক্রীড়াঙ্গনে বিরাট জনসম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে রাষ্ট্রগুলোকেই।

আমরা জানি ১৩তম এই গেমসে এ অঞ্চলের ৭ দেশের আড়াই হাজারেরও বেশি অ্যাথলেট ১১১৩ পদকের জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। বলাই বাহুল্য, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের মানের পরিপ্রেক্ষিতে বেশির ভাগ ক্রীড়াবিদ ও খেলোয়াড়ের স্বপ্ন হলো মাল্টিপল স্পোর্টস ডিসিপিস্ননের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক এই গেমসে অংশগ্রহণ এবং এই 'স্পোর্টস কার্নিভালে' দেশের জন্য অবদান রাখার সাধ্যমতো চেষ্টা। জন্মভূমির জন্য ক্রীড়াঙ্গনে লড়ার চেয়ে তো সম্মান ও গৌরবের আর কিছু নেই। সঙ্গত কারণে এই গেমসে অংশ নেওয়া আমাদের খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদরা আরও দূরের চত্বরে বড় স্বপ্ন দেখছেন এবং এটা যে বাস্তবসম্মত তা সোনা জয়ের মধ্য দিয়েও স্পষ্ট। ক্রীড়াঙ্গন চলমান প্যারেড, ফলে এখানে থমকে থাকার সুযোগ নেই। খেলোয়াড়দের সেদিকে নজর রাখতে হবে যথাযথভাবে।

সোনার পদক জয়ের জন্য আমরা দেশের অ্যাথলেট, কোচ এবং টিম অফিসিয়ালদের অভিনন্দন জানাই। মাঠের কৃতিত্ব অ্যাথলেটদের হলেও সার্বিকভাবে আনন্দের অংশীদার দেশের প্রতিটি মানুষ। অ্যাথলেটরা ভবিষ্যতে একইভাবে সোনা জয়ের মধ্যদিয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<79248 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1