বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ ডিসেম্বর : যে বিজয় জনতার

৩০ লাখ শহিদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। বাংলার মাটির ঘ্রাণ নিলে আজও তাদের রক্তের গন্ধ পাওয়া যায়। বাতাসে কান পাতলে শোনা যায় মা-বোনের কান্নার আওয়াজ।
ওমর খালেদ রুমি
  ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রম্নয়ারিতে শেখ মুজিব যখন লাহোরে সাংবাদিকদের সম্মুখে তার দাবি-দাওয়া সংবলিত ৬ দফা উপস্থাপন করলেন তখনই মূলত পাকিস্তানের দুই প্রান্ত পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সীমারেখা অঙ্কিত হয়ে গিয়েছিল। প্রথম দিকে ছয় দফাকে পশ্চিম পাকিস্তানিরা তেমন একটা পাত্তাই দিতে চায়নি। বরং এর মধ্যে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদের গন্ধ খুঁজে পেয়েছিল। আসলেই কিন্তু ছয় দফা এমন কিছু ছিল না। পাকিস্তানকে একটা শক্তিশালী ফেডারেশনে রূপ দেওয়াই ছিল মূলত ছয় দফার লক্ষ্য। শেখ মুজিব ছয় দফার মাধ্যমে পাকিস্তানের উভয় প্রান্তের মধ্যে একটা ভারসাম্য আনতে চেয়েছিলেন।

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের জন্মের পর পরই পশ্চিম পাকিস্তানিরা উভয় প্রান্তের ক্ষেত্রে অনুসৃত নীতির মধ্যে নিদারুণ একটা বৈষম্যের সূত্রপাত করেন। দিনে দিনে তা অসহনীয় মাত্রায় বাড়তে থাকে। আর এটা তো সত্য উভয় প্রান্তের উন্নয়ন ছাড়া সমৃদ্ধ পাকিস্তানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন অসম্ভব। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা শুধু তাদের ভাবনাটাই ভাবছিল। পশ্চিম পাকিস্তানিরা এতটা বৈষম্য করছিল যা মূলত ব্রিটিশরাও করেনি। স্বাভাবিকভাবেই বাঙালিরা হতাশ হয়ে পড়ছিল। বাঙালিরা হতাশ হয়ে পড়ছিল কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও তারা প্রতিনিয়ত বঞ্চনার শিকার হচ্ছিল। এমনিতেই ভাষার প্রশ্নে ইতোমধ্যেই যে তিক্ত অভিজ্ঞতা তাদের হয়েছিল তা তাদের মনকে বিষিয়ে রেখেছিল। তার উপরে ১৯৫৬ সালে যাও একটু সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান এসে তাকে বুটের তলায় চাপা দিয়ে দিলেন। ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন বড় একটা ঝাঁকুনি দিয়ে গিয়েছিল। আর একটু অতীতে যদি ফিরে যাই ১৯৫৪-র যুক্তফ্রন্ট সরকার নিয়ে যে নোংরা কান্ডটা করা হয়েছিল তা যে কারও মাথায় রক্ত উঠিয়ে দেয়। মাত্র দুই মাসের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দিয়ে গভর্নরের শাসন চালু করা হলো। আবার সেই যুক্তফ্রন্ট নাম দিয়েই সরকার গঠন করা হলো পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৫৫ সালে। তবে এবার আর শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক নয়- ক্ষমতায় এলেন আবু হোসেন সরকার। তিনি ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত চালাতে সক্ষম হলেন। তারপর আবার সরকার পতন। নতুন সরকার গঠন করা হলো আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ করে রাখতে চাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সরকারে মন্ত্রী হিসেবে ১৫ মে যোগদান করেন এবং মাত্র ১৫ দিন দায়িত্ব পালন করার পরই ২৯ মে সরকার পতন হলে তার দায়িত্বও ওখানেই শেষ হয়ে যায়। পরে ১৯৫৬-তে আতাউর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত সরকারেও তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পান এবং ১৯৫৭ সালে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে সংগঠনের কাজে মনোনিবেশ করেন। অবশ্য তার সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল। কারণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোটেই ভালো ছিল না। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগকে একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প ছিল না এবং তিনি সেটাই করেছিলেন। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ তারই প্রমাণ দেয়। আতাউর রহমান খান খুব বেশিদিন চালাতে পারেননি। ১৯৫৬-র মে ক্ষমতায় এলেও মাত্র দুই বছর যেতে না যেতেই ক্যান্টনমেন্টে ওত পেতে থাকা আইয়ুব খান ক্ষমতার স্বাদ নেওয়ার জন্য ১৯৫৮ সালেই সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতায় আরোহণ করেন। আর তার বর্বর শাসনামলেই হয়ে গেল ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন।

পরিস্থিতি সবচেয়ে ঘোলাটে হয়ে গিয়েছিল ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়। ১৫ দিনের যুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান ছিল সম্পূর্ণ অরক্ষিত। এটা ভারতের মহত্ত্ব যে ভারত পূর্ব পাকিস্তান দখল করে নেয়নি। শেখ মুজিব হাড়ে হাড়ে টের পেলেন এদের সঙ্গে থাকলে পূর্ব পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ অবস্থা কি হতে পারে। এ ঘটনায় তিনি মর্মে মর্মে এটাও উপলব্ধি করলেন যে আর বসে থাকার সুযোগ নেই। পূর্ব পাকিস্তানকে বাঁচাতে হবে। বাঁচাতে হবে এর মানুষকে। তাই তিনি বাঙালির প্রাণের দাবি ছয় দফা পেশ করলেন।

কিন্তু বরাবরের মতো এবারও পশ্চিম পাকিস্তানিরা ভুল বুঝলো। তারা ছয় দফার মধ্যে পাকিস্তানের ভাঙনের গন্ধ পেল। মূলত ছয় দফার মধ্যে পাকিস্তানের ভাঙনের গন্ধ ছিল না। ছিল পাকিস্তানকে দৃঢ় করার পদক্ষেপ। কিন্তু ওই যে বলে না ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। ১৯৪৭ সালের আগে কেবিনেট মিশন পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছিল ভারতের ভাঙন ঠেকাতে। কিন্তু ভারতীয় নেতারা তার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খুঁজে পেলেন। কিন্তু পরে ইতিহাসের গতিধারা এতটা জটিল হয়ে গেল যে মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার ফলে ভারত ভেঙে তিন টুকরো হয়ে গেলেও তা মেনে নিতে তাদের অসুবিধা হয়নি। হায়রে নিয়তি।

সময় আর স্রোত একবার চলে গেলে তা আর ফিরে আসে না। পশ্চিম পাকিস্তানিরা সেটাই বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল। তাদের স্বেচ্ছাচারিতা পরিস্থিতিকে দিন দিন ঘোলাটে করে তুলেছিল। যা মূলত ধীরে ধীরে তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। ছয় দফার ফলে সৃষ্ট আন্দোলনকে দমাতে আইয়ুর খান ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিলেন। লাভ কিছুই হলো না। বরং ১৯৬৯ সালের তীব্র গণআন্দোলনের মুখে তার তখ্‌তে তাউস ভেসে গেল। জেনারেল ইয়াহিয়া এসে কিছুটা হলেও সংস্কারে মন দিলেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট ব্যবস্থা বাতিল করে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রদেশগুলোর অনেকদিনের দাবি পূরণ করেন। প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য এক ব্যক্তি এক ভোট চালু করলেন। লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার পেশ করেন। তারপর ১৯৭০ সালের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হবে এই মর্মে একটি জাতীয় সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন।

তার আশা ছিল আওয়ামী লীগ নির্বাচনে খুব বেশি একটা ভালো করতে পারবে না। সবকিছু এলোমেলো করে দিল ১৯৭০ সালের প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড়। পূর্ব পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চল লন্ডভন্ড হয়ে গেল। মারা গেল প্রায় ১০ লাখ মানুষ। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে তেমন কোনো সন্তোষজনক ব্যবস্থাই নেওয়া হলো না। ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো।

নির্বাচনের উপরও এর প্রভাব পড়ল। পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পেল ১৬০টি। ওদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের পিপিপি পার্টি ৮১টি আসন পেয়ে জাতীয়ভাবে দ্বিতীয় রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হলো। এবার ক্ষমতা হস্তান্তর করার পালা। কথা ছিল মার্চের তিন তারিখে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসবে। কিন্তু মার্চের ১ তারিখে ঘোষণার মাধ্যমে তা বাতিল করে দেওয়া হলো। এর পরের তিনটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় অর্থাৎ ২ মার্চ আ স ম আব্দুর রব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু পল্টনের বিশাল জনসভায় লাখো জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। এই সময় জাতীয় পতাকাটি তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ রকম একটা পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে তার ঐতিহাসিক ভাষণদান করেন। এই ভাষণের মাধ্যমে মূলত এক কথায় পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেখ মুজিব বিচ্ছিন্নতাবাদের বদনাম এড়ানোর জন্য অত্যন্ত কৌশলে কথাগুলো বলেছিলেন। কিন্তু বাঙালি যা বোঝার তা বুঝে নিয়েছিল। তারা মূলত স্বাধীনতার জন্য মানসিকভাবে তৈরি হতে শুরু করেছিল।

এরপর থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত যা হলো তা আলোচনার নামে কালক্ষেপণ ছাড়া আর কিছুই না। পশ্চিম পাকিস্তানিরা এই সময়ে এ দেশে অবস্থানরত সামরিক বাহিনীর স্ত্রী-সন্তানদের পশ্চিম পাকিস্তানে প্রেরণের পাশাপাশি পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য আর অস্ত্র ও গোলাবারুদ এনে মজুদ করতে থাকে। অবশেষে আলোচনার জন্য ঢাকায় অবস্থানরত ইয়াহিয়া ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় গোপনে কাউকে কিছু না জানিয়ে ঢাকা ত্যাগ করেন। ভুট্টো থেকে যান হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে। মাঝরাতের পর অপারেশন সার্চ লাইট নামে যে ভয়াবহ হামলা ঢাকা শহরের নিরীহ মানুষের ওপর নেমে আসে তিনি তা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছিলেন। এ সময় তিনি অত্যন্ত স্বস্তির সঙ্গে বলেছিলেন, যাক অবশেষে পাকিস্তানকে বাঁচানো গেল।

পাকিস্তানকে অবশ্য বাঁচানো যায়নি। সে ঘটনায় পরে আসছি। ২৫ মার্চের দ্বিপ্রহরের পর পরই শেখ মুজিবকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় গোপন জায়গায়। পরে জানা গিয়েছিল তাকে পশ্চিম পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি জেলে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে রাখা হয়েছিল। এদিকে আক্রমণের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধ গড়ে তুলল। রাজনৈতিক নেতারা ভারতে আশ্রয় নিল। সেখানে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের সহযোগিতায় তারা প্রবাসী সরকার গঠন করল। এই প্রবাসী সরকার গঠিত হয়েছিল ১০ এপ্রিল। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রবাসী সরকার শপথ গ্রহণ করে। এদিকে ইতোমধ্যেই ভারতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে।

যুদ্ধের তান্ডবে প্রায় এক কোটি মানুষ পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেয়। সেখানে ভারত সরকার তাদের জন্য আশ্রয় শিবির খুলে দেয়। তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় একদিকে শরণার্থীদের সামলানোর পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধের জন্য দেশের ভেতর পাঠানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে যেতে থাকে।

ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বাধীন মুজিব বাহিনীও ভারতে গমন করে। তারা জেনারেল সুজান সিং উবানের নেতৃত্বে দেরাদুনে আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ নিতে থাকে। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে আসে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে। মুজিব বাহিনী সরাসরি যুদ্ধের চেয়ে মূলত যুদ্ধ পরিচালনা ও যুদ্ধরত মুক্তিবাহিনী ও অন্যান্য নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি বেশকিছু আঞ্চলিক বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের কাজই করেছিল বেশি।

যুদ্ধের গতিবেগ তাৎপর্যপূর্ণ মোড় নেয় ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারত যখন পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ৩ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যেই মূলত পাক-বাহিনী ধরাশায়ী হয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো যুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল চীন ও আমেরিকা। আর মুক্তিবাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল ভারত ও রাশিয়া। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্ধিরা গান্ধী এই সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে এক মৈত্রী চুক্তিতে আবদ্ধ হন যা তার হাতকে আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী করেছিল।

অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৬ ডিসেম্বরের পড়ন্ত বেলায় সেই ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানেই পাক-বাহিনীর পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান এবং যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এ এ কে নিয়াজী ভারতীয় বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নিকট আত্মসমর্পণ করেন। বিশ্বের মানচিত্রে জন্মলাভ করে একটি স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আকাশে লাল-সবুজের পতাকা পতপত করে উড়তে থাকে।

যে কথা লিখব বলে এত বড় ভূমিকা টানতে হলো ১৬ ডিসেম্বরের এই বিজয় মূলত জনতার বিজয়।

৩০ লাখ শহিদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। বাংলার মাটির ঘ্রাণ নিলে আজও তাদের রক্তের গন্ধ পাওয়া যায়। বাতাসে কান পাতলে শোনা যায় মা-বোনের কান্নার আওয়াজ।

স্বাধীনতা দিবসের এই মহান দিনে মুক্তিযুদ্ধের সব শহিদ ও ইজ্জত হারানো মা-বোনকে শ্রদ্ধা ভরা হৃদয়ে স্মরণ করছি। কামনা করছি সব শহিদের আত্মার মাগফেরাত। সেই সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হওয়া জাতির পিতা ও তার পরিবারের সব সদস্যকে। স্মরণ করছি জেলখানার প্রকোষ্ঠে ৩ নভেম্বর শহিদ হওয়া জাতীয় চার নেতাসহ সব নেতাকে যাদের অপরিসীম ত্যাগ-তিতিক্ষার ফসল আজকের এই স্বাধীন বাংলাদেশ।

ওমর খালেদ রুমি: কবি ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<80029 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1