বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র বায়ুদূষণ

রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ঢাকার বায়ুদূষণের কারণ এবং বায়ুদূষণ রোধে কী ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা জানাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ২ ফেব্রম্নয়ারি তাকে আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। উলেস্নখ্য, নির্মল বায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প ছিল সেটি পরিবেশ অধিদপ্তর কীভাবে ব্যয় করেছে, পরিবেশ উন্নয়নে কী ধরনের ভূমিকা রেখেছে, এতে জনগণ কী ধরনের সুফল পাচ্ছে অর্থাৎ পুরো প্রকল্পের টাকা কীভাবে ব্যয় হয়েছে তা সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেছে আদালত। আমরা মনে করি, এটি একটি যথাযথ পদক্ষেপ।

বায়ুদূষণ এখন রীতিমতো নাগরিক বিড়ম্বনা ও আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বায়ুদূষণ মানবজীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বায়ুদূষণের ফলে একদিকে পরিবেশ যেমন বিনষ্ট হয় তেমনি প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায়। বায়ুদূষণ থেকে রক্ষার জন্য অনেকেই মাক্স ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এটাই একমাত্র সমাধান নয়। মূলত বায়ুদূষণ রোধ করতে হবে। বায়ুদূষণের ফলে মানবদেহে জন্ম নেয় অনিরাময়যোগ্য নানা রোগ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে মানুষের শ্বাসযন্ত্র, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়। এ ছাড়া বাযুদূষণ মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ক্ষতিসাধনসহ শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশ ব্যাহত করে।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ এখন বাংলাদেশ। বায়ুদূষণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের ধারে কাছেও নেই কোনো দেশ। প্রায় ২১ পিএম কম বায়ুদূষণ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। এরপর ভারত, আফগানিস্তান, বাহরাইন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজু্যয়ালের সর্বশেষ তথ্য এগুলো। তাদের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে গড় বায়ুদূষণের পরিমাণ ৯৭ দশমিক ১০, যেখানে পাকিস্তানের ৭৪ দশমিক ২৭, ভারতের ৭২ দশমিক ৫৪, আফগানিস্তানের ৬১ দশমিক ৮০ এবং বাহরাইনের ৫৯ দশমিক ৮০ পিএম ২.৫। এই তথ্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

মনে রাখতে হবে, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, মিলকারখানা ও ইটভাটার কালো ধোঁয়া বায়ুদূষণের প্রধান নিয়ামক। কীভাবে এসব বন্ধ করা যায় এবং মানুষ মুক্ত বায়ু সেবন করতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। অনেক সময় ধুলো ও নোংরা আবর্জনাও বায়ুদূণের জন্য দায়ী। পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যদি এদিকে বিশেষ মনোযোগী না হয় তা হলে জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। যারা বায়ুদূষণের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা জনস্বাস্থ্যঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে। আমরা মনে করি, যেসব কারণে অতিরিক্ত বায়ুদূষণ হচ্ছে, সে সব কারণগুলো চিহ্নিত করে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একুশ শতকে বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া যায়- তা হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<84367 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1