বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

৪২ কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ী

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। এ থেকে পরিত্রাণের আশায় ১৯৯০ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন (১৯৯০ সালের ২০ নং আইন) প্রণীত হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ওই আইন ১৯৯০ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি প্রণয়ন করা হয়। এরপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। উন্নতি হয়নি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েও।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ৪২ জন কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পেয়েছে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এদের মধ্যে ২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। বাকি ৪০ জনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ধারণা এই কয়জনকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলে, রাজধানীতে অনেকটাই মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আমরা প্রতি ৩ মাস পরপর তালিকা তৈরি করি। এরপর ওই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও তালিকা তৈরি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই তালিকা ধরেও সমন্বয় করে কাজ করা হয়।

উলেস্নখ্য, রাজধানীতে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়। এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করা হয়। এতে অনেকেই গা ঢাকা দেন। ধারণা করা হচ্ছে অভিযানের জোরদারের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়িদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।

বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য মিয়ানমার মরণ নেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। বাংলাদেশ ঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানা কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। অবাক ব্যাপার, মিয়ানমারের মানুষ, সেখানকার যুবসমাজ খুব একটা ইয়াবা আসক্ত নয়। কোনো কোনো এলাকায় ইয়াবা কী তা সেখানকার অধিবাসীরা জানেনই না। মূলত বাংলাদেশিদের জন্যই সেখানে ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, এ ব্যাপারে সে দেশের সরকারের মৌন সম্মতিও আছে। মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানার কথা আমরা জানি, আমাদের সরকারও জানে, কিন্তু ইয়াবা চোরাচালান রোধ হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না এটাই এখন বড় প্রশ্ন?

\হমাদক কারবারিরা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হচ্ছে, ধরাও পড়ছে মাঝেসাজে। যারা মাঝেমধ্যে ধরা পড়ে তারা কেবল চুনোপুঁটি। আবার ওদের গডফাদারদের বদান্যতায় ওরা সহসাই ছাড়া পেয়ে যায়। দেশের প্রতিটি সীমান্তেই এমন হচ্ছে। ভারতের সীমান্তেও অসংখ্য ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখানেও এই একই অবস্থা। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বাংলাদেশে মাদকের বাজার তৈরি করে নিয়েছে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে। এ জন্যই দেশ মাদকে সয়লাব হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। আমরা মনে করি, এই সংখ্যা অনেক। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না। সরকারের পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<84898 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1