বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুজিববর্ষের শপথ

জাতির পিতার আজীবন স্বপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশ। মুজিববর্ষের বজ্রকঠিন শপথ হোক উন্নত বাংলাদেশ গড়ার। স্বাধীনতাবিরোধী সব অপশক্তিকে স্তব্ধ করে দিয়ে রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আগামী এক সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। যাতে আগামী প্রজন্ম মনের মাধুরী দিয়ে গাইতে পারে 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।' মুজিববর্ষ সফল হোক, অমর হোক।
মাহবুব-উল-আলম খান
  ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনেক রক্ত ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম স্বপ্নের বাংলাদেশ। ত্রিশ লক্ষ শহিদ, দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের অর্জন আমাদের এই বাংলাদেশ। পাকিস্তানিদের ২৩ বছরের অত্যাচার, অবিচার, অনাচার, শাসন, শোষণ ও নির্যাতনের মধ্যে জাতির পিতা তাঁর লক্ষ্যে ছিলেন অবিচল। ইস্পাত কঠিন মনোবলে তিনি ছিলেন উজ্জীবিত। শত জেল জুলুম অত্যাচার ও নির্যাতনের মুখে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য তিনি ছিলেন অনড়, আপোসহীন। তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন, 'জাগো জাগো বাঙালি জাগো; বাঙালি জাগো, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা, তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি, তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ, জয় বাংলা, জয় বাংলা' ইত্যাদি শ্লোগানে তিনি এ দেশবাসীকে জাগিয়ে তুলেছেন স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে। জেল, জুলুম, অত্যাচার, অবিচার, প্রলোভন তাকে দমাতে পারেনি। তিনি দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছেন অভীষ্ট লক্ষ্যে। সমগ্র বাঙালি জাতি সেদিন তাঁর পেছনে দাঁড়িয়েছিল ঐক্যবদ্ধভাবে। কতিপয় দালাল, জামাত, মুসলিমলীগ, ইসলামী ছাত্র সংঘ ইত্যাদি বেইমানেরা বাঙালির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। পাকিস্তানি পা-চাটা কুকুরেরা বাঙালির স্বার্থের পাশে দাঁড়ায়নি। পাকিস্তানিদের শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার বহিঃপ্রকাশ হলো 'বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো'।

১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করে। কিন্তু ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। শুরু হয় ষড়যন্ত্রের নতুন নাটক। ৩ মার্চ ১৯৭১ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেও ভুট্টোর ষড়যন্ত্রে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আগা মো. ইয়াহিয়া খান পহেলা মার্চ অধিবেশন স্থগিত করে দেয়। শুরু হয় কাল নাটকের রিহার্সাল। বাঙালিরা ক্ষমতায় যাবে এটা পাকিস্তানিরা হতে দেবে না। তা বুঝতে পেরেই বঙ্গবন্ধু বিচক্ষণতার সঙ্গে তার কর্ম পরিকল্পনা চালিয়ে যেতে থাকেন। বিশ্বের কাছে যাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে তুলে ধরতে না পারে সেই চিন্তা চেতনায় তিনি আলাপ আলোচনা চালিয়ে যেতে থাকেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ১৯৭১ তিনি বিচক্ষণাতার সঙ্গে বক্তব্য রাখলেন সেই জনসমুদ্রে আমি উপস্থিত ছিলাম। নানা ঘটনা, প্রেক্ষিত তুলে ধরে চারটি শর্ত দিয়ে তিনি সর্বশেষ বলেন, "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'। সেদিন হতেই প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। থানায় থানায় গ্রামে গ্রামে গঠিত হলো সংগ্রাম পরিষদ। বাঙালির চিন্তা চেতনায় গ্রোথিত হলো, 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো বাংলাদেশ স্বাধীন করো'। অন্যদিকে ভুট্টো ইয়াহিয়া, টিক্কা নিয়াজী ও তাদের এদেশীয় দোসররা বাঙালি হত্যার নীল নকশা বুনতে লাগল। ঢাকা ত্যাগের আগে ইয়াহিয়া ভুট্টো 'অপারেশন সার্চ লাইট' নামে হত্যার হুকুম দিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর ত্যাগ করে। কসাই টিক্কা খান হত্যার নীল নকশায় ২৫ মার্চ গভীর রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের জন্য তার কসাই বাহিনী পাঠায়। ঐতিহাসিক ৩২ নং বাড়িতে বঙ্গবন্ধু সব আঁচ করতে পারলেন। নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন। গ্রেপ্তারের আগেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারেই তিনি তার চূড়ান্ত স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে যান। 'পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অতর্কিত পিলখানার ইপিআর ঘাটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করেছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রম্নদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আলস্নাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল বেজিমেন্ট ও আনসারদের সহায়তা চান। কোনো আপোস নেই। জয় আমাদের হবেই। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রম্নকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতা প্রিয় লোকদেরও এ সংবাদ পৌঁছে দিন আলস্নাহ আপনাদের মঙ্গল করুন। জয়বাংলা, ২৬ মার্চ ১৯৭১।" এই মেসেজ ২৬ মার্চ সকাল ৯টায় আওয়ামী লীগ নেতা জনাব আতা ভাই আমাদেরকে পড়ে শোনান। স্পষ্ট মনে আছে তিনি রাজেন্দ্রপুর হতে সাইকেলে করে কাপাসিয়া বাজার পৌঁছান এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাত্র যুবকদের কাগজে লেখা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে শোনান।

ওয়্যারলেসে এই ম্যাসেজ সারা বাংলায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। শুরু হয়ে গেল সশস্ত্র যুদ্ধ। সেদিন ৭ মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র অবস্থায় আমরা আমাদের এলাকা কাপাসিয়ায় ৮ মার্চ ১৯৭১ চলে গিয়েছিলাম বজ্রকণ্ঠের আহ্বানে, নতুন সূর্যের প্রত্যাশায়। আমার ছোট ভাই মাহমুদুল আলম খান বেনুসহ কাপাসিয়ার আরও কয়েকজন ছাত্র হেঁটে জয়দেবপুর হয়ে কাপাসিয়া পৌঁছাই। বেনুর নেতৃত্বে কাপাসিয়ায় গঠিত হয় থানা সংগ্রাম পরিষদ। পহেলা এপ্রিল ১৯৭১ কাপাসিয়ার সংগ্রাম পরিষদ সদস্যদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। ওই দিন কাপাসিয়া থানা হতে বেনুর নেতৃত্বে ফজলু, ওবায়েদ, শিবু, কামাল ভাই, নান্নু, শহীদুলস্নাহসহ সংগ্রাম পরিষদের সদস্যদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করা হয়। শুরু হলো প্রাথমিক প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি। সারাদেশে এক উন্মাদনার অবস্থা। সারা বাংলা বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে। ১৯ মার্চ ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়দেবপুরের বীর জনতা (বর্তমান গাজীপুর) সম্মুখ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। তখন ২য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন মেজর কে.এম. শফিউলস্নাহ (স্বাধীনতার পর সেনা প্রধান) তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শেষে সারাদেশে নিজ নিজ এলাকায় ছাত্র জনতা ফিরে গিয়ে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। জয়দেবপুরে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন আজকের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী জনাব আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক। এভাবেই সারা বাংলায় গর্জে উঠে দামাল ছেলেরা, কৃষক শ্রমিক ছাত্র জনতা। স্ব-স্ব এলাকায় সবাই যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে। ১৯ মার্চের পর সেদিন আরও শ্লোগান উঠেছিল 'জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো'। সেদিন জয়দেবপুরে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন নেয়ামত, মনু খলিফা ও হুরমত। আহত হন সন্তোষ, ডা. ইউনুসসহ শত শত বীর বাঙালি। ইতোমধ্যে জয়দেবপুর সমরাস্ত্র কারখানা হতেও বেশ কিছু অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ পর্যন্ত এভাবেই নিজ নিজ এলাকায় প্রশিক্ষণ চলতে থাকে। ৫ এপ্রিল ১৯৭১ কাপাসিয়ায় পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী প্রথমবারের মতো আসে। পরে এপ্রিল মাসের শেষ দিকে স্থায়ীভাবে ঘাঁটি স্থাপন করে। কাপাসিয়ায় এসেই তারা বলত 'বেনাকা ঘর কাহা হেয়, মমতাজ খা কা মাকান কাহা হেয়'। ২য় বার এসেই প্রথম আমাদের কাপাসিয়া বাজারের বস্ত্রালয় ও বসতবাটি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়।

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে আমরা অর্জন করি আমাদের প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস।

১০ ফেব্রম্নয়ারি ১৯৭২ পাকিস্তানি কারাগার হতে মুক্তি পেয়ে লন্ডন হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফেরেন। সে এক অবিস্মরণীয় দৃশ্য। তদানিন্তন রেসকোর্সের সেই জনসমুদ্রে আমার উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। যেমনি ছিলাম ৭ মার্চের সেই উত্তাল জনসমুদ্রে। বঙ্গবন্ধুর আগমনে জাতি ফিরে পেল স্বস্তির নিঃশ্বাস। শুরু হলো দেশ গড়ার সংগ্রাম। শত প্রতিকূলতা, অভাব-অনটন ষড়যন্ত্রের মধ্যেও জাতির পিতা তিন বছরের মাথায় দেশকে একটি স্বাভাবিক ধারায় নিয়ে আসেন। পর্দার অন্তরালে ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু থেমে থাকেনি। যখন তারা দেখল দেশ উন্নয়নের ধারায় এগুচ্ছে তখনই এই হায়েনারা মরণছোবল মারে। ষড়যন্ত্রের নীল নকশায় ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সোবেহ সাদেকের আগেই জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। শুরু হলো আর এক অধ্যায়। জাতির পিতার হত্যার সঙ্গে সঙ্গে রাতারাতি সব পাকিস্তানি ধারায় ফিরে গেল। 'জয়বাংলা' শ্লোগানের পরিবর্তে 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' চালু হলো। 'বাংলাদেশ বেতার' হলো 'রেডিও বাংলাদেশ'। সমগ্র রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একাত্তরের পরাজিত শক্তির চিন্তাচেতনা চলে এল।

২০০৯ হতে ২০১৪ পর্যন্ত বর্তমান সরকার নিরলস পরিশ্রম করে দেশকে উন্নয়নের ঊর্ধ্ব সোপানে নিয়ে যান। আবার ২০১৪-এর নির্বাচনেও ৭১-এর পরাজিত শক্তি ও তাদের জোটের শত জ্বালাও, পোড়াও, হত্যা, সন্ত্রাস, অরাজকতা, পেট্রোলবোমা অবরোধ ও প্রতিরোধের মধ্যেও বর্তমান সরকারকে জনগণ পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। এখানে যোগ দিয়েছেন সৌদি আরবের মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর খতিবসহ দেশের শীর্ষ ওলামা মাশায়েখগণ। বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে সামগ্রিক উন্নয়ন ও উন্নতির উচ্চ সোপানে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-গরিমা, নানাবিধ উন্নয়ন ও সূচকে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে প্রশংসিত। রত্মগর্ভা মা শেখ হাসিনার দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্বে স্ব স্ব ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্র। ২০১৮ সালে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে এ দেশের জনগণ পুনরায় শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছে। সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম ও দক্ষতার বিকল্প আর কিছু নেই।

আমাদের দুর্ভাগ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ৭১-এর পরাজিত শক্তি এখন বহাল তবিয়তে বিদ্যমান। পৃথিবীর কোথাও নেই যে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি আবার ক্ষমতার অংশীদার হয়। জিয়া ও খালেদা জিয়া তাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। যতদিন এই পরাজিত শক্তি এ দেশে থাকবে, জামাত, শিবির, রাজাকার, আলবদর, যুদ্ধাপরাধী, পাকিস্তানি দালাল ও তাদের বংশধরেরা এ দেশে থাকবে ততদিন এ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করা কঠিন হবে। দুর্নীতির দায়ে আদালতের রায়ে খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। তার ছেলে তারেক জিয়া দুর্নীতি ও নানাবিধ অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত। তিনি আজ পলাতক আসামি। দেশে আসতে ভয় পাচ্ছেন। এ দেশের জনগণের অর্থ পাচার করে নিয়ে লন্ডনে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। অপরাধীর বিচারের রায় দ্রম্নত কার্যকর হোক এটাই জনগণের প্রত্যাশা। বিএনপি ও তাদের জোটের কতিপয় রাজাকারের বাচ্চারা যেভাবে অসভ্যের মতো গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে মনে হয় আবার ফিরে যাই একাত্তরে খতম করি সকল রাজাকর, আলবদর ও তাদের বংশধরদের। কেননা যতদিন এইসব জঞ্জাল ইতর প্রাণীগুলো রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীন বাংলাদেশে থাকবে ততদিন আমাদের শান্তি নেই। রাজাকরের হয়নি সাজা, মুক্তিযুদ্ধ হয়নি শেষ। বীর বাঙালি গর্জে উঠো, গর্জে উঠো বাংলাদেশ। হে একাত্তরের পরাজিত শক্তি রাজাকারের বংশধরেরা, তাদের দোসরেরা তোমরা কি পায়ের আওয়াজ শুনতে পাও? কান পেতে শোন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় গর্জে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনির্বাণ শিখা। বজ্রকণ্ঠের আহ্বানে ভেসে যাবে সব খড়কুটা, জঞ্জাল ও পাকিস্তানি প্রেমীদের আস্তানা। অতএব কালো নাটকের কুশীলবরা হুঁশিয়ার সাবধান। লক্ষ শহীদের রক্তে কেনা চার লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হবে। দুঃখী মানুষের মুখে ফুটাতে হবে অনাবিল হাসি।

জাতির পিতার আজীবন স্বপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশ। মুজিববর্ষের বজ্রকঠিন শপথ হোক উন্নত বাংলাদেশ গড়ার। স্বাধীনতাবিরোধী সব অপশক্তিকে স্তব্ধ করে দিয়ে রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আগামী এক সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। যাতে আগামী প্রজন্ম মনের মাধুরী দিয়ে গাইতে পারে 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।' মুজিববর্ষ সফল হোক, অমর হোক।

মাহবুব-উল-আলম খান: মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সচিব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<88607 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1