পেঁয়াজের ঝাঁজ কমেছে। পবিত্র রমজানে দফায় দফায় কমছে পেঁয়াজের দাম। দুদিনের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে পাঁচ টাকা। আর মাসের ব্যবধানে কমেছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। তবে পেঁয়াজের দাম কমলেও দফায় দফায় বাড়ছে শুকনা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে ৫০ টাকা এবং মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা, এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৫-৫০ টাকা। আর এক মাস আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা। অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা এবং এক মাস আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা। পেঁয়াজের এ দাম কমার তথ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে। টিসিবির হিসাবে, দেশি পেঁয়াজের দাম সপ্তাহে ও মাসের ব্যবধানে কমেছে ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম মাসের ব্যবধানে কমেছে ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। পাশাপাশি টিসিবির ২৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা টিসিবির ট্রাকের দিকেও ঝুঁকছে। ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। আমরা মনে করি ক্রেতা স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। অতীতে আমরা দেখেছি পবিত্র রমজানে কিংবা ঈদের সময় পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই এ দেশে পণ্যের দাম বাড়ে। এবার বাজারে ব্যতিক্রম চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা আমাদের আশাবাদী করে তোলে।
করোনাভাইরাসের কারণে ২৫ এপ্রিল থেকে দেশে লকডাউন চলছে। লকডাউনের শুরুতে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হলে পণ্যের দাম কমতে শুরু করে। দাম বাড়িয়ে দেয়া এটা আমাদের ব্যবসায়ীদের হীন ও নিষ্ঠুর মানসিকতা। আমরা বারবার বলে আসছি এটা দেশের অতি মুনাফাখোর অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। যে কারসাজি এখনো বন্ধ হয়নি। এরা করোনার মতো দুর্যোগের মধ্যেও জনগণকে জিম্মি করে মুনাফা লুটছে। অতীতে চিনি পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে এরা মুনাফা লুটেছিল। লবণের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লোটার চেষ্টা করেছিল। এরা পেঁয়াজের দাম ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে। সঙ্গত কারণেই বাজার দ্রম্নত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দ্রম্নত মোবাইল টিমকে সক্রিয় করতে হবে।
এ কথা সত্য, রসনাবিলাসের জন্য পেঁয়াজের গুরুত্ব অপরিসীম। রন্ধনশিল্পে পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতি দিনের রান্নায় পেঁয়াজের জোগান জরুরি। পবিত্র রমজানে ও ঈদে এ পণ্যটির কদর বেশি। তাই এর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকাই যৌক্তিক। মনে রাখতে হবে, বাজার মনিটরিং করা না হলে যে কোনো সময় দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। অতীতের বাজারকেন্দ্রিক সংস্কৃতি আমাদের তা-ই স্মরণ করিয়ে দেয়। কার্যকর ও পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে। এখনই যদি নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা না যায় তা হলে আবারও বড় ধরনের জিম্মিদশায় পড়বে দেশের সাধারণ মানুষ।