প্রশ্ন: ৭। উপসর্গ ও অনুসর্গের মাঝে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর : উপসর্গ ও অনুসর্গের মাঝে পার্থক্য হলো-
উপসর্গ
১। উপসর্গ শব্দের আগে বসে শব্দে অর্থ সংকোচন, প্রসারণ ও পরিবর্তন সাধন করে।
২। উপসর্গ পরবর্তী ধাতু বা শব্দের সঙ্গে একাত্ম হয়ে থাকে।
৩। উপসর্গের নিজের কোনো অর্থ নেই, তবে অন্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অর্থদ্যোতকতা সৃষ্টি করতে পারে।
৪। উপসর্গের স্বতন্ত্র প্রয়োগ নেই।
৫। উপসর্গ নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দের আগে বসে, পরে নয়।
অনুসর্গ
১। অনুসর্গ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে।
২। অনুসর্গ শব্দের সঙ্গে যুক্ত থাকে না।
৩। অনুসর্গের অর্থ আছে।
৪। অনুসর্গের স্বতন্ত্র প্রয়োগ আছে
৫। অনুসর্গ নাম শব্দ বা কৃদন্ত শব্দের আগে-পরে উভয় স্থানেই বসতে পারে।
প্রশ্ন: ৮। সন্ধি এবং সমাসের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
উত্তর : সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পার্থক্য হলো-
সন্ধি
১। সন্ধি শব্দের অর্থ মিলন।
২। পাশাপাশি দুই বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলে।
যেমন : অ + অ = আ, নর + অধম = নরাধম
৩। সন্ধির মধ্যে উচ্চারণ প্রাধান্য পায়।
৪। সন্ধিতে বিভক্তি লোপ পায় না।
৫। সন্ধিতে বহুপদ বহুপদই থাকে।
৬। সন্ধি দুই প্রকার। যথা : স্বরসন্ধি ও ব্যঞ্জনসন্ধি।
সমাস
১। সমাস শব্দের অর্থ সংক্ষেপ।
২। পরস্পর অর্থ সম্পর্কযুক্ত একাধিক পদের একপদে পরিণত হওয়ার নাম সমাস।
যেমন : মিশির মতো কালো = মিশকালো।
৩। সমাসের ভিত্তি হলো অর্থ।
৪। অলুক সমাস ছাড়া সকল প্রকার সমাসে বিভক্তি লোপ পায়।
৫। কিন্তু সমাসে তা একপদে পরিণত হয়ে যায়।
৬। সমাস ছয় প্রকার। যথা : দ্বন্দ্ব, দ্বিগু, তৎপুরুষ, অব্যয়ীভাব, বহুব্রীহি ও কর্মধারয়।
প্রশ্ন: ৯। পরপদে 'জীবী' বা 'বাহী' আছে এমন পাঁচটি শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর : পরপদে 'জীবী' আছে এমন পাঁচটি শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখানো হলো। যথা-
দীর্ঘজীবী : তুমি দীর্ঘজীবী হও।
শ্রমজীবী : সভ্যতার অগ্রগতির মূলে রয়েছে শ্রমজীবীদের অসামান্য অবদান।
বুদ্ধিজীবী : বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।
চাকরিজীবী : চাকরিজীবীরা সাধারণত মিতব্যয়ী হয়।
মৎস্যজীবী : কুবের একজন মৎস্যজীবী।
পেশাজীবী : সমাজে বিভিন্ন পেশাজীবী লোক বাস করে।
পরপদে 'বাহী' আছে এমন পাঁচটি শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখানো হলো। যথা-
ঐতিহ্যবাহী : জাতীয় সংসদ একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা।
পরিবাহী : পানি বিদু্যৎ পরিবাহী।
নির্বাহী : জনাব আসলাম আলম একজন নির্বাহী কর্মকর্তা।
প্রবাহী : মেঘনা একটি প্রবাহী নদী।
রক্তবাহী : রক্তবাহী যুদ্ধে জড়ানো উচিত নয়।
প্রশ্ন: ১০। 'ইনী' প্রত্যয়যোগে পুরুষবাচক পাঁচটি শব্দকে স্ত্রীবাচক শব্দে রূপান্তর কর।
উত্তর : 'ইনী' প্রত্যয়যোগে পুরুষবাচক পাঁচটি শব্দকে স্ত্রীবাচক শব্দে রূপান্তর করা হলো। যথা-
পুরুষবাচক শব্দ- স্ত্রীবাচকশব্দ
বন্দি + ইনী = বন্দিনী
বাঘ + ইনী = বাঘিনী
নাগ + ইনী = নাগিনী
গৃহ + ইনী = গৃহিণী
গোয়াল + ইনী = গোয়ালিনী
প্রশ্ন: ১১। 'ইত' প্রত্যয়যোগে বিশেষণ পাঁচটি শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর : 'ইত' প্রত্যয়যোগে পাঁচটি বিশেষণ শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখানো হলো। যথা-
কুসুম + ইত = কুসুমিত, শব বহনকারী পথ কুসুমিত হয় না।
লজ্জা + ইত = লজ্জিত, কাজটির জন্য আমি লজ্জিত।
নিদ্রা + ইত = নিদ্রিত, ঈশ্বর কখনো নিদ্রিত থাকেন না।
পাল + ইত = পালিত, গরু একটি গৃহপালিত পশু।
নিন্দা + ইত = নিন্দিত, যক্ষ তার কৃতকর্মের জন্য নিন্দিত।
প্রত্যয়ের নামসহ প্রকৃতি ও প্রত্যয় নির্ণয় কর :
প্রদত্ত শব্দ = প্রকৃতি + প্রত্যয়- প্রত্যয়ের নাম
দারোয়ান = দার + ওয়ান- তদ্ধিত প্রত্যয়
সোনালি = সোনা + আলী-তদ্ধিত প্রত্যয়
ফেরত = ফির + ত- কৃৎ প্রত্যয়
ঐহিক = ইহা + ইক- তদ্ধিত প্রত্যয়
কান্না = কাঁদ + না- কৃৎ প্রত্যয়
টেকো = টাক + উয়া-তদ্ধিত প্রত্যয়
দর্শন = দৃশ্ + অন- কৃৎ প্রত্যয়
লালিমা = লাল + ইমা- তদ্ধিত প্রত্যয়
মুক্তি = মুচ্ + তি- কৃৎ প্রত্যয়
নাটুকে = নাটক + ইয়া- তদ্ধিত প্রত্যয়
মেধাবী = মেধা + বিন- তদ্ধিত প্রত্যয়
মহিমা = মহৎ + ইমা-তদ্ধিত প্রত্যয়
পাঠক = পাঠ্ + অক- কৃৎ প্রত্যয়
স্বপ্নিল = স্বপ্ন + ইল- তদ্ধিত প্রত্যয়
মেঠো = মাঠ + উয়া>ও- তদ্ধিত প্রত্যয়
উড়ো = উড়্ + উয়া>ও- কৃৎ প্রত্যয়
বহতা = বহ্ + তা- কৃৎ প্রত্যয়
লোনা = লুন + আ- কৃৎ প্রত্যয়
পার্থিব = পৃথিবী + অ-তদ্ধিত প্রত্যয়
ঢাকাই = ঢাকা + আই-তদ্ধিত প্রত্যয়
মানব = মনু + অ- তদ্ধিত প্রত্যয়
দোলনা = দোল্ + অনা- কৃৎ প্রত্যয়
বক্তব্য = বচ্ + তব্য- কৃৎ প্রত্যয়
স্মরণীয় = স্মৃ + অনীয়- কৃৎ প্রত্যয়
বাঙ্ময় = বাক্ + ময়- তদ্ধিত প্রত্যয়