প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য বাংলা দ্বিতীয়পত্র ব্যাকরণ থেকে আলোচনা করা হলো
বাক্যে ব্যবহারের সময় ক্রিয়ার কমর্ থাকা না-থাকার দিক থেকে ক্রিয়াপদকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:
১. সকমর্ক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কমর্ থাকে, তাকে সকমর্ক ক্রিয়া বলে। যেমন: ছাত্ররা বই পড়ে। এখানে ‘পড়ে’ ক্রিয়ার কমর্ ‘বই’। সে জন্য ‘পড়ে’ সকমর্ক ক্রিয়া।
২. অকমর্ক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কমর্ থাকে না, তাকে অকমর্ক ক্রিয়া বলে। যেমন: সে বাড়ি যায়। এখানে ‘যায়’ ক্রিয়ার কোনো কমর্ নেই বলে তা অকমর্ক ক্রিয়া। (‘বাড়ি’ কমর্ নয়, অধিকরণ)
৩. দ্বিকমর্ক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার দুটি কমর্ থাকে, তাকে দ্বিকমর্ক ক্রিয়া বলে। যেমন: শিক্ষক ছাত্রকে অঙ্ক করান। এখানে ‘ছাত্রকে’ ও ‘অঙ্ক’- এই দুটি কমর্ আছে বলে ‘করান’ ক্রিয়াটি দ্বিকমর্ক ক্রিয়া।
প্রশ্ন: যোজক কাকে বলে? যোজক কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা কর।
উত্তর: যোজক: যেসব শব্দ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের বা বাক্যের অন্তগর্ত একটি পদের সঙ্গে অন্য পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায়, তাকে যোজক বলে। যোজকের কাজ হলো একাধিক শব্দ, পদবন্ধ, বাক্যকল্প বা বাক্যকে জুড়ে দেওয়া বা সম্পকির্ত করা। যেমন:
এতগুলো বই আর খাতা ওই ব্যাগে ধরবে?
গøাসটা ভালো করে ধর, নইলে ভেঙে যাবে।
অথর্ ও সংযোজনের ধরন ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে যোজক শব্দকে নিচের ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো:
১. সাধারণ যোজক
২. বিকল্প যোজক
৩. বিরোধমূলক যোজক
৪. কারণবাচক যোজক ও
৫. সাপেক্ষ যোজক।
সাধারণ যোজক: যে যোজক দুটি শব্দ বা বাক্যকল্পকে জুড়ে দেয়, তাকে সাধারণ যোজক বলে।
আর, এবং, ও, বা, কিংবা তথা- এগুলো সাধারণ যোজক।
যেমন:
দুটি শব্দের সংযোগক: সুখ ও সমৃদ্ধি কে না চায়? অলি আর কলি একে অন্যের বন্ধু।
দুটি বাক্যকল্পের সংযোগ: আমাদের সমাজ আর ওদের সমাজ এক রকম নয়।
দুটি বাক্যের সংযোগ: জলদি দোকানে যাও এবং একটা পাউরুটি কিনে আন।
বিকল্প যোজক: যে যোজক একাধিক শব্দ বা বাক্যকল্প বা বাক্যের বিকল্প নিদের্শ করে, তাকে বিকল্প যোজক বলে।
যেমন: মৌসুমী হয় ট্রেনে, না হয় বাসে যাবে।
সারা দিন খঁুজলাম, অথচ কোথাও গরুটা পেলাম না।
বিরোধমূলক যোজক: যে যোজক দুটি বাক্যের সংযোগ ঘটিয়ে দ্বিতীয়টির সাহায্যে প্রথম বাক্যের বক্তব্যের সংশোধন বা বিরোধ নিদের্শ করে, তাকে বিরোধমূলক যোজক বলে।
যেমন:
এত বৃষ্টি হলো, তবু গরম গেল না।
তোমাকে খরব দিয়েছি, কিন্তু তুমি আসনি।
কারণবাচক যোজক: যে যোজক এমন দুটি বাক্যের মধ্যে সংযোগ ঘটায়, যার একটি অন্যটির কারণ নিদের্শ করে, তাকে কারণবাচক যোজক বলে।
যেমন:
জিনিসের দাম বেড়েছে, কারণ হরতাল-অবরোধ চলছে।
খুব ঠাÐা লেগেছে, তাই আইসক্রিম খাচ্ছি না।
সাপেক্ষ যোজক: যে যোজক একে অন্যের পরিপূরক হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, তাকে সাপেক্ষ বা শতর্বাচক যোজক বলে। প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলোকে বলে নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়।
যেমন:
যত গজের্ তত বষের্ না।
যথা ধমর্ তথা জয়।
প্রশ্ন: আবেগ শব্দ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণসহ আলোচনা কর।
উত্তর: যেসব শব্দের সাহায্যে মনের নানা ভাব বা আবেগ প্রকাশ করা হয়, সেগুলোকে বলা হয় আবেগ শব্দ। এ ধরনের শব্দ বাক্যের অন্য শব্দের সঙ্গে সম্পকর্ না রেখে স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হয়। মানুষের বিচিত্র আবেগের প্রকাশ অনুসারে আবেগ শব্দকে আট ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো-
১. সিদ্ধান্তসূচক আবেগ শব্দ ২. প্রশংসাসূচক আবেগ শব্দ
৩. বিরক্তিসূচক আবেগ শব্দ ৪. ভয় ও যন্ত্রণাসূচক আবেগ শব্দ
৫. বিস্ময়সূচক আবেগ শব্দ ৬. করুণাসূচক আবেগ শব্দ
৭. সম্বোধনসূচক আবেগ শব্দ ৮. অলংকারিক আবেগ শব্দ