শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্র

ছয় দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয় কেন?
রোজিনা আক্তার, শিক্ষক ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিরাজগঞ্জ
  ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

প্রিয় শিক্ষাথীর্, আজ তোমাদের জন্য সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্র থেকে সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেয়া হলো

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়-৫

মুনিরের দাদা স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় ছাত্রনেতা ছিলেন এবং একজন মহান নেতার ঐতিহাসিক ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। অবসর সময়ে তিনি তাকে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের গল্প শোনাতেন। একদিন ছাত্র-জনতার দুবার্র এক আন্দোলনের বিষয়ে বললেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সে আন্দোলনে তাদের সহপাঠী আসাদুজ্জামান আসাদ পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। এতে আন্দোলন আরও বেগবান হয় এবং অবশেষে জেনারেল আইয়ুব খান পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। একই সঙ্গে আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে মামলার প্রধান আসামি বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের অগ্রদূতসহ জাতীয় নেতাদের মুক্তি দেয়া হয়।

প্রশ্ন: খ. ছয় দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয় কেন?

প্রশ্ন: গ. মুনিরের দাদার বণর্নাকৃত আন্দোলনের সঙ্গে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন আন্দোলনের মিল রয়েছে?

প্রশ্ন: ঘ. বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে উদ্দীপকে নিদেির্শত মহান নেতার অবদান মূল্যায়ন কর।

উত্তর-খ: ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর এক সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ খ্যাত ছয় দফা কমর্সূচি পেশ করেন। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অথৈর্নতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ দূর করার লক্ষ্যে এ ছয় দফা দাবি পেশ করা হয়। ভাষা আন্দোলনের ভিত্তিতে যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটে তা আরও দৃঢ় হয় ছয় দফার ভিত্তিতে। এরই ভিত্তিতে শুরু হয় অধিকার আদায়ের সংগ্রাম, যা স্বাধীনতা আন্দোলনকে উৎসাহ জুগিয়েছিল। তাই ছয় দফাকে বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

উত্তর-গ: মুনিরের দাদা ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান সম্পকের্ বণর্না করেছেন।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা ঘোষণার পর থেকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। তাই তারা ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। ফলে বাংলার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। ছয় দফার সঙ্গে ছাত্ররা আরও পঁাচ দফা যুক্ত করে ছাত্র-জনতা ১১ দফা কমর্সূচি নিয়ে দুবার্র আন্দোলন গড়ে তোলে।

বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, জনতা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ¯েøাগান দিতে থাকে ‘জাগো জাগো, বাঙালি জাগো’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। ২০ জানুয়ারি ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান আসাদ শহীদ হন। এ ঘটনার পর চলমান আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ২৪ জানুয়ারিতে প্রবল গণঅভ্যুত্থানে রূপ লাভ করে। এ গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে ঊনসত্তরের মহান গণঅভ্যুত্থান হিসেবে পরিচিতি পায়। এ ঘটনাপ্রবাহে ১৫ ফেব্রæয়ারি আগরতলা মামলার আসামি সাজের্ন্ট জহুরুল হক জেলহাজতে নিহত হন এবং ১৮ ফেব্রæয়ারি ড. শামসুজ্জোহা সামরিক অফিসার কতৃর্ক নিহত হন। উদ্দীপকে আগরতলা মামলাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনটি সৃষ্ট এবং সে আন্দোলনে আসাদুজ্জামান শহীদ হন বলে উল্লেখ রয়েছে বিধায় এটি ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান।

উত্তর-ঘ: উদ্দীপকে নিদেির্শত মহান নেতা হলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার আপসহীন ও অপ্রতিদ্ব›দ্বী ভ‚মিকার জন্য তিনি চিরস্মরণীয়। ১৯৬৬ সালে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর এ সম্মেলনে ছয় দফা কমর্সূচি ঘোষণার মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতির অতুলনীয় নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই ছয় দফা পরবতীর্ সময়ে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে পরিগণিত হয়। তার এই ছয় দফার পরিপ্রেক্ষিতে পরে ছাত্র-জনতার ১১ দফা কমর্সূচির ভিত্তিতে আন্দোলন ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়, যার ফলে জেনারেল আইয়ুব খানের পতন ঘটে। আগরতলা মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভ‚ষিত হন। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদের নিবার্চনে তার দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ নিবার্চনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি পূণর্ আস্থা জ্ঞাপন করে।

পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী জনগণের নিবাির্চত প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে টালবাহানা শুরু করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মাচের্র ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতাসংগ্রামের সশস্ত্র প্রস্তুতির জন্য উদ্বুদ্ধ করে তোলে। তার এ ভাষণ আজও জাতিকে অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রেরণা জোগায়। দীঘর্ নয় মাস যুদ্ধের পর লাল-সবুজের স্বাধীন বাংলায় তিনি হয়ে ওঠেন স্বাধীনতার জীবন্ত কিংবদন্তি ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। সব বিবেচনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে তার অবদান অতুলনীয়।

অধ্যায়-৭

গত বছর সাইফুলের বড় ভাই মারা যাওয়ায় বড় ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে সাইফুল বিয়ে করে। বড় ভাই আগে তার স্ত্রীকে নিয়ে মা-বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে একসঙ্গে থাকত। কিন্তু সাইফুল চট্টগ্রাম শহরে চাকরি করায় সে স্ত্রীকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে আসে। স্বামী-স্ত্রী দুজনের পরিবারে তারা

নতুন জীবন শুরু করেছে।

প্রশ্ন: ক. মাতৃসূত্রীয় পরিবার কী?

প্রশ্ন: খ. বিবাহ একটি গুরুত্বপূণর্ সামাজিক প্রতিষ্ঠানÑ ব্যাখ্যা কর।

প্রশ্ন: গ. উদ্দীপকে সাইফুলের বিবাহের ধরন নিণর্য় কর।

প্রশ্ন: ঘ. উদ্দীপকের আলোকে বাংলাদেশের পরিবারের ধরন কাঠামোতে কী ধরনের পরিবতর্ন হচ্ছে বলে তুমি মনে কর?

উত্তর-ক: যে পরিবারের সন্তানরা মায়ের দিক থেকে সম্পত্তি ও বংশমযার্দা উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করে তা-ই মাতৃসূত্রীয় পরিবার। বাংলাদেশে গারো সমাজে এ ধরনের পরিবার দেখা যায়।

উত্তর-খ: বিবাহ হলো নারী-পুরুষের মধ্যে সমাজস্বীকৃত বন্ধন। কতগুলো নিয়ম-নীতি ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ বন্ধন তৈরি হয়, যার ভিত্তিতে পরিবার গড়ে ওঠে। এ বন্ধন ছাড়া পরিবার গঠন করা যায় না। বিবাহের মাধ্যমে সন্তানের বৈধতা দান, নতুন সম্পকর্ স্থাপন, সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিণর্য়সহ নানা বিষয় নিধাির্রত হয়। এসব বিবেচনায় বিবাহ অবশ্যই একটি গুরুত্বপূণর্ সামাজিক প্রতিষ্ঠান।

উত্তর-গ: সাইফুলের বিবাহ হলো লেভিরেট বিবাহ। কোনো মহিলার স্বামী মারা গেলে মৃত স্বামীর ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহকে লেভিরেট বিবাহ বলে। এ ধরনের বিবাহকে দেবর বিবাহও বলা হয়। বাংলাদেশসহ অনেক সমাজে এ ধরনের বিবাহ দেখা যায়। সাধারণত আত্মীয়তার সম্পকর্ বজায় রাখা, সন্তানদের নিরাপত্তা, সম্পত্তি নিজেদের মধ্যে রাখা ইত্যাদি কারণে সমাজে এ ধরনের বিবাহ প্রচলিত।

কেননা বিধবা মহিলার অন্য কোথাও বিয়ে হলে সন্তানরা যেমন অভিভাবকহীন হয়ে যাবে, তেমনি সম্পত্তিও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। একই সঙ্গে মানবিক কারণেও এ ধরনের বিয়ে হয়ে থাকে। উদ্দীপকে সাইফুল তার মৃত ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেছে বিধায় তার বিয়ে লেভিরেট বিবাহ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<32885 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1