পদের সংজ্ঞা ও প্রকরণ
দুঃসাহসী অভিযাত্রীরা মানুষের চিরন্তন কল্পনার রাজ্য চঁাদের দেশে পেঁৗছেছেন এবং মঙ্গলগ্রহেও যাওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত হচ্ছেন। ওপরের বাক্যটিতে ‘রা’ (অভিযাত্রী+রা), ‘এর’ (মানুষ+এর), ‘র’ (কল্পনা+র), ‘এ’ (মঙ্গলগ্রহ+এ) প্রভৃতি চিহ্নগুলোকে বিভক্তি বলা হয়। বাক্যে ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দই এক একটি পদ। আলোচ্য বাক্যটিতে রয়েছেÑ
১. বিশেষ্য পদ : অভিযাত্রী, মানুষ, কল্পনা, রাজা, দেশ, মঙ্গলগ্রহ
২. সবর্নাম পদ : তারা
৩. বিশেষণ পদ : দুঃসাহসী, চিরন্তন, প্রস্তুত
৪. ক্রিয়াপদ : পেঁৗছেছেন, হচ্ছেন, যাওয়ার (অসমাপিকা ক্রিয়া)
৫. অব্যয় পদ : এবং, জন্য
পদ প্রকরণ
পদ প্রধানত দুই প্রকার। যেমন : সব্যয় পদ ও অব্যয় পদ
সব্যয় পদ চার প্রকার। যেমন :
১. বিশেষ্য, ২. সবর্নাম, ৩. বিশেষণ, ৪. ক্রিয়া
পদ মোট পঁাচ প্রকার।
যেমন : ১. বিশেষ্য, ২. সবর্নাম, ৩. বিশেষণ, ৪. ক্রিয়া, ৫. অব্যয়
বিশেষ্য পদের সংজ্ঞা ও প্রকরণ
কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে। বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত যেসব পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি, বস্তু, স্থান, কাল, বার, কমর্ বা গুণের নাম বোঝানো হয় তাদের বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষ্য পদ ছয় প্রকার। যেমন :
১. নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য/চৎড়ঢ়বৎ ঘড়ঁহ
২. জাতিবাচক বিশেষ্য/ঈড়সসড়হ ঘড়ঁহ
৩. বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য/গধঃবৎরধষ ঘড়ঁহ
৪. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য/ঈড়ষষবপঃরাব ঘড়ঁহ
৫. ভাববাচক বিশেষ্য/ঠবৎনধষ ঘড়ঁহ
৬. গুণবাচক বিশেষ্য/অনংঃৎধপঃ ঘড়ঁহ
নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য
যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, ভৌগোলিক স্থান, গ্রন্থ ইত্যাদির নাম বা সংজ্ঞা প্রকাশ পায় তাকে নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন :
ক) ব্যক্তির নাম : নজরুল, ওমর, আনিস, মাইকেল
খ) ভৌগোলিক স্থান : ঢাকা, দিল্লি, লন্ডন, মক্কা
গ) ভৌগোলিক সংজ্ঞা : (নদী, পবর্ত, সমুদ্র ইত্যাদি)Ñ মেঘনা, হিমালয়, আরব সাগর
ঘ) গ্রন্থের নাম : গীতাঞ্জলি, অগ্নিবীণা, দেশে-বিদেশে, বিশ্বনবী
জাতিবাচক বিশেষ্য
যে পদ দ্বারা কোনো একজাতীয় প্রাণী বা পদাথের্র সাধারণ নাম বোঝায় তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : মানুষ, গরু, পাখি, গাছ, পবর্ত, নদী, ইংরেজ।
বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য
যে পদকে কোনো উপাদানবাচক পদাথের্র নাম বোঝায় তাকে বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। এ-জাতীয় বস্তুর সংখ্যা ও পরিমাণ নিণর্য় করা যায়। যেমন : বই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, মাটি, চাল, চিনি, লবণ, পানি।
সমষ্টিবাচক বিশেষ্য
যে পদকে বেশ কিছুসংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি বোঝায় তাই সমষ্টিবাচক বিশেষ্য । যেমন : সভা, জনতা, সমিতি, পঞ্চায়েত, মাহফিল, ঝঁাক, বহর, দল।
ভাববাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য পদে কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয় তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে।
যেমন : গমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ), দশর্ন (দেখার কাজ), ভোজন (খাওয়ার কাজ), শয়ন (শোয়ার কাজ), দেখা, শোনা।
গুণবাচক বিশেষ্য
যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায় তাই গুণবাচক বিশেষ্য। যেমন : মধুর মিষ্টত্বের গুণÑ মধুরতা, তরল দ্রব্যের গুণÑ তারল্য, তিক্ত দ্রব্যের দোষ বা গুণÑ তিক্ততা, তরুণের গুণÑ তারুণ্য
এরূপ : সৌরভ, স্বাস্থ্য, যৌবন, সুখ, দুঃখ।