ব্যক্তিবাচক সবর্নামের রূপ
৩. তুচ্ছাথর্ক বা ঘনিষ্ঠতাজ্ঞাপক রূপ
নাম পুরুষ : ইহা, ইহারা, এই, এ, এরা, উহা, উহারা, ও, ওরা, ওদের
সবর্নামের বিভক্তিগ্রাহী রূপ
বাংলা সবর্নামসমূহ কতৃর্কারক ভিন্ন অন্যান্য কারকে বিভক্তিযুক্ত হওয়ার আগে একটি বিশেষ রূপ পরিগ্রহ করে। সবর্নামের এ রূপটিকে বিভক্তিগ্রাহী রূপ বলা হয়। কতৃর্কারকে সবর্নামের মূল রূপটিই ব্যবহৃত হয় এবং একে প্রথমা বিভক্তিযুক্ত একবচন ধরা হয়। যেমন :
কতৃর্কারকে প্রথমার একবচন
সাধারণ সম্ভ্রমাত্মক তুচ্ছাথর্ক
আমি
তুমি আপনি তুই
সে তিনি তাহা, তা
যে যিনি যাহা, যা
ইনি এ ইহা, এ
উনি উহা উহা, ওঁ
কে, কি, কী কে, কি, কী
অন্যান্য কারকে বিভক্তিগ্রাহী রূপ
সম্ভ্রমাত্মক তুচ্ছাথর্ক
আপনা তোমা, তো
তাহা, তা
যাহা, যা
ইহা, এ
উহা, ও
কাহা, কা
সবর্নামের বিশিষ্ট প্রয়োগ
১. বিনয় প্রকাশ : বিনয় প্রকাশে উত্তম পুরুষের একবচনে দীন, অধম, বান্দা, সেবক, দাস প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন : ‘আজ্ঞা কর দাসে, শাস্তি নরাধমে’। ‘দীনের আরজ’।
২. ছন্দবদ্ধ কবিতা : ছন্দবদ্ধ কবিতায় সাধারণত ‘আমার’ স্থানে মম, ‘আমাদের’ স্থানে ‘মোদের’ এবং ‘আমরা’ স্থানে ‘মোরা’ ব্যবহৃত হয়। যেমন : কে বুঝিবে ব্যথা মম। ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’। ক্ষুদ্র শিশু মোরা, করি তোমারি বন্দনা।
৩. উপাস্যের প্রতি ভক্তি : উপাস্যের প্রতি সাধারণত ‘আপনি’ স্থানে ‘তুমি’ প্রযুক্ত হয়। যেমন : (উপাস্যের প্রতি ভক্ত) প্রভু, তুমি রক্ষা কর এ দীনসেবককে।
৪. অভিনন্দনপত্র : অভিনন্দনপত্র রচনায়ও অনেক সময় সম্মানিত ব্যক্তিকে ‘তুমি’ সম্বোধন করা হয়।
তুমি : ঘনিষ্ঠজন, আপনজন বা সমবয়স্ক সাথীদের প্রতি ব্যবহাযর্।
তুই : তুচ্ছাথের্ ব্যবহৃত হয় এবং ঘনিষ্ঠতা বোঝাতেও আমরা তাই ব্যবহার করি।
সবর্নামে বিশেষ দ্রষ্টব্য/জ্ঞাতব্য
১. চলিত ভাষা : চলিত ভাষায় যেসব স্থানে সবর্নাম বসে সেসব হলো :
ক) তুচ্ছাথের্ : তাহা স্থানে তা যাহা স্থানে যা কাহা স্থানে কা ইহা স্থানে এ উহা স্থানে ও
খ) সম্ভ্রমাথের্ (এগুলোর সাথে একটি চন্দ্রবিন্দু সংযোজিত হয়) :
তাহা+দের=তাহাদের (সাধু)>তাদের (চলিত) (সম্ভ্রমাথের্) তাহা+দের=তাহাদের (সাধু)>তাদের (চলিত)
২. করণ কারক : করণ কারকে অনুসগর্ ব্যবহারের আগে মূল সবর্নাম শব্দের সঙ্গে র, এর বা কে বিভক্তি যোগ করে নিতে হয়। যেমন : তাহাকে দিয়া তাকে দিয়ে তাহার দ্বারা তার দ্বারা আমাকে দিয়ে
৩. ষষ্ঠী বিভক্তি : ষষ্ঠী বিভক্তি অথের্ ঈয়-প্রত্যয়যুক্ত সবর্নামজাত বিশেষণ শুধু তৎসম সবর্নামের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। যেমন : মৎ+ঈয়=মদীয় ভবৎ+ঈয়=ভবদীয় তৎ+ঈয়=তদীয়
৪. ষষ্ঠী বিভক্তি : ‘কী’ সবর্নামটি কোনো কোনো কারকে ‘কিসে’ বা ‘কিসের’ (ষষ্ঠী বিভক্তিযুক্ত) রূপ গ্রহণ করে। যেমন : কী+দ্বারা=কিসের দ্বারা কী+থেকে=কিসে থেকে কিসের থেকে