শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়
স্যার আইজ্যাক নিউটন ছিলেন সতেরো শতকের ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক এবং আলকেমিস্ট। তার জন্ম ১৬৪৩ সালের ৪ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের লিঙ্কনশায়ারের উল্সথর্প ম্যানরে। তার পিতার নামও আইজ্যাক নিউটন আর মাতার নাম হান্না এস্কো।
১৬৮৭ সালে বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বই ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা লেখেন, যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন। সূত্র তিনটি হল-
প্রথম সূত্র: বাইরে থেকে কোন বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু স্থির এবং গতিশীল বস্তু সুষম গতিতে সরল পথে চলতে থাকে।
দ্বিতীয় সূত্র: কোন বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যে দিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে।
তৃতীয় সূত্র: প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
এই সূত্র ও মৌল নীতিগুলোই চিরায়িত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি। রৈখিক এবং কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্রের মাধ্যমে তিনি এই ভিত্তি রচনা করেন। তিনিই প্রথম দেখিয়েছিলেন, পৃথিবী এবং মহাবিশ্বের সব বস্তু একই প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আলোকবিজ্ঞান নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ১৭০৪ সালে প্রকাশিত নিউটনের অত্যন্ত প্রভাবশালী বই অপটিক্সে তার আলোর ওপর কাজগুলো সংগৃহীত হয়েছিল। তিনি পৃথিবীর প্রথম প্রতিফলক টেলিস্কোপ উদ্ভাবন করেন। যা বর্তমানে নিউটনীয় দূরবীক্ষণ যন্ত্র নামে পরিচিত।
আলো নিয়ে পরীক্ষা করে তিনি প্রমাণ করেন যে, সূর্যের আলো একবর্ণী আলো নয়। প্রিজমের মধ্যদিয়ে সূর্যের আলো গেলে তা সাতটি রঙের পর্যায়ক্রমিক বর্ণালী সৃষ্টি করে। এই সাতটি আলো হচ্ছে- রংধনুর সাতটি রং। এ ছাড়া তিনি দ্বীপদ রাশির সর্বজনীন সূত্র, পরিবর্তনের গাণিতিক রূপ ক্যালকুলাস, মহাকর্ষের কারণে জোয়ার-ভাটা হওয়া প্রমাণ করেন। তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন পৃথিবী সম্পূর্ণ গোল নয় বরং মেরু অঞ্চলে কিছুটা চাপা।
তার মহাকর্ষ তত্ত্বের এবং কেপলারের গ্রহীয় গতির সূত্রের সাহায্যে সৌরকেন্দ্রিক বিশ্বের ধারণা প্রমাণিত হয়। নিউটন ১৭২৭ সালের ২০ মার্চ ৮৫ বছর বয়সে মৃতু্যবরণ করেন।