'যেখানে মাইলের পর মাইল লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক হেঁটে চলেছে নিজের গ্রামে ফেরার জন্য, সেখানে আরাম করে বাড়িতে বসে থাকতে আমার লজ্জা লাগছে। ভীষণই অনুশোচনা হচ্ছে।' ঠিক এভাবেই মন্তব্য করলেন বলিউড অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর। বলিউডের আরেক অভিনেতা সোনু সুদের কাজে অনুপ্রাণিত হয়েই এবার ভিন্ন রাজ্যের শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী বলিউড এ অভিনেত্রী। আর তাই সরকারের অনুমতি নিয়ে শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন স্বরা ভাস্কর।
ইতোমধ্যেই নিজের একটি টিম তৈরি করেছেন অভিনেত্রী। যারা দিলিস্নর বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তারা কোথাকার বাসিন্দা? কোথায় যেতে চান? ইত্যাদি তথ্য জোগাড় করা শুরু করেছেন দিনরাত এক করে। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১,৩৫০ জনের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর। যাদের কারও বাড়ি যোগী আদিত্যনাথ শাসিত উত্তরপ্রদেশে আবার কারও পরিবার-পরিজন রয়েছেন বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে।
লকডাউনের জেরে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। ভিন রাজ্য থেকে পেটের দায়ে কাজ করতে আসা অগণিত শ্রমিক আটকে রয়েছেন বিভিন্ন প্রান্তে। আর এই লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসনও। সরকারের তরফে ব্যবস্থা করা হলেও সবক্ষেত্রে তা ফলপ্রসূ হয়নি, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোনা যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের হাহাকার। এ প্রসঙ্গে স্বরার মন্তব্য, 'আমাদের সময়কার সবচাইতে নিন্দনীয় ঘটনা। সমাজের অন্ধকার দিক ফুটে ওঠার পাশাপাশি আমাদের শাসনতন্ত্রেরও একটা নগ্ন দিক ফুটে উঠল।'
গত সপ্তাহেই অসুস্থ মাকে দেখতে মুম্বাই থেকে দিলিস্ন গিয়েছেন স্বরা। এরপরই পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। আপ সরকারের থেকে অনুমতি নিয়েই তাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে উদ্যত হন অভিনেত্রী। এর জন্য আম আদমি পার্টির সংসদ সদস্য দিলীপ পান্ডেকেও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, 'অসংখ্য ধন্যবাদ দিলিস্ন সরকার এবং দিলীপজিকে, যারা ময়দানে নেমে জোর উদ্যমে কাজ করছেন।'
পাল্টা স্বরার প্রশংসা করে আপ সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, 'অভিনেত্রী প্রথমটায় টাকা জোগাড় করছিলেন, বাসের বন্দোবস্ত করার জন্যে। কিন্তু আমরা তাকে পরামর্শ দিই, কোন কোন পরিযায়ী শ্রমিক কোথায় যেতে চান, শুধু তার একটা তালিকা তৈরি করতে। শোনামাত্রই তড়িঘড়ি স্বরা ময়দানে নেমে পড়েন তার টিম নিয়ে।' স্বরা আরও বলেন, 'কারওয়ান-ই-মোহাব্বত, খালসা এইড, পুস্তি ফাউন্ডেশন এবং সোনু সুদ একা যেভাবে কাজ করে চলেছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য, তা আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।'