শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
সাক্ষাৎকার

তার গান লালন করতে চাই

না ফেরার দেশে চলে গেলেন পেস্নব্যাক সম্রাট, বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। এ মৃতু্যর খবরে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো শোবিজাঙ্গন। সংগীতাঙ্গনের অনেকেই যেন কথা বলার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। খ্যাতিমান এ শিল্পীর সঙ্গে কমবেশি প্রায় সব কণ্ঠশিল্পীরই স্মৃতি জড়িয়ে আছে। কথা হয় কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সির সঙ্গে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রয়াত এই গুণী শিল্পীকে নিয়ে কথা বলেন ন্যান্সি। লিখেছেন- মাসুদুর রহমান
নতুনধারা
  ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০
নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি

জানতে পারলাম দাদা নেই...

এন্ড্রু দাদার মৃতু্যর খবরটা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে খুব দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। আমার কোনো ফেসবুক না থাকলেও সংগীতাঙ্গনের লোকেরা আমাকে খবরটি ফোনে জানান। চিকিৎসার জন্য তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের বাইরে ছিলেন। এরমধ্যে দুইবার দেশে ফেরার কথা থাকলেও সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি তিনি দেশে ফেরেন। তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। তবুও আমরা মিরাক্কেল কিছু আশা করেছিলাম। সৃষ্টিকর্তা তো অনেক কিছুই দেখান। কিন্তু তা আর হলো না।

যেন শূন্যতা গ্রাস করছে...

প্রত্যেক মৃতু্যর খবরই কষ্টের। কিন্তু কিছুু মানুষের মৃতু্য মেনে নেওয়াটা অত্যন্ত কষ্টের। গত দুই বছরে আমরা অনেক বরেণ্য ব্যক্তিকে হারালাম। আইয়ুব বাচ্চু, আহমদ ইমতিয়াজ বুলবুল, সুবির নন্দী, শাহনাজ রহমতুলস্নাহ এবং সর্বশেষ এন্ড্রু দা। একে একে তাদের চলে যাওয়াটা যেন আমাদের শূন্যতা গ্রাস করছে। কেমন যেন একে হয়ে যাচ্ছি। তাদের সংস্পর্শ আমাদের জন্য আশীর্বাদ। তাদের শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। একজন সুবির নন্দী কিংবা এন্ড্রু কিশোরকে আমরা আর কখনো ফিরে পাব না। 'আমার সারা দেহ খেয়ও গো মাটি' গানটি কী কেউ এন্ড্রু দার মতো করে গাইতে পারবে?

ভুলে যেন না যাই...

আমরা খুব সহজেই ভুলে যাই। কেউ মারা গেলে তাকে নিয়ে সপ্তাহখানেক মনে রাখি তারপর ভুলে যাই। বড় জোর এক বছর পর হয়তো মৃতু্যবার্ষিকী পালন করা হয়। এরপর মনেই থাকে না। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে ভুলে যাই আহমদ ইমতিয়াজ বুলবুল কিংবা সুবির নন্দীর মতো বরেণ্য ব্যক্তিদের। কিন্তু আমরা এসব মহানব্যক্তিকে ভুলতে চাই না। তাদের অবদান স্মরণ রাখতে চাই আজীবন। আমার আবেদন থাকবে এন্ড্রু দার মৃতু্যর গস্নানি যেন দীর্ঘদিন থাকে। দুই-এক বছরে যেন ভুলে না যাই।

সংগীতাঙ্গনের সফল মহান পুরুষ এন্ড্রু কিশোর...

এন্ড্রু কিশোর বাংলাদেশি সংগীতাঙ্গনের একমাত্র পুরুষ যিনি সিনিয়র থেকে জুনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে গান করেছেন। রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, ডলি সায়ন্তনী থেকে শুরু করে আমার মতো একজন নগণ্য শিল্পীর সঙ্গেও গান করেছেন। তিনি ক্যারিয়ারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত গান করেছেন তার সবই সফলতা পেয়েছে। সময়ের পরিবর্তন হলেও তার কণ্ঠের পরিবর্তন হয়নি। ২০-৩০ বছর আগে যেমন গেয়েছেন এই সময়ে এসেও হুবহু তাই। লতা মুঙ্গেশ করের মতো এই বয়সে এসেও তার গানে ঠেঁটি মিলিয়েছে সিনেমার ২৫ বছরের নায়ক। তাকে সংগীতাঙ্গনের রাজা না মহারাজা বলব তা ভেবে পাই না।

তার সঙ্গে গান...

তার সঙ্গে আমার একটিমাত্র সিনেমায় গান করার সুযোগ হয়েছে। তাও অনেক আগে আবুল কালাম আজাদ পরিচালিত 'হৃদয় দোলানো প্রেম' ছবিতে একসঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছিলাম। মান্নান মোহাম্মদের সুর ও সংগীতে গানটি লিখেছিলেন ইকবাল হোসেন। এ গানের রেকর্ডিং হয়েছিল মগবাজারের শ্রম্নতি স্টুডিওতে। রেকর্ডিংয়ে ঢুকলেন আর বেরিয়ে এলেন যেন গান তার কাছে কোনো ব্যাপারই নয়। এক কথায় গানের মেশিন। এ ছাড়া তার সঙ্গে ১৮-২০টি স্টেজ শো করেছি। তার গানে পিনপতন নীরবতা থাকত। অঙ্গভঙ্গি না থাকলেও সুরের মুগ্ধতায় দর্শককে বশ করতেন।

লালন করতে চাই এন্ড্রু কিশোরের গান...

আমার একটি অনুরোধ থাকবে এন্ড্রু কিশোরের গান আমি, কণা এবং অনুজ শিল্পীরা গাইতে চাই। এ অধিকারটুকু আমাদের দেওয়া হোক। তার গান বাঁচিয়ে রাখতে নয়, তার গান চিরকাল বেঁচে থাকবে। তবে তার গান লালন করতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105141 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1