বছর পাঁচেক আগে হঠাৎই গান ছেড়ে দিয়েছিলেন এ কিংবদন্তি শিল্পী। গণমাধ্যমে ছিলেন অনুপস্থিত। তার অনুপস্থিতিতে শ্রোতা ও ভক্তদের মন বার বারই উচাটন হয়ে উঠেছিল। আর সে জন্যই তার খোঁজ নিতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যমের এক গণমাধ্যমকর্মী গিয়েছিলেন তার বাসায়। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে, ধর্মকর্মে বেশ মনোযোগী হয়েছেন কিংবদন্তি এ শিল্পী। তাই এসবে সময় হয়ে উঠছে না তার। হঠাৎই গানের ভুবন থেকে নিজেকে কেন সরিয়ে নিলেন গণমাধ্যমকর্মীর এমন প্রশ্নে সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন- আমার নামাজ পড়েই সময়টা বেশ কাটছে। ওমরাহ করে আসার পরদিন থেকেই আর গান করতে ইচ্ছা করেনি। তখন আমি নামাজ পড়া শুরু করেছিলাম।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, পবিত্র কাবা, মহানবী (সা.)-এর রওজা শরিফ দেখে আসার পর থেকে পার্থিব বিষয়ে আগ্রহী নন তিনি। বাকিটা জীবন সৃষ্টিকর্তার কৃতজ্ঞতায় প্রার্থনা করেই কাটাতে চান। এ সময় এখনকার গান কেমন হচ্ছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। টিভি দেখেন না, রেডিও শোনেন না তিনি।
তা হলে সময় কাটে কীভাবে প্রশ্নে তিনি জানিয়েছিলেন, ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন। ফজর পর্যন্ত জায়নামাজে অপেক্ষা করতে থাকেন। ওয়াক্ত হলে ফজর পড়ে কোরআন শরিফ পড়া শুরু করেন।
একজন হুজুর বাসায় এসে পবিত্র কোরআন শিখিয়ে যান বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজসহ আরও কিছু ধর্মীয় কাজ সারেন। এশার নামাজ শেষে দ্রম্নত ঘুমিয়ে পড়েন যেন পরবর্তী দিনে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে জাগতে পারেন।
গান মিস করেন না- এমন প্রশ্নে তিনি জানিয়েছিলেন, পঞ্চাশ বছরের ওপরে তো গেয়েছি, পৃথিবী দেখেছি, শো করতে দেশ-বিদেশ ঘুরেছি। আমেরিকাতেই ২০ বার গেছি। আর কত গাইব!
সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন, এখন হজে যাওয়াই মূল লক্ষ্য। হাঁটুতে ব্যথার কারণে হাঁটতে পারছেন না জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, একটু সুস্থ হলেই আমার স্বামী আমাকে হজে নিয়ে যাবেন। তিনি হজ করেছেন। এখন তিনি তাবলিগ করছেন।
গানের জগৎ থেকে নিজেকে আড়াল করে নিলেও শ্রোতাদের ভালোবাসাকে জীবনের সেরা প্রাপ্তি বলে উলেস্নখ করেছিলেন তিনি। তার কণ্ঠে দেশাত্মবোধের গানগুলো হৃদয়ে বেশ নাড়া দেয় বলে জানিয়েছিলেন শাহনাজ রহমতউলস্নাহ।