বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হতাশা দিয়েই শুরু চলচ্চিত্রের ২০২০

রায়হান রহমান
  ০২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

সংকট দিয়েই শুরু হলো চলচ্চিত্রের নতুন বছর। বছরের প্রথম সপ্তাহে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেয়ার মতো নেই কোনো নতুন ছবি। এমন কি হাঁক-ডাক নেই দ্বিতীয় সপ্তাহ নিয়েও। তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহ নিয়ে নিশ্চিত না হওয়ায় বছরের প্রথম মাসটি হতাশ করেছে চলচ্চিত্রপ্রেমিদের।

ছবি খরার প্রভাব, বছরজুড়ে ঢালিউডকে ভোগাবে বলেই মনে করছেন চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টরা। সদ্য পার হওয়া বছরের চিত্রও একই ছিল। দেশি-বিদেশি ছবিসহ ২০১৯ সালে মুক্তির তালিকায় সিনেমার সংখ্যা কোনো মতে ৫০ পার করলেও ব্যবসার খাতা খুলেছিল মাত্র একটি ছবি। সেটি শাকিব-বুবলির 'পাসওয়ার্ড'। এ ছাড়া উলেস্নখ করার মতো দর্শক মেলেনি আর কোনো ছবির ভাগ্যেই। বছরের মাঝামাঝি সময় আরিফিন শুভ ও বিদ্যা সিনহা মিমের 'সাপলুডু' আলোচনায় এলেও ব্যবসা করতে পারেনি ছবিটি। বছরের শেষ মাসে এসেও আশার আলো দেখাতে পারেনি ঢালিউড। সেই হতাশার রেশ নিয়েই শুরু হলো ২০২০ সাল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির পক্ষ থেকে এরইমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে, বছরের প্রথম সপ্তাহে মুক্তি পাচ্ছে না কোনো ছবি। বছরের প্রথম ছবি মুক্তি পাবে দ্বিতীয় সপ্তাহে, ১০ জানুয়ারি। ছবির নাম 'জয়নগরের জমিদার'। ছবিটি তারকাবহুল না হওয়ায় নেই আলোচনায় টেবিলে। ফলে এই ছবিটিও দর্শক টানতে ব্যর্থ হবে বলেই মনে করছেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।

তবে আগামীকাল জয়া আহসান ও প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির 'রবিবার' ছবিটি মুক্তির কথা ছিল। সাফটা চুক্তির মাধ্যমে তারকাবহুল এই ছবিটি মুক্তি দিলে দর্শক খরা কিছুটা কাটত বলে ধারণা ছিল সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু সেটি সম্ভব হচ্ছে না নানাবিধ জটিলতার কারণে। এ বিষয়ে অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্টের পরিচালক অনন্য মামুন বলেন, 'আমাদের পরিকল্পনা ছিল বছরের শুরুতেই 'রবিবার' মুক্তি দেয়ার। তবে কিছু জটিলতার জন্য সেটি সম্ভব হচ্ছে না। পরের সপ্তাহে মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করছি।' ছবি ছাড়া নতুন বছর শুরু হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু। তিনি বলেন, 'আমরা আগেই দেখেছিলাম ২০২০ সালের শুরুর কয়েকটা মাস ছবি মুক্তির তারিখ ফাঁকা নেই। প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ছবি মুক্তি দেয়ার জন্য বরাদ্দ ছিল। এখন শুনলাম প্রথম সপ্তাহেই কোনো নতুন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না। এটা হতাশার। হয়ত কেউ তারিখ পরিবর্তন করে মুক্তি পিছিয়ে নিয়েছে।'

নতুন সিনেমার অভাবে হতাশ হল মালিকরাও। প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, 'এটা অত্যন্ত হতাশার বিষয়। বছরটাই খারাপভাবে শুরু হলো। প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহটাও খারাপ যাবে। দর্শক আসবে- এমন ছবি হাতে নেই।' তিনি জানান, আপাতত পুরনো ছবি দিয়ে চলবে হলগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন ছবি না থাকায় হল মালিকরা গত বছর মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো দিয়েই হল চালাচ্ছে। এর মধ্যে ২০টির মতো হলে চলছে আসিফ আকবর অভিনীত 'গহীনের গান'। আর অল্প কিছু হলে চলছে জ্যোতিকা জ্যোতি অভিনীত মাসুদ পথিকের 'মায়া' ছবি। এ ছাড়া দেশি ও আমদানি হয়ে আসা কলকাতার পুরনো ছবি প্রদর্শিত হবে দেশের হলগুলোতে।

অপরদিকে গত বছরের চিত্রও অভিন্ন ছিল না। প্রথম সপ্তাহে মুক্তি দেয়ার জন্য দেশি ছবি না থাকায় ভরসা করতে হয় আমদানিকৃত ছবির ওপর। অনেকটা বাধ্য হয়েই মধুমিতা মুভিজের ব্যানারে মুক্তি পায় আমদানি করা ছবি 'বিসর্জন'। জয়া আহসান অভিনীত এই ছবিটি মুক্তি দিয়ে মান রক্ষা হলেও এবার সে সুযোগও নেই। চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে, চলচ্চিত্রের এই সংকটের আশু কোনো সমাধান নেই। তারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা আরও কমবে। হলে ছবি না থাকলে দর্শক আসবে না। আর দর্শক না আসলে হল ব্যবসায় চলবে না। আদতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প। যদিও বছরের শুরুর দিকে নতুন ছবির খরা এবারই প্রথম নয়। বিগত কয়েক বছরের চিত্রও একই ছিল। ২০১৯ সালে ৫৭টি ছবি মুক্তি পেলেও ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল ৫৬টি। এর মধ্যে চারটি যৌথ প্রযোজনার আর আমদানি করা ছিল আরও চারটি। ফলে নিরেট দেশি ছবির সংখ্যা ছিল ৪৮টি। সে বছরও প্রথম মাসে মুক্তি দেয়ার মতো কোনো ছবি ছিল না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<82526 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1