শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্ছ্বাস-প্রতিবাদে সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

হাসান মোলস্না
  ০১ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বাইরে গিয়ে উলস্নাস বা প্রতিবাদ করার উপায় নেই। এরপরও এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়াদের উলস্নাস বা বাস ভাড়া বৃদ্ধিতে প্রতিবাদ না করে সংশ্লিষ্টরা থাকতে পারেনি। রোববার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ এবং গণপরিবহণের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ছিল সরগরম।

করোনার মধ্যেও এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের পর দেশজুড়ে উৎসব শুরু হয়। কিছু সময়ের জন্য মানুষ মহামারি করোনার প্রকোপ ভুলে যান। সন্তানের আনন্দে অভিভাবকরা মেতে ওঠেন। কেউ কেউ আবার করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও সন্তানের ভালো ফলের খবর জানাতে স্বজনের বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ করেন। তবে এর সংখ্যা খুবই কম। বাইরে বের হয়ে উলস্নাস করতে না পারলেও ফেসবুক-টুইটার, গণমাধ্যমে প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগের সব মাধ্যমে এনিয়ে অনেকেই সক্রিয় ছিলেন। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, অভিভাবকরাও ছিলেন উচ্ছ্বসিত। অনেক অভিভাবকই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সন্তানের ভালো ফল করার খবর জানান দিয়েছেন। ভালো ফল করায় ছাত্রছাত্রীরা ঘরের মধ্যেই পরিবার-পরিজনের সঙ্গে আনন্দরত অবস্থার ছবি প্রকাশ করছেন। অনেকে ভবিষ্যতে কার কী পরিকল্পনা তা শেয়ার করেছেন। ভালো ফলাফলের জন্য রাজনীতিক, সমাজসেবীরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থী করোনার কারণে বাইরে বের হয়ে আনন্দ করতে না পারার জন্য আক্ষেপও করেছেন। অনেক অভিভাবক ভালো ফল করার জন্য সন্তানকে কী কী উপহার দিচ্ছেন এবং শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের কাছ থেকে কী উপহার পাচ্ছেন তারও জানান দিয়েছেন। এছাড়া গর্বিত অভিভাবকের কাছে সন্তানের ভালো ফলাফলের জন্য অনলাইনের শপিংয়ের মাধ্যমে মিষ্টি পাঠানোর আবদারও করতে দেখা গেছে অনেককে।

এদিকে এসএসসি পরীক্ষার ফলকে ঘিরে যেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উলস্নাস ছিল তেমনি গণপরিবহণের ভাড়া বৃদ্ধিতে ছিল তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনা। ভাড়া না বাড়িয়ে অন্য কোনো উপায় অবলম্বন করা যেত কি না তা নিয়েও পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেক মানুষ। গণপরিবহণের এ ভাড়া বৃদ্ধি হলে কী হবে, পরবর্তীতে আর কমানো হবে না, ভাড়া বৃদ্ধি না করে জ্বালানি খরচ বাবদ সরকারি ভর্তুকি দিলে ভালো হতো, চাঁদাবাজি বন্ধ করলে ভাড়া বাড়ানো প্রয়োজন পড়ত না, ভাড়া না বাড়িয়ে একজন যাত্রী দুটি সিট নিয়ে ভাড়া প্রদানের বিধান করলে পরবর্তীতে তা ভাড়া বাড়ানোর উপায় থাকত- এমন অসংখ্য প্রস্তাবনাও এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অধিকাংশ মানুষের ক্ষোভ থাকলেও আইনি নানা বিষয় মাথায় রেখে অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

একটি জাতীয় পত্রিকার প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক পাঠক লিখেন, এ দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ২/৩ মাসের একপ্রকার উপার্জনহীন বেকার জীবন নিয়ে জনগণকে যদি বাড়তি ভাড়া গুনতে হয় তাহলে সরকারি প্রণোদনার অর্থ কার স্বার্থে ব্যয় হবে এ প্রণোদনার অর্থের মালিক জনগণ হলেও সাধারণ জনগণ এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে কেন? বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দরপতন বিবেচনায় দেশেও জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে পরিবহণ ভাড়া অপরিবর্তিত রাখা হোক। তাহলে সরকার, জনগণ, পরিবহণ মালিক কোনো পক্ষেরই ক্ষতি হবে না।?

আরেক পাঠক তার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা ঠিকই অত্যন্ত কঠোরভাবে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আদায় করে নেবেন। কিন্তু পাবলিক কোনোভাবেই বাসে সামাজিক দূরত্বে বসা ও নিরাপত্তার অধিকার আদায় করতে পারবে না। এটা নিশ্চিত যে, সামনের দিনগুলোতে এ সামাজিক দূরত্বের অধিকার নিয়ে সারাক্ষণই পরিবহণ শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে গলা ফাটাফাটি, ঝগড়া-ফ্যাসাদ, হাতাহাতি লেগেই থাকবে। আর সব সময় আমজনতাই সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার হয়। এসির বাতাসে দিনযাপন করা মন্ত্রীরা পাবলিকের এ যাতীয় কষ্ট কখনোই বুঝবেন না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<100925 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1