শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রস্তাব যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে

সমাপনী দুই পরীক্ষা এবার হচ্ছে না!

চলতি বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হচ্ছে না, এমনটা ধরে পরীক্ষা ছাড়াই পরের ক্লাসে অটো প্রমোশন দেওয়ার চিন্তা করছে সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়
যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনা মহামারির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির এবারের সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে প্রস্তাব যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এদিকে করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে চলতি বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হচ্ছে না, এমনটা ধরেই পরীক্ষা ছাড়াই পরের ক্লাসে অটো প্রমোশন দেওয়ার চিন্তাও করছে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে সীমিত আকারে হলেও চলতি শিক্ষাবর্ষের মৌলিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে পরের শিক্ষাবর্ষে। শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে এমন প্রস্তাব প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে 'বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট'-বেডু এবং প্রাথমিক স্তরে 'জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি' (নেপ) প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সায় মিললে আগামী মাসে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।

তবে এসব বিষয়ে চূড়ান্তভাবে বলার মতো এখনো কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, বেডু বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে সারসংক্ষেপ তৈরি করে আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। সেই প্রস্তাব অটোপ্রমোশন, সিলেবাস কমানোসহ আরও কিছু বিষয় থাকবে। প্রধানমন্ত্রী কীভাবে সিদ্ধান্ত দেবেন তা এখনো বলা যাচ্ছে না। পরীক্ষা বাতিল না করে বিকল্প প্রস্তাবও তিনি দিতে পারেন।

জানা গেছে, শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে প্রস্তাব তৈরির কাজ শুরু করেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঙ্গে দুই সচিবের একটি বৈঠকে এসব পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বৈঠকে প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি-জেএসডি পরীক্ষা নিয়েও আলোচনা হয়। তবে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার প্রস্তাব দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আর প্রাথমিক সমাপনী প্রস্তাব দেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বেডুর ৩৯ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদনে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- এক. সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে সীমিত আকারে হবে প্রতি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা, দুই. নভেম্বরে স্কুল খুললে নেওয়া হবে প্রতি বিষয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা, তিন. ডিসেম্বরেও স্কুল খোলা না হলে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী শ্রেণিতে চলে যাবে শিক্ষার্থীরা। তবে আগের বছরের মৌলিক পাঠ্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হবে পরের বছর।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া বেডুর চারটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হলে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত ক্লাস চালিয়ে নেওয়া। সেক্ষেত্রে পরের শিক্ষাবর্ষের সরকারি ছুটি কমিয়ে সমন্বয় করা। ছয় মাস ক্লাস নেওয়া সম্ভব হলে পাঠ্যবইয়ের অধ্যায়ভিত্তিক সব না পড়িয়ে বিষয়ভিত্তিক সাম্যক পাঠদান করা। যাতে সব শিক্ষাবর্ষের পাঠের সাম্যক ধারণা পেতে পারে শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে এনসিটিবি একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দেবে। যাতে লার্নি আউট কামগুলো অ্যাসিব করা সম্ভব হয়। শর্ট সিলেবাসে পাঠদান শেষে পরীক্ষা নেওয়া। দ্বিতীয়. শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার পাবলিক (জেএসসি-জেডিসি) পরীক্ষা না নিয়ে শুধু এক ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়া। এতে সব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা যাচাই করতে শিক্ষা বোর্ডগুলোকে সেভাবে প্র্রশ্ন করার গাইডলাইন তৈরি করে দেবে বেডু। অন্তত তিন মাস ক্লাস নেওয়া সম্ভব হলে সেক্ষেত্রে এ রকম প্রস্তাব করা হয়েছে। তৃতীয়. তিন মাস ক্লাস করা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে স্কুলগুলো বার্ষিক পরীক্ষার মতো একটি পরীক্ষা নেবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা দেবে। যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধই রাখতে হয় সে ক্ষেত্রে আর পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। চতুর্থ. শেষ পর্যন্ত যেন ওপরের একটি প্রস্তাবও বাস্তবায়ন না করা যায় সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে অটো প্রমোশন দেওয়া। আগের ক্লাসের শিখন ঘাটতি থেকে যাবে সেগুলোকে চিহ্নিত করে নতুন শিক্ষাবর্ষের কারিকুলামের মধ্যেই শিখিয়ে দিতে হবে শিক্ষকদের।

বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন, আমরা বলেছি যে পরবর্তী ক্লাসে শিফট করে দেওয়া। যদি প্রমোশন দেওয়া হয় কোনো পরীক্ষা ছাড়া আগের ক্লাসের কিছু অধ্যায় পরবর্তী ক্লাসে পড়ানো হবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ অবস্থায় খুব দ্রম্নত নিতে হবে সিদ্ধান্ত। সুপারিশগুলোকে শেষ মুহূর্তের যাচাই-বাছাই করে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও নিয়ম প্রযোজ্য হবে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কমপক্ষে এক মাস সময় নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<108561 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1