শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আইওএমের গবেষণা

জীবিকার সংকটে দেশে ফেরা ৭০% প্রবাসী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

কোভিড-১৯ এর কারণে উপার্জন ব্যবস্থা, সামাজিক সেবা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সহায়তার নেটওয়ার্কের অভাবে হাজারও অভিবাসী কর্মী প্রবাস থেকে বাংলাদেশে তাদের জেলায় ফিরে আসতে বাধ্য হন। ২০২০ সালের ফেব্রম্নয়ারি থেকে জুনের মধ্যে বিদেশফেরতদের প্রায় ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি দেশে ফিরে কোনো কাজ পাচ্ছেন না।

দেশের ১২ জেলায় বিদেশফেরত অভিবাসীদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এমন তথ্য পেয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। র্'যাপিড অ্যাসেসমেন্ট অব নিডস অ্যান্ড ভালনারেবিলিটিস অব ইন্টারনাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিটার্ন মাইগ্র্যান্টস ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদনের কথা বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ কোভিড-১৯ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং পরিবারের কাছে ফেরত আসতে চেয়েছেন। পরিবার তাদের ফেরত আসতে বলায় ফিরে এসেছেন ২৬ শতাংশ। সীমান্ত বন্ধ করে দিলে আটকে পড়ার ভয়ে ফিরে এসেছেন ৯ শতাংশ।

আইওএম বলছে, সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে মোট এক হাজার ৪৮৬ জন বিদেশফেরত অভিবাসীর ওপর জরিপটি চালানো হয়। গত মে ও জুলাই মাসে দেশের ১২টি উচ্চ অভিবাসনপ্রবণ জেলায় এই জরিপ পরিচালনা করা হয়, যার মধ্যে সাতটি জেলায় ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেরত আসা অভিবাসীরা জীবিকা, আর্থিক সংকট (উপার্জনের অভাব এবং বর্ধিত ঋণ), স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়সহ পুনরেকত্রীকরণে বিভিন্ন ধরনের

পৃষ্ঠা ২ কলাম ০সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। একেকজন অভিবাসী কর্মী গড়ে তার পরিবারের তিনজন সদস্যকে সহায়তা প্রদান করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে অপরিকল্পিত ও বৃহৎসংখ্যক জীবিকাহীন অভিবাসী কর্মী ফেরত আসায় সারাদেশে রেমিট্যান্সনির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

জরিপ বলছে, কোভিড-১৯-এর প্রভাবে অভিবাসী কর্মীদের সুনির্দিষ্টভাবে বিপদাপন্নতা তৈরি হয়েছে। কোভিড-১৯-এর কারণে উপার্জনব্যবস্থা, সামাজিক সেবা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সহায়তার নেটওয়ার্কের অভাবে হাজারও অভিবাসী কর্মী প্রবাসে যে দেশে কাজ করছিলেন, সেখান থেকে বাংলাদেশে তাদের জেলায় ফিরে আসতে বাধ্য হন। কর্মস্থলে তথ্য ও স্বাস্থ্যসেবা পেতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন ৬৪ শতাংশ প্রবাসী।

জরিপে ৫৫ শতাংশ জানান, তাদের ওপর ঋণের বোঝা রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পরিবার ও বন্ধুর কাছে ঋণগ্রস্ত, ৪৪ শতাংশ ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (এমএফআই), স্বনির্ভর দল এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণগ্রস্ত। এমএফআই, এনজিও এবং বেসরকারি ব্যাংক থেকে গৃহীত ৬৫ শতাংশকে ঋণের জন্য সুদ বহন করতে হচ্ছে ১০-১৫ শতাংশ। মহাজন বা সুদে টাকা ধার দেন- এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে ৬২ শতাংশ ঋণগ্রহীতাকে সুদ গুনতে হচ্ছে ৫০-১৫০ শতাংশ।

আইওএম বাংলাদেশের মিশনপ্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, 'কোভিড-১৯ মহামারির সময় সবচেয়ে বিপদাপন্ন গোষ্ঠীদের মধ্যে রয়েছেন অভিবাসী কর্মীরা। তাদের পুনরায় সংহত করার জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।'

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রায় ৭৫ শতাংশ জানান, তারা আবার অভিবাসনে আগ্রহী। তাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের আগে যে দেশে কাজ করতেন, সেই দেশেই পুনরায় অভিবাসনে ইচ্ছুক। অন্যদিকে, ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী আরও ভালো বেতনের চাকরি নিশ্চিতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আগ্রহী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<108659 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1