বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৬ মাসে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে না পারলে ভবিষ্যতে প্রভিশন ঘাটতি পযার্য়ক্রমে বাড়তেই থাকবে
যাযাদি রিপোটর্
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:৪৬

খেলাপি ঋণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে বাড়তে শুরু করে ঋণের বিপরীতে জমা রাখা প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি। যা সবশেষ ছয় মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে না পারলে ভবিষ্যতে প্রভিশন ঘাটতির পযার্য়ক্রমে বাড়তেই থাকবে। সময় এসেছে খেলাপি ঋণ আদায়ে কঠোর পদেক্ষে নেয়ার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভনর্র খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ব্যাংকিং খাতকে বঁাচিয়ে রাখার জন্য খেলাপি ঋণ আদায়ের কোনো বিকল্প নেই। এখনো সময় আছে খেলাপি ঋণ আদায়ে উদ্যোগী হওয়ার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) দেশের সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতে ঋণের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) ঘাটতি বেড়েছে ১২ হাজার ২৩ কোটি টাকা। জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দঁাড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। অথচ বছরের শুরুতে (জানুয়ারি) মাসে এই ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। ছয় মাসে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ১৮ শতাংশ। তিন মাস আগে চলতি বছরের ৩১ মাচর্ পযর্ন্ত এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৯৫৮ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমর্কতার্রা বলেছেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং খাতের প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারি ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পযর্ন্ত খেলাপি ঋণ বেড়েছ ২০ শতাংশ। জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দঁাড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। প্রতিবেদনের তথ্য থেকে জানা যায়, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর তুলনায় সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বেশি প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। চলতি বছরের ৩১ জুন শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি বাণিজ্যিক প্রভিশন ঘাটতিতে রয়েছে। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, দেশে কাযর্রত ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ১৩টি ব্যাংক নিদির্ষ্ট কয়েকটি গ্রæপের খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে ব্যথর্ হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চারটি ব্যাংকও রয়েছে। ২০১৭ সালের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) সরকারি-বেসরকারি মিলে ৯টি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি থাকলে ২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মাচর্) তিনটি বেড়ে ১২টিতে পৌঁছায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধান অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর বড় ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সব ধরনের ঋণের বিপরীতে পরিচালন মুনাফা থেকে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে হয়। তবে সাধারণ মানের ঋণের বিপরীতে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ পযর্ন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। নিম্নমানের ঋণের জন্য রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দমানের ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ পযর্ন্ত প্রভিশন রাখতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবার্হী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোতে তাগিদের পাশাপাশি পরামশর্ও দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে