শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন

আওয়ামী লীগে সৈয়দ আশরাফ বিএনপিতে একাধিক প্রাথীর্

কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর)
নতুনধারা
  ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

আশরাফ আলী, কিশোরগঞ্জ

একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা গণসংযোগ ও পথসভায় ব্যস্ত। তবে এই আসনে দীঘর্ দিনের পরীক্ষিত নেতা, জনপ্রশাসনমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই জনপ্রিয়তার শীষের্ রয়েছেন বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত। তাই এ আসনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছাড়া বিকল্প কোনো চিন্তাই করছে না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকি স্থানীয় নেতাকমীর্ ও জনমনে সৈয়দ আশরাফকে ছাড়া কোনো বক্তব্য নেই।

সৈয়দ আশরাফের প্রতিনিধি হয়ে কিশোরগঞ্জ ও হোসেনপুরে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন তার চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুরে কোনো একটি ইউনিয়ন বাদ যায়নি তার উন্নয়নের ছেঁায়া থেকে। সৈয়দ আশরাফ জাতীয় রাজনীতি ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট নিয়ে আন্তজাির্তক মহলে ব্যস্ত থাকলেও তিনি কিশোরগঞ্জবাসীর কথা ভোলেননি। তাই হাওরবেষ্টিত এই শহরটি স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি অত্যাধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিদ্যুৎ সেবার জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বধির্তকরণ, মৎস্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বিদেশগামী শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের জন্য টিটিসি নিমার্ণ, নরসুন্দা লেকসিটি, অত্যাধুনিক জেলখানা, পৌরসভার নগর ভবন নিমার্ণ, নগর মাতৃসদন নিমার্ণসহ রয়েছে হাইটেক পাকর্ নিমার্ণ ও শিশু পাকর্ নিমার্ণ পরিকল্পনা। কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর শহরে সাবির্ক উন্নয়নে সৈয়দ আশরাফের অবদান অনস্বীকাযর্। আজকের সুন্দর কিশোরগঞ্জ ও মনোরম হোসেনপুরÑ এসব অবদান সৈয়দ আশরাফের।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জের জনসাধারণের কাছে পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে সুপরিচিত। ১৯৯৬ সনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দেশে ফিরে প্রথমবার সাধারণ নিবার্চনে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করেন। এরপরে ২০০১ সনের নিবার্চনে জনগণের ভোটেই পুনরায় এমপি নিবাির্চত হন। ২০০৮ সনে সাধারণ নিবার্চনে ৩য়বারের মতো এমপি হন এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নিবার্চনে কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় তিনি ৪থর্ বারের মতো নিবাির্চত হন। আগামী জাতীয় নিবার্চনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পুনরায় নিবাির্চত হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে হোসেনপুর-কিশোরগঞ্জ উপজেলার নেতৃবৃন্দ।

অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নিবার্চনী আলোচনায় গণসংযোগে প্রকাশ্যে কাউকে পাওয়া না গেলেও পরোক্ষভাবে চলছে নিবার্চনী প্রচারণা, মিটিং, কমির্সমাবেশ। হাইকমান্ডের নিদেের্শ নিধাির্রত হবে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের চূড়ান্ত প্রাথীর্। জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাবেক ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম খান চুন্নু ২০০৬ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েও নিবার্চন করতে পারেননি। কারণ নিবার্চন কমিশন নিধাির্রত বাধ্যবাধকতায় সরকারি চাকরি হতে অব্যাহতি নেয়ার ৩ বছর পরে নিবার্চন করতে হয়। একাদশ নিবার্চন সামনে রেখে তিনি নিবার্চনী প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। পারিবারিকভাবে ১০ ভাই ও ৪ বোনের প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ায় জনগণের কাছে প্রাথীর্ হিসেবে তার পরিচয় ও যোগ্যতা অনন্য।

অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাসুদ হিলালী বিএনপির এক সময়ের বলিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত। রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে সবর্স্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি ১৯৯৬ সনের একদলীয় নিবার্চনে সংসদ সদস্য হিসেবে নিবাির্চত হন। পরে ১৯৯৬ সনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে পরাজিত হন। এর পরে ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ সনের অনুষ্ঠিত নিবার্চনেও পরাজিত হন দলীয় অনৈক্যতার কারণে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, নিবার্চন বিষয়ে তার চেয়ে বেশি ত্যাগ কিশোরগঞ্জে কেউ করেনি। বিএনপির সবকটি নিবার্চনে তার শারীরিক ও মানসিক শ্রম ছিল নিলোর্ভ। অনেক দিন অভিমানে কাজ করেননি। কিন্তু তার রক্তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রক্ত বহমান। তাই আবারও দলটির জন্য মাঠে কাজ করছেন। যদি মনোনয়ন পান আবার নিবার্চনে লড়বেন, না পেলেও দলের জন্যই কাজ করবেন।

বতর্মান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শরীফুল ইসলাম অ্যাডভোকেট ২০১৪ সালের ১৫ মাচর্ উপজেলা নিবার্চনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ১৫ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নিবাির্চত হন। এছাড়াও তিনি জেলা ছাত্রদলের আহŸায়ক, সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

অপরদিকে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গুরুদয়াল কলেজের সাবেক ভিপি, কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওয়ালীউল্লাহ রাব্বানীও জনগণের কাছে এরই মধ্যে যোগাযোগ ও নেতাকমীের্দর সঙ্গে সম্পকর্ বজায় রেখে ঢাকায় বিএনপির হাইকমান্ডের নিকটতম ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও তিনি ১৯৮১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পযর্ন্ত রাজপথে জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে জেল-জুলুম ও নিযার্তন সহ্য করেছেন। আগামী নিবার্চনে ধানের শীষ প্রতীকের আশাবাদী।

জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে গণসংযোগ ও প্রাথির্তার প্রত্যাশা করছেন। তিনি সাবেক ভিপি, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। জেলা বিএনপির আন্দোলনে এ পযর্ন্ত ৩৩টি মামলাসহ ১১ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া। তিনি সাবেক ভিপি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি রাজপথে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির লড়াকু সৈনিক হিসেবে পরিচিত। একাদশ নিবার্চনে তিনিও ধানের শীষ প্রতীকের জন্য লড়ছেন।

কিশোরগঞ্জের রূপকার হিসেবে পরিচিত সাবেক এমপি মরহুম আলমগীর হোসেন তার অবদানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলাটি জেলা শহরে পরিণত হয়েছে। তার সময়ে কিশোরগঞ্জে যেসব উন্নয়ন কাজ হয়েছিল, পরবতীের্ত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছাড়া আর কেউ তার কাছাকাছি আসতে পারেনি। তার দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে শিবলু আলমগীর হোসেন সিটিকে পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে তিনিও প্রমাণ করেন যে বাবার আদশর্ লালন করছেন। কোনো সময় সুযোগ এলে বাবার অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সচেষ্ট থাকবেন।

জেলা গণতন্ত্রী পাটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে বতর্মান পযর্ন্ত স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে জনগণের কাছে সুপরিচিত। তিনি ১১ নং সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে ১৫ আগস্ট প্রতিবাদকারীদের একজন। তিনি ২০০১ সালে শ্রেষ্ঠ সমবায়ী পুরস্কার ও ২০০৩ সালে এবিআই-এর ম্যান অব ইয়ার নিবাির্চত হন। রাজপথের লড়াকু সৈনিক এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭২তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সফরসঙ্গী হিসেবে ১৪ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি ১৪ দলের জোটের হয়ে কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুরে প্রায় ৩০টিরও বেশি গণসংযোগ করেন। বতর্মানে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী বারের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনিও আগামী একাদশ জাতীয় নিবার্চনে গণতন্ত্রী পাটির্র কবুতর প্রতীক নিয়ে ১৪ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<17460 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1