শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বপ্নপথে একধাপ এগোলো ইংল্যান্ড

ক্রীড়া ডেস্ক
  ০৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৩:১২
মস্কোর স্পাটর্ক স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর এভাবেই উচ্ছ¡াসে মেতে উঠেন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা Ñওয়েবসাইট

সতীথর্ কালোর্স সানচেজকে ‘আত্ম-দহন’ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন ইয়েরি মিনা, ইনজুরি সময়ে গোল করে কলম্বিয়াকেও এনে দিয়েছিলেন শেষ সুযোগ। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি লাতিন আমেরিকার দলটি। ১-১ সমতায় শেষ হওয়া ম্যাচে টাইব্রেকারে কপাল পুড়েছে তাদের। টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে কলম্বিয়াকে বিদায় করে দিয়েই স্বপ্নপথে আরেকধাপ এগিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। সবার শেষে হ্যারি কেনের দল নাম লিখিয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়াটার্র ফাইনালে। আগামী শনিবার সামারায় অনুষ্ঠেয় সেই কোয়াটার্র ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সুইডেন।

এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হয়েছে শেষ ষোলোর খেলা। রাশিয়া বিশ্বকাপ এখন কেবল আট দলের। সেখানে বড় চমক হিসেবে আছে স্বাগতিক রাশিয়া। আছে বেলজিয়াম-সুইডেন আর ক্রোয়েশিয়ার মতো প্রতিশ্রæতিশীল দল। আছে শিরোপার অন্যতম দাবিদার এবং সাবেক চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল আর ফ্রান্স, তাদের সঙ্গে আরও দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে আর ইংল্যান্ড। আজ এবং আগামীকাল কোনো খেলা নেই, শুক্রবার থেকে শুরু হবে শেষ আটের রোমাঞ্চ।

আজেির্ন্টনা-ফ্রান্স ম্যাচে যেমন রোমাঞ্চ ছড়িয়ে শুরু হয়েছিল শেষ ষোলোর খেলা, ইংল্যান্ড-কলম্বিয়া লড়াইয়ে মঙ্গলবার সেই রোমাঞ্চের আভা থাকল সামান্যই। স্পাটার্ক স্টেডিয়ামে দুই দলের খেলোয়াড়দের কারিকুরি মাঝমাঠের আশপাশেই দেখা গেল বেশি। প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে ভীতি ছড়ানো, জোরালো আক্রমণে রক্ষণ নাড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারগুলো ছিল তুলনামূলক অনেক কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রমণগুলো ছিল ছন্নছাড়া, প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে বারবারই প্রাণ হারাল তা।

এরই মধ্যে সম্ভাবনা জাগেনি, এমনটা কিন্তু নয়। এ ক্ষেত্রে কিছুটা এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ডই। দুরন্ত ছন্দে থাকা দলটির অধিনায়ক এবং সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হ্যারি কেন বেশ কয়েকবার পরীক্ষা নিয়েছেন কলম্বিয়ান গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনার। জেসে লিনগাডর্, কেইরান ট্রিপিয়াররাও আক্রমণে গেছেন, শটও নিয়েছেন। তবে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই তাদের শটগুলো ছিল এলোমেলো। কখনো ক্রসবারের উপর দিয়ে বল মেরেছেন, কখনো

আবার পোস্টের বাইরে দিয়ে।

প্রথমাধের্ কলম্বিয়ার আক্রমণগুলো ছিল আরও ছন্নছাড়া। ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি হামেস রদ্রিগেজ, মাঝমাঠে তাই তেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল না লাতিন আমেরিকার দলটির। ঠিকভাবে বলের জোগান না পেয়ে স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাও বারবার নিচে নেমে এলেন বলের দখল নিতে। এরই মধ্যে বিক্ষিপ্ত কিছু আক্রমণ ছিল। হুয়ান কুয়েন্তেরো কয়েকবার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, কিন্তু এই ফরোয়াডর্ ইংলিশ গোলরক্ষক জডার্ন পিকফোডের্ক পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি।

প্রথমাধের্র এমন চিত্রের পরই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল এই ম্যাচে গোলের আধিক্য থাকবে না। একটা গোলই হয়তো নিধাির্রত হবে ম্যাচের ভাগ্য। এমন পরিস্থিতিকেই কিনা কলম্বিয়ার বিপদ ডেকে আনলেন কালোর্স সানচেজ। ৫৪ মিনিটে কনার্র পায় ইংল্যান্ড, সেই কনাের্র হেড নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কেন। বল উড়ে আসার সময় নিজেদের বক্সে ইংলিশ দলপতিকে জাপটে ধরে অযথাই ফেলে দিলেন এই ডিফেন্ডার। রেফারি খুব কাছ থেকেই দৃশ্যটা দেখলেন, বেজে উঠল পেনাল্টির বঁাশি।

স্পটকিক নিতে এসে চলতি বিশ্বকাপে নিজের ষষ্ঠ গোলটি করে ফেললেন কেন। ইংল্যান্ড এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। ওই গোল পরিশোধ করে খেলায় ফিরতে এরপর কতো চেষ্টাই চালিয়েছে কলম্বিয়া, কিন্তু পরিষ্কার কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারছিল না হোসে পেকারম্যানের শিষ্যরা। ৮১ মিনিটে হুয়ান কুয়াদ্রাদো বক্সের কাছে থেকে বল মেরে দিলেন ক্রসবারের উপর দিয়ে, ৮৭ মিনিটে ফ্যালকাওয়ের নেয়া দুবর্ল শট অনায়াসেই গ্রিপে নিলেন পিকফোডর্।

ইনজুরি সময়ে ইংলিশ এই গোলকিপারের হাতের ছেঁায়াতেই আবার পাল্টে গেল ম্যাচের দৃশ্যপট। ৩০ গজ দূর থেকে বুলেট গতির এক শট নিয়েছিলেন ম্যাথুস ইউরিবে। পোস্টের খুব কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় বলে হাত লাগিয়েছিলেণ পিকফোডর্। তাতেই কনার্র পায় কলম্বিয়া। ইনজুরি সময়ের একেবারে অন্তিম মুহ‚তের্ কুয়াদ্রাদোর নেয়া সেই কনার্র থেকেই হেডে গোল করলেন ইয়েরি মিনা (১-১)। তাতেই ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানে স্কোর লাইনে কোনো পরিবতর্ন আনতে পারেনি কোনো দল। তাই বাধ্য হয়েই টাইব্রেকারে ভাগ্য নিধার্রণ।

ভাগ্যের সেই খেলায় কালোসর্ বাক্কার শট থামিয়ে গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ডকে জয়োৎসবে মাতিয়েছেন গোলরক্ষক পিকফোডর্।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে