শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার আরও ৭ বছর সাজা

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলার রায়
যাযাদি রিপোটর্
  ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:৫০
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবিন থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এনাটমি বিভাগে নেয়া হয় ষ শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি পৃষ্ঠা-১৫

ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সবাইকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদÐ দিয়েছে আদালত। ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর বসানো পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাস থেকে বিচারক মো. আখতারুজ্জামান সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। জিয়া এতিমখানা দুনীির্ত মামলায় পঁাচ বছরের সাজায় গত ৮ ফেব্রæয়ারি থেকে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আট মাসের মাথায় দ্বিতীয় দুনীির্ত মামলায় দÐিত হলেন। কারা কতৃর্পক্ষ বার বার খালেদা জিয়াকে আদালতকক্ষে নিতে ব্যথর্ হওয়ায় তার অনুপস্থিতিতেই এই মামলার শেষ দিকের কাযর্ক্রম চালিয়ে নেয় আদালত। রায়ের সময়ও তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তার আইনজীবীরাও যাননি। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এই মামলার বাদী দুনীির্ত দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আমরা সবোর্চ্চ সাজা চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি।’ আদালতে উপস্থিত না থাকায় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া জানা না গেলেও বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নিম্ন আদালতে এখন আর মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না।’ এই রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সারাদেশে জেলা সদর ও মহানগরে বিক্ষোভ কমর্সূচি ঘোষণা করেছেন তিনি। ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য কারা তত্ত¡াবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) রাখা হয়েছে। সবের্শষ ৫ সেপ্টেম্বর তিনি আদালতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘বিচারক যত খুশি সাজা দিতে পারেন, তিনি আর আসবেন না।’ সাত বছর আগে দুনীির্ত দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এই মামলার চার আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডবিøউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক আখতারুজ্জামান তার ছয় শতাধিক পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সময় নিয়ে আদালতে পড়ে শোনান। ১৫টি বিষয় বিবেচনা করে তিনি আসামিদের সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করেন। দুনীির্তর দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ১৯৪৭ সালের দুনীির্ত প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদÐ এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদÐ দেন তিনি। আর খালেদা জিয়াকে দুনীির্ততে সহযোগিতা করার দায়ে বাকি তিন আসামিকে দÐবিধির ১০৯ ধারায় একই সাজার আদেশ দেন বিচারক। পাশাপাশি জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুক‚লে বাজেয়াপ্ত করার নিদের্শ দেয়া হয়েছে এই রায়ে। দুনীির্ত প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা: কোনো সরকারি কমর্চারী অপরাধমূলক অসদাচরণ সংগঠন করিলে বা সংগঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করিলে সাত (০৭) বছর পযর্ন্ত কারাদÐ অথবা জরিমানা অথবা উভয় দÐে দÐযোগ্য হইবে এবং অপরাধমূলক অসদাচরণ-সংশ্লিষ্ট অথির্ক সম্পদ অথবা সম্পত্তি ও রাষ্ট্রের অনুক‚লে বাজেয়াপ্ত হইবে। দÐবিধির ১০৯ ধারা: কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধে সহায়তা করিলে যদি সহায়তার ফলে সাহায্যকৃত কাযির্ট সম্পাদিত হয় এবং এই বিধিতে অনুরূপ দুষ্ককমের্ সহায়তার শাস্তি বিধানাথের্ কোনো স্পষ্ট বিধান না থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির উক্ত অপরাধের জন্য ব্যবস্থিত শাস্তি বিধান করা হইবে। রায়ের পযের্বক্ষণে বিচারক বলেন, ‘পরবতীের্ত কেউ যাতে এ রকম কাজে উৎসাহিত না হন, সে জন্য তাকে (খালেদা জিয়া) কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার বলে আদালত মনে করে। একইভাবে তাকে সহযোগিতা করার জন্য অপর আসামিদের কঠোর সাজা হওয়া দরকার বলে আদালত মনে করে।’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই মামলার বিচার চালানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে গিয়েছিলেন তার আইনজীবীরা। সোমবার সকাল ৯টার পর আপিল বিভাগ সেই লিভ টু আপিল খারিজ করে দিলে রায় ঘোষণার বাধা কেটে যায়। কয়েকটি ধাযর্ তারিখে আসামিপক্ষ যুক্তিতকর্ উপস্থাপন না করায় বিচারক গত ১৮ অক্টোবর এই মামলার বিচারিক কাযর্ক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করে ২৯ অক্টোবর রায়ের দিন রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে