বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
২৮ নভেম্বর পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল

ভোট পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর

যাযাদি রিপোটর্
  ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০৪

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন জোটের দাবির পর ভোট এক সপ্তাহ পিছিয়ে দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের তফসিল পুননির্ধার্রণ করেছে নিবার্চন কমিশন। প্রধান নিবার্চন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ‘আমরা তফসিল পুননির্ধার্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২৮ নভেম্বর পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হবে।’ তফসিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তজাির্তক সম্মেলন কেন্দ্রে নিবার্চন কমিশনের ইভিএম প্রদশর্নীতে সিইসির এ ঘোষণা আসে। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নিবার্চন পেছানোর দাবিতে কমিশনে যে চিঠি দিয়েছিল, সে বিষয়ে সোমবার সকালে বৈঠক করে নিবার্চনের দিনক্ষণ পেছানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা। সিইসি বলেন, ‘তারা নিবার্চনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সেটা নিয়ে আমরা নিবার্চন কমিশনারদের সাথে আলোচনা করেছি, তারপর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা নিবার্চন কমিশনের জন্য স্বস্তির বিষয় যে, বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট নিবার্চনে অংশ নিচ্ছে।’ এ অনুষ্ঠানে ভোটের নতুন তারিখ ও মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ঘোষণা করলেও মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রত্যাহারের তারিখ পরে ঠিক করা হবে বলে জানান সিইসি। নিবার্চন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক শিবিরে মতানৈক্যের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নিবার্চনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি নুরুল হুদা। সেখানে ২৩ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ ধরে ১৯ নভেম্বর পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল, ২২ নভেম্বর বাছাই এবং ২৯ নভেম্বর পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রাখা হয়। বিএনপির ভোট বজের্নর মধ্যে গঠিত দশম সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি, সেই সংসদের মেয়াদ আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। ফলে তার আগের ৩০ দিনের মধ্যে নিবার্চন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির সামনে। তফসিলের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো মনোনয়নের প্রস্তুতি শুরু করলেও সাত দফা দাবি জানিয়ে আসা বিএনপি ও তাদের জোট শরিকরা স্পষ্ট ঘোষণা না দেয়ায় দশম সংসদের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা জাগছিল অনেকের মনে। তবে রোববার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীষর্ নেতা কামাল হোসেন ও মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর জোটের এক সংবাদ সম্মেলন থেকে আসন্ন সংসদ নিবার্চনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিলে সেই সংশয় কাটে। পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলও ভোটে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। তবে ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নিবার্চন এক মাস পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়। এদিকে বিএনপির সাবেক নেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট তফসিলের পরপরই নিবার্চন সাত দিন পেছানোর দাবি জানিয়েছিল। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক জোটগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নিবার্চন কমিশন (ইসি) ভোটের তারিখ পিছিয়ে দিলে তাতে তাদের আপত্তি থাকবে না। শেষ পযর্ন্ত নিবার্চন কমিশন তফসিল পুননির্ধার্রণ করে নিবার্চনের জন্য নতুন যে তারিখ ঘোষণা করল, তাতে বি. চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টের দাবিই টিকল। আপত্তি নেই আ’লীগ-জাপার তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং চলতি সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পাটির্ বলেছে, ইসির পুনঃতফসিলে কোনো সমস্যা দেখছে না তারা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তফসিলের বিষয়ে নিবার্চন কমিশনের সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্ত। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল বা অন্যান্য যারা নিবার্চনে পাটিির্সপেট করেছেন, তাদের দাবিতে যদি নিবার্চন কমিশন তারিখ পেছান, তবে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ অন্যদিকে জাতীয় পাটির্র মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা বলছি ইসির জন্য যে দিনটি কমফটের্বল হয় সেদিনই নিবার্চন হবে। এখন ৩০ ডিসেম্বর যদি নিবার্চনের জন্য উপযুক্ত মনে করে নিবার্চন কমিশন, তাহলে তাই হবে।’ সিইসিকে ধন্যবাদ বি. চৌধুরীর একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ভোট গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর করায় প্রধান নিবার্চন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিকল্পধারার সভাপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। সিইসির ঘোষণার পর সোমবার দুপুরের দিকে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে সিইসি কেএম নুরুল হুদাসহ অন্য কমিশনারদের ধন্যবাদ জানান বি. চৌধুরী। বিবৃতিতে বি. চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান নিবার্চন কমিশনার আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করায় আমরা খুশি হয়েছি।’ একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ভোট গ্রহণের তারিখ পেছাতে যুক্তফ্রন্ট নিবার্চন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছিল। রোববার সিইসি বরাবর এই চিঠি দেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি ২৩ ডিসেম্বরের পরিবতের্ ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের দিন নিধার্রণ করার দাবি জানিয়েছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে