আজকের যায়যায়দিন

নিবার্চনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করার পর কারাবন্দি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘দোয়া’ নিয়ে এসেছেন বিএনপি নেতারা। সোমবার বিএনপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়; খালেদার নিবার্চনে অংশগ্রহণ এখনো অনিশ্চিত হলেও তার জন্য তিনটি মনোনয়ন ফরম কেনা হয়েছে। এরপর দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার ও মিজার্ আব্বাস যান কারাগারে নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারে বন্দি খালেদার সঙ্গে দলের এই চার নেতা দেড় ঘণ্টা কথা বলেন। বেরিয়ে আসার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ম্যাডাম আমাদের জন্য দোয়া করেছেন। তিনি আশা করছেন, জনগণের যে ঐক্য আমরা তৈরি করেছি, সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’ নিবার্চন নিয়ে আর কোনো কথা হয়েছে কি নাÑ জানতে চাইলে ‘না’ সূচক জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব। দুনীির্তর মামলায় দÐ নিয়ে খালেদা জিয়ার বন্দি থাকার মধ্যেই কামাল হোসেনের উদ্যোগে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয় বিএনপি। এই জোট থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিবার্চনের দাবি তোলা হলেও তা পূরণ হয়নি। তারপরও ‘আন্দোলনের অংশ’হিসেবে নিবার্চনের অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভোটে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরদিন সোমবারই মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার জন্য ফেনী-১, বগুড়া-৭ ও বগুড়া-৬ আসনের মনোনয়ন ফরম কেনা হয়েছে। এর পরপরই কারাগারে দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে যান বিএনপির পঁাচ নেতা। বিএসএমএমইউতে নেয়ার দাবি খালেদা জিয়াকে আবারও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম অসুস্থ, অত্যন্ত অসুস্থ এবং উনার চিকিৎসা এখানে ঠিকমতো হচ্ছে না। পিজি হাসপাতালে রেখে ডাক্তাররা চিকিৎসা করার যে পরামশর্ দিয়েছিলেন, কতৃর্পক্ষ সেই পরামশর্ গ্রাহ্য করেননি। তাকে হঠাৎ করেই কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে।’ ‘আমরা তখনই বলেছি, এটা অমানবিক। চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে তাকে আবার পিজি হাসপাতালে নিয়ে তার চিকিৎসার সুব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুনীির্তর মামলায় গত ৮ ফেব্রæয়ারি রায়ের পর থেকে খালেদা জিয়া কারাবন্দি। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী নাজিমউদ্দিন রোডের এই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রয়েছেন। এর আগে খালেদার চিকিৎসার জন্য তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। তখন বিএসএমএমইউতে চিকিৎসার প্রস্তাবে রাজি হচ্ছিল না বিএনপি। কিন্তু পরে খালেদাকে বিএসএমএমইউতেই নেয়া হয়েছিল। এক মাস সেখানে রাখার পর গত ৮ নভেম্বর কারাগারে ফেরত নেয়া হয় তাকে। এর মধ্যে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুনীির্তর মামলায়ও খালেদার সাজার রায় হয়েছে। গ্যাটকো দুনীির্তর মামলার শুনানিতেও তাকে হাজির করা হয়েছে। ফখরুল দলীয় নেত্রীর শারীরিক অবস্থার বণর্না দিয়ে বলেন, ‘চারদিন তাকে থেরাপি দেয়া হয়নি। ফলে ম্যাডামের ব্যথা আরও বেড়ে গেছে। আজকে বোধহয় থেরাপিস্ট যাচ্ছেন।’ ‘যিনি চলতে পারেন না, অসুস্থ, তাকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির করতে হবে এবং আবার কারাগারে নিয়ে আসতে হবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও জানান ফখরুল।

কূটনীতিকদের পরিস্থিতি

ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী / সংলাপে বিরোধ নিষ্পত্তি করুন, যুদ্ধকে 'না' বলুন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে বিরাজমান নির্বাচনী পরিবেশসহ সার্বিক অবস্থা কূটনীতিকদের অবহিত করেছে বিএনপি। সোমবার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, মরক্কো, সুইডেন, পাকিস্তান, তুরস্ক, স্পেন, ভিয়েতনাম, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াসহ ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস-চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, অ্যাডভোকেট ফাহিমা মুন্নি প্রমুখ।