মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
মিরপুর টেস্ট

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পর জয়ের আশায় বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:২৭
আট বছরের খড়া ঘুচিয়ে টেস্টে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন, বুধবার মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাওয়া সেই সেঞ্চুরি উদযাপনে তাই এমনই উৎফুল্ল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ Ñবিসিবি

দিনের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো, শেষটা উজ্জ্বল করল জয়ের স্বপ্ন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বহু প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরি পাওয়ার দিনে সফরকারী জিম্বাবুয়ের কঁাধে ৪৪৩ রানের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার পরও যে অস্বস্তি ভর করেছিল বাংলাদেশ শিবিরে, পরন্ত বিকেলে সেই অস্বস্তিটা দূর করলেন তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজ। জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তারা। ওই দুটো উইকেট হারিয়েই ৭৬ রান তুলে চতুথর্ দিন শেষ করেছে অতিথিরা, জয়ের জন্য আজ পঞ্চম এবং শেষ দিনে আরও ৩৬৭ রান করতে হবে তাদের। মিরপুর টেস্ট জিতে সিরিজ সমতায় শেষ করতে বাংলাদেশের লাগবে ৮টি উইকেট। শেষ দিনে ৩৬৭ রান, মিরপুরের উইকেটের চরিত্র বিবেচনায় প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য জিম্বাবুয়ের সামনে। অতিথিদের ব্যাটিংয়ের ধরনও বলছে, এই টেস্ট ড্র করাটাই এখন আসল লক্ষ্য তাদের। সেই লক্ষ্য পূরণ হলে বড় প্রাপ্তির আনন্দেই মাতবে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দল। কিন্তু টাইগাররা তাদের সেই আনন্দে মাততে দিতে চাইবে কেন? শেষ বিকেলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল বুঝিয়ে দিয়েছে, সব ধরনের প্রতিরোধ ভাঙার জন্য প্রস্তুত তারা। সকালে ধ্বংসস্ত‚প থেকে দলকে টেনে তুলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১০ রানে ৩ আর ২৫ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিতেই ঘুরে দঁাড়ায় বাংলাদেশ। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন মোহাম্মদ মিঠুনকে। অভিষিক্ত এই ব্যাটসম্যান পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। এর আগে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যথর্ হয়েছেন ইমরুল কায়েস আর লিটন দাস। তাদের সঙ্গে যোগ দেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হকও। সুবিধা করতে পারেননি ডাবল সেঞ্চুরি করে ইতিহাসগড়া মুশফিকুর রহিমও। এক লিটন ছাড়া বাকি তিনজনই আউট হয়েছেন বাজে শট খেলে। প্রতিপক্ষ বোলারদের উইকেট উপহার দিয়েছেন তারা। টপঅডার্র ব্যাটসম্যানদের ওভাবে আত্মহনন করতে দেখার পর এমন সমালোচনার জন্ম হলোÑ জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে বিপদ ঘাড়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। চওড়া ব্যাটে সেই সমালোচনা থামিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন অভিষিক্ত মিঠুন। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে এই ডানহাতি খেলেছেন ৬৭ রানের ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ-মিঠুনের জুটি হলো ১১৮ রানের। তাতেই শঙ্কা কাটিয়ে জিম্বাবুয়ের ঘাড়ে বড় রানের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত হয়ে যায়। মিঠুন ফেরার পর দ্রæত আরিফুল হকও বিদায় নেন, এরপর মিরাজকে নিয়ে দলের লিডটাকে জিম্বাবুয়ের ধরাছেঁায়ার বাইরে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। মিরাজের যোগ্য সাহচযের্ই এদিন সেঞ্চুরি পেয়েছেন টাইগার দলপতি। ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগের সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন এই ডানহাতি। মাহমুদউল্লাহ-মিরাজের অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে ৭৩ রান। মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি পূরণ হতেই ৬ উইকেটে ২২৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। তাতে দলের লিড দঁাড়ায় ৪৪২। তাতে মিরপুর টেস্টের সাম্ভাব্য ফল থেকে বাংলাদেশের পরাজয়ের শঙ্কাটা উড়ে যায়। কিন্তু জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করার জন্য শুরুতে যেমন বোলিং আশা করেছিল স্বাগতিকরা, সেটা হয়নি। জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার রাবণের ধৈযর্ নিয়ে পড়ে রইলেন উইকেটে, একের পর এক ওভার পার করে দিলেন। সময়টা বেশ অস্বস্তিকরই ছিল টাইগারদের জন্য। ৬৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বেশ দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার মাসাকাদজা আর ব্রায়ান চারি। সেই দুশ্চিন্তা দূর হওয়া শুরু মিরাজের বলে মুমিনুলকে ক্যাচ দিয়ে মাসাকাদজার (২৫) বিদায়ে। এরপর দলের খাতায় আর দুই রান যোগ হতেই বিদায় নেন চারি। ৪৩ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে লেগবিফোরের ফঁাদে ফেলেন তাইজুল। ব্রেন্ডন টেলর ৪ আর শন উইলিয়ামস ২ রানে অপরাজিত রয়েছেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর (চতুথর্ দিন শেষে) বাংলাদেশ: ৫২২/৭ ডি. এবং ৫৪ ওভারে ২২৪/৬ (লিটন ৬, ইমরুল ৩, মুমিনুল ১, মিঠুন ৬৭, মুশফিক ৭, মাহমুদউল্লাহ ১০১*, আরিফুল ৫, মিরাজ ২৭*; জাভির্স ২/২৭, তিরিপানো ২/৩১, উইলিয়ামস ১/৬৯, রাজা ১/৩৯) জিম্বাবুয়ে: ৩০৪ এবং ৩০ ওভারে ৭৬/২ (মাসাকাদজা ২৫, চারি ৪৩, টেলর ৪*, উইলিয়ামস ২*; তাইজুল ১/৩৪, মিরাজ ১/১৬)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে