শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ

যাযাদি রিপোটর্
  ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০৮
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর রায়েরবাজার বধ্যভ‚মি স্মৃতিসৌধে সবর্স্তরের মানুষের সঙ্গে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় এক শিশুও Ñযাযাদি

শোকে মুহ্যমান হৃদয় নিয়ে বেদনাবিধুর পরিবেশে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করল সবর্স্তরের মানুষ। জানাল বিনম্র শ্রদ্ধা, প্রাণঢালা ভালোবাসা। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের স্মরণে বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে কিছু সময় নীরবতা পালন করেন। এ সময় বিউগলের করুণ সুর বেজে ওঠে। শহীদদের সম্মানে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গাডর্ অব অনার প্রদান করে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানো শেষে সবর্স্তরের মানুষ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন। শ্রদ্ধা জানান শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরাও। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পাটির্, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পাটির্, গণফোরাম, ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলাঘর, জাসদ, বাসদ, মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সংগঠনসহ আরও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বেদনাঘন দিন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল পরাক্রমের সামনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তারা বেছে বেছে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দাশির্নক ও সংস্কৃতিক্ষেত্রের অগ্রগণ্য ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নিমর্মভাবে হত্যা করে। পাকিস্তানি ঘাতকদের এ ববর্র হত্যাকাÐে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছিল রাজাকার-আলবদর বাহিনী। বিজয় অজের্নর পর রায়েরবাজারের পরিত্যক্ত ইটখোলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে একে একে পাওয়া যায় হাত-পা-চোখ বঁাধা দেশের খ্যাতিমান এই বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ। সেই অপরাধে আন্তজাির্তক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত করে কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীকে ফঁাসিকাষ্ঠে ঝুলিয়েছে বাংলাদেশ। কলঙ্ক মোচনের পথে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ এখন গণহত্যার আন্তজাির্তক স্বীকৃতিরও দাবিদার। এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ডামাডোলে এবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হচ্ছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। ভোটের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসরদের রুখে দেয়ার আহŸান জানাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন। বিকেল ৩টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এতে সভাপতিত্ব করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপযর্ তুলে ধরে শুক্রবার বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে। সব জেলা ও উপজেলা পযাের্য় আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা অনুষ্ঠানের। শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে