বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বেচ্ছাচারিতা কী করে হলো প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

যাযাদি রিপোটর্
  ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:১০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তজাির্তক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন Ñফোকাস বাংলা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নিবার্চনী ইশতেহারে দেশে গত দশ বছরে ‘কল্পনাতীত স্বেচ্ছাচারিতার’ যে অভিযোগ করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে ঐক্যফ্রন্টের নিবার্চনী ইশতেহার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর বিকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দশ বছরে আমরা যে পরিবতর্নটা এনেছি, সেই পরিবতর্নটা অনেকের চোখে পড়ে না। যখন মানুষ ভালো থাকে, মানুষের ভাগ্য পরিবতর্ন হয়, তখন তারা বলে এটা নাকি স্বেচ্ছাচারিতা। স্বেচ্ছাচারিতা কী করে হলোÑ এটা আমার প্রশ্ন। কী দেখতে পেল তারা?’ ঐক্যফ্রন্টের শীষর্ নেতা কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে সোমবার ঢাকার হোটেল পূবার্ণীতে ৩৫ দফা প্রতিশ্রæতি রেখে নিবার্চনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়, যেখানে মতায় গেলে ‘রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া’, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চালিয়ে যাওয়ার মতো প্রতিশ্রæতিও এসেছে। বঙ্গবন্ধু আন্তজাির্তক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের নিবার্চনী ইশতেহারে দেখলাম, তারা ঘোষণা করেছে-স্বেচ্ছাচারিতাকে নাকি পরিবতর্ন করবে। ‘এ পরিবতর্ন কী জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, বাংলা ভাই সৃষ্টি, মানি লন্ডারিং, দুনীির্ততে চ্যাম্পিয়ন, আবার সন্ত্রাস, আবার ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা, আবার নিবার্চনের নামে প্রহসন, দেশের সমস্ত উন্নয়ন ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে সম্পূণর্ভাবে আবার অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়া? এই পরিবতর্ন তারা আনতে চান? ছিল তো ক্ষমতায়। ৪৭ বছর তো দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই ৪৭ বছরের মধ্যে ৩৯ বছর তো এরা ক্ষমতায় ছিল। কী দিয়েছিল মানুষকে? কী পেয়েছে মানুষ?’ মানুষ কিছু না পেলেও বিএনপি-জামায়াত জোটের ভাগ্যের পরিবতর্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের কথা শুনেছি, ভাঙা স্যুটকেস ছাড়া কিছুই নাই, তারা কত সম্পদের মালিক। সম্পদ শুধু দেশে নয়, দেশে আবার বিদেশে তাদের সম্পদের মালিকানার বিরাট হিসাব চলে আসছে। ঘুষ-দুনীির্ত করে তারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। ‘আর আমদের ওপর দুনীির্তর অভিযোগ যখন এনেছিল ওয়াল্ডর্ ব্যাংক, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি, ওয়াল্ডর্ ব্যাংক দুনীির্ত পায়নি। কানাডার ফেডারেল কোটর্ স্পষ্ট বলে দিয়েছিল, ওয়াল্ডর্ ব্যাংকের সব অভিযোগ ভুয়া, বানোয়াট, মিথ্যা। বাংলাদেশের কোনো মানুষের মাথা হেঁট হোকÑসেটা করি নাই কখনো। বরং বাংলাদেশের মানুষ বিদেশে গেলে সম্মান, মযার্দা পাচ্ছে, সেইটুকু করতে সক্ষম হয়েছি। তাহলে স্বেচ্ছাচারিতা কোথায়?’ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কী পরিবতর্ন করে ফেলবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা। ‘ওনারা কী পরিবতর্ন করে ফেলবে? আজকে যারা এক হয়েছে তারা কারা? একদিকে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, সে যুদ্ধাপরাধীরা কীভাবে নমিনেশন পায়, যারা বাংলাদেশই চায়নি। আমি আর কারো নাম নিতে চাই না। মনে হয়, যেন নামটাই নেওয়া উচিত না। ‘আমার তাদের জন্য করুণা হয়, কারণ তারা দিকভ্রষ্ট। তাদের আর কোনো নীতি নাই। নীতিভ্রষ্ট, আদশর্হীনরা কখনও মানুষকে কিছু দিতে পারে নাই এবং দিতেও পারবে না। আমি বলব এরা বাংলাদেশের আদশের্ বিশ্বাস করে না।’ টানা দুই মেয়াদ সরকারের নেতৃত্ব দেওয়া শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কী দুভার্গ্য, যারা জ্ঞানগভর্ ভাষণ দেন, যুক্তি দেখান, বুদ্ধি দেন, বড় বড় কথা বলে, আদশের্র বুলি আওড়ায়Ñআজকে তাদের সব ধরনের উচ্চবাচ্য কোথায় হারিয়ে গিয়ে হাত মিলিয়েছে খুনিদের সাথে, দুনীির্তবাজ অস্ত্র চোরাকারবারিদের সাথে। কীসের স্বাথের্ কেন- এটাই প্রশ্ন।’ বাংলাদেশকে কেউ আর পেছনে ফেলতে পারবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যচ্ছে। আর কেউ বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে পারবে না।’ দেশের জনগণ নৌকা মাকার্য় ভোট দেবে বলে বিশ্বাস শেখ হাসিনার। ‘৩০ ডিসেম্বর নিবার্চন। এই নিবার্চনে বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার আস্থা আছে। বিশ্বাস আছে, বাংলাদেশের জনগণ কখনও ভুল করে না। তাদের সাংবিধানিক অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সে সাহসও পাবে না। বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভোট দেবে সেটা আমি বিশ্বাস করি।’ আবার ক্ষমতায় এলে দারিদ্র্যের হার আরও ৫ থেকে ৬ শতাংশ কমিয়ে আনার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নেমে এসেছে। আগামী ৫ বছর ক্ষমতায় থাকলে দারিদ্র্য ৫-৬ ভাগে কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। সে জন্যই দেশের সেবা করার জন্য আমাদের সরকারে থাকা একান্ত প্রয়োজন।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে