শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্টের প্রতিশ্রুতি ‘ভূতের মুখে রাম নাম’: আ’লীগ

যাযাদি রিপোটর্
  ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০৯

ঐক্যফ্রন্টের নিবার্চনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলমান রাখা এবং দুনীির্তর রোধের যে অঙ্গীকার করা হয়েছে তাকে ‘জাতির সঙ্গে তামাশা’ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। সোমবার ঐক্যফ্রন্ট ইশতেহার ঘোষণার পর ধানমÐিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কাযার্লয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন, ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলমান রাখা এবং দুনীির্ত রোধ করার যে অঙ্গীকার এসেছে, আওয়ামী লীগ তা কীভাবে দেখছে। জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের উত্তসূরিদের নিয়ে তারা ধানের শীষ প্রতীকে নিবার্চন করছেন। আর যুদ্ধাপরাধীরা ঐক্যফ্রন্টের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই আছে। সুতরাং যুদ্ধাপরাধের বিচার তারা করবে এটা একটা হাস্যকর ব্যাপার, অবিশ্বাস্য।’ একাত্তরে বাংলাদেশের বিরোধিতায় যুদ্ধাপরাধে নেতৃত্ব দেয়া জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার আহŸনে কখনো সাড়া দেননি বিএনপি নেতারা। বরং উল্টো যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তারা সমালোচনাও করেছেন। সেই বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে গত অক্টোবরে সাবেক কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা একে ‘সাম্প্রদায়িক জোট’ আখ্যায়িত করেছিলেন। জোটের শীষের্নতা কামাল হোসেন সে সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে কোনো ‘বৃহত্তর ঐক্যে’ তিনি যাবেন না। কিন্তু নিবার্চনের আগে জোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের চেয়ে জামায়াতই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বিএনপি কাছে। নিবন্ধন হারানোয় জামায়াতের অন্তত ২২ জন প্রাথীর্ এবার ভোট করছেন বিএনপির মনোনয়নে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে। কামাল হোসেন নিজে নিবার্চন না করলেও তার দল গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিকরাও একই প্রতীকে ভোট করছেন এবার। সেই প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘যারা যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে মনোনয়ন পযর্ন্ত দিয়েছেন, তারা কী করে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে? এটা জনগণের সঙ্গে নেহায়েত প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না।’ জাতিকে ‘বিভ্রান্ত’ করে এই ইশতেহারের মাধ্যমে ঐক্যফ্রন্ট ভোটারদের সঙ্গে ‘তামাশা করছে’ বলে মন্তব্য করেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তারেক জিয়া দুনীির্তর দায়ে দÐিত, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন হাওয়া ভবন তৈরি করে দুনীির্তর আখড়া তৈরি করেছিলেন। তিনি (খালেদা জিয়া) নিজে দুনীির্তর দায়ে দÐিত। তাদের মুখে দুনীির্তমুক্ত সমাজ গড়ার কথা ভ‚তের মুখে রাম নাম।’ ঐক্যফ্রন্টের প্রতিশ্রæতিকে ‘রাজনৈতিক অপকৌশলের ইশতেহার’ হিসেবে বণর্না করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘দেশের মানুষ কোনোভাবেই বিশ্বাস করে না যে, তারা দুনীির্ত দূর করবে, এটা ভোটের রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করার জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপকৌশল মাত্র।’ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রাথীের্দর ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নিবার্চন নিয়ে কামাল হোসেন যে সংশয় প্রকাশ করেছেন, তার পেছনেও চক্রান্ত দেখতে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা নিজেরাই ঘটিয়েছে, তাদের মনোনয়ন বাণিজ্যে বিক্ষুব্ধ নেতা-কমীর্রা বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। আর তারা এর দায়ভার, দোষ আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে নিবার্চন বানচালের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’ আব্দুর রহমান বলেন, ‘এই নিবার্চন বানচালের জন্য নানা চক্রান্তের জাল বুনছে তারা। যারা নিবার্চন বানচালের চক্রান্তে আছেন তাদের হুশিয়ার করতে চাই, যে কোনো মূল্যে আগামী ৩০ ডিসেম্বর নিবার্চন হবে।’ অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে