শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী

যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া চ‚ড়ান্ত পযাের্য়

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনি কাঠামো তৈরির কাজ শেষ পযাের্য় রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন-বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কাজ গত বছর থেকেই শুরু হয়েছে। এখন এটা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর উদ্যোগ নেয়া হলে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করারও দাবি ওঠে সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে।

তাতে সমথর্ন দিয়ে সরকারের মন্ত্রীরা এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রæতি দিয়ে এলেও এখন পযর্ন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি।

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি ধমির্ভত্তিক দল। রাজাকার, আলবদর, আলশামস নামে বিভিন্ন দল গঠন করে তারা ধষর্ণ, অপহরণ, নিযার্তন, অগ্নিসংযোগ, ধমার্ন্তরে বাধ্য করার মত যুদ্ধাপরাধ ঘটায় সারা দেশে। সে সময় সাধারণ মানুষের ধনসম্পদও লুট করা হয়।

সেসব যুদ্ধাপরাধের দায়ে সবোর্চ্চ আদালতে এ পযর্ন্ত জামায়াতের সাত শীষর্ নেতা এবং বিএনপির একজনের সাজা হয়েছে, তাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদÐ কাযর্কর করা হয়েছে। আরও অনেকের ফঁাসির রায় আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায়ের পযের্বক্ষণে আন্তজাির্তক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বলেছে, ‘সাধারণ জ্ঞান ও দালিলিক প্রমাণাদি থেকে এটা স্পষ্ট যে, জামায়াত ও এর অধীনস্ত সংগঠনের প্রায় সবাই সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছেন। গোলাম আযমের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী একটি ক্রিমিনাল দল হিসাবে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করেছে, বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকালে।’

যুদ্ধাপরাধীদের সবোর্চ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন গড়ে উঠলে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবিও জোরালো হয়ে ওঠে।

সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খানও ২০১৫ সালে এক অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধে দÐপ্রাপ্তদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবিতে সমথর্ন দেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ওই বছরই আরেক অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য কোনো আইন নেই। সেজন্য সরকার আইন প্রণয়ন করবে।

পরের বছর এপ্রিলে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের সরকারি চাকরি করার এবং ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হবে।

এরপর ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর খুনি ও দÐিত যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার একটি প্রস্তাব জাতীয় সংসদে তোলা হলে তা সবর্সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সেদিন সংসদে বলেন, যাদের ফঁাসি কাযর্কর হয়েছে, তাদের সম্পত্তি ওয়ারিশের হাতে চলে যাওয়ায় আইনের মাধ্যমে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে সময় লাগবে। তবে যারা পলাতক রয়েছে, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে ‘কোনো অসুবিধা নেই’।

তবে এরপর প্রায় আড়াই বছর হয়ে গেলেও সেই আইন এখনও মন্ত্রিসভায় ওঠেনি।

৩০ ডিসেম্বরের নিবার্চনে জিতে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আনিসুল হকের হাতেই রেখেছেন।

কসবায় একটি সংবধর্না অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার ট্রেনে করে ঢাকা থেকে আখাউড়ায় আসেন তিনি। সেখান থেকে সড়ক পথে যান কসবায়।

এ সময় সড়কের পাশে দঁাড়িয়ে থাকা শিক্ষাথীর্রা মন্ত্রীর হাতে কাগজের নৌকা তুলে দেয়। পাশাপাশি ফুল ছিটিয়ে তাকে বরণ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<32695 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1