শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
গ্রেডিং পদ্ধতি চালু হবে

সবুজ হলে রেস্তোরঁার মান ভালো, কমলা অনিরাপদ

খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরঁার মান নিধার্রণ করা হবে
যাযাদি রিপোটর্
  ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
ভোক্তা ও ভোজনরসিকদের স্বাথের্ চার ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকা মহানগরীর সব হোটেল ও রেস্তোরঁাকে Ñছবি সংগ্রহ

রেস্তোরঁায় সবুজ স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে এখানকার মান এ+ (এ প্লাস) অথার্ৎ উত্তম। মান খারাপ হলে থাকবে কমলা রংয়ের স্টিকার। এই রংয়ের স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে এটি অনিরাপদ। কমলা স্টিকারযুক্তরা এক মাসের মধ্যে রেস্তোরঁার মান ভালো না করলে বাতিল হবে তাদের লাইসেন্স।

ভোক্তা ও ভোজনরসিকদের স্বাথের্ ‘এ+’, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই চার ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকা মহানগরীর সব হোটেল ও রেস্তোরঁাকে।

রোববার রাজধানীর পল্টনের ফারস হোটেলে এই গ্রেডিং কাযর্ক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার।

গ্রেডিং সিস্টেমের আওতায় খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখা যাওয়ার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরঁাগুলোকে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হবে। এসব বিচারে ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর হলে সবুজ বণের্র স্টিকার ‘এ+’, স্কোর ৮০ এর ঊধ্বের্ হলে নীল বণের্র স্টিকার বা ‘এ’; ৫৫ থেকে ৭৯ পযর্ন্ত স্কোর হলে হলুদ বণের্র ‘বি’ এবং ৪৫ থেকে ৫৫ স্কোর হলে কমলা বণের্র ‘সি’ ক্যাটাগরি পাবে। ‘এ+’ এর মানে হচ্ছে রেস্তোরঁাটি উত্তম, এ মানে ভালো, ‘বি’ মানে গড়পড়তা ভালো এবং ‘সি’ মানে গ্রেড পেন্ডিং।

যারা খাবার খেতে যাবেন- তারা রেস্তোরঁায় প্রবেশের সময় স্টিকার দেখেই জেনে নিতে পারবেন, এখানকার ভেতরের পরিবেশ পরিস্থিতি কেমন, কিচেনের অভ্যন্তরে কী ধরনের দূষণ বা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রয়েছে।

সবুজ রং আর নীল স্টিকারযুক্ত রেস্তোরঁার মান নিয়ে ক্রেতাদের কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না। কিন্তু হলুদ স্টিকারধারী রেস্তোরঁাকে আপাতত তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে তাদের মান ও গ্রেড উন্নতির জন্য। একইভাবে কমলা বণের্র রেস্তোরঁাকে গ্রেডিং বাড়ানোর জন্য এক মাস সময় দেয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা না হলে হোটেল-রেস্তোরঁার লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

২০১৮ সালের এপ্রিলের ২ তারিখে কস্তুরী হোটেলে স্টিকার লাগিয়ে এই কাযর্ক্রমের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃর্পক্ষ। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও সচিবালয় এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এসব এলাকার মোট ১৮টি ‘এ+’ এবং ৩৯টি ‘এ’ গ্রেডের স্টিকার দেয়া হবে।

এ সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার বলেন, অনেকে এসএসসি-এইচএসসিতে ‘এ’ প্লাস পেয়ে থাকে। কিন্তু তারা কি সেটা শেষপযর্ন্ত ধরে রাখতে পারে? ছোটকালে কেউ চিন্তা করে ডাক্তার হবে, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু বড় হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। তেমনি আপনাদের যারা ‘এ+’ প্লাস ও ‘এ’ গ্রেড পেলেন আমরা আশাকরি সরকারের দেয়া এই স্বীকৃতিটুকু ধরে রাখবেন। রেস্তোরঁার ভালো মান বজায় রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আমরা একাত্তরে জীবনত্যাগ করেছি, এখন যদি ব্যবসায়িক লোভ ত্যাগ না করতে পারি তাহলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেকটাই কঠিন হবে।’

ভালো গ্রেডপ্রাপ্তদের উদ্দেশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আপনাদের এই স্বীকৃতি সরকারি স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে আপনাদের ব্যবসা ও লাভ আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যাবে। আশা করি আপনারা সঠিকভাবে ব্যবসা করবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ভালো গ্রেডপ্রাপ্তদের মধ্যে পঁাচ থেকে ১০ শতাংশ রেস্তোরঁার মান যে কমবে না এটা কেউ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে না। তাই আমি নিরাপদ খাদ্য কতৃর্পক্ষকে নিয়মিত মনিটরিংয়ের অনুরোধ জানাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও বতর্মান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কাজই ছিল নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা করা। সেই লক্ষ্যে উন্নতবিশ্বের মতো আমরা এই গ্রেডিং সিস্টেম চালু করেছি। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে আমিও এই কাযর্ক্রমের সঙ্গে জড়িত। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা অনেক মোবাইল কোটর্ করে ভয়ভীতি প্রদশর্ন করেছি। কিন্তু চূড়ান্তভাবে সমস্যার সমাধান হয়নি। এই গ্রেডিং পদ্ধতি ছিল চূড়ান্ত সমাধান। বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অবশ্যই ফলপ্রসূ হবে বলে আমি আশা করছি।’

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, ‘এটি একটি আন্তজাির্তক মানসম্মত গ্রেডিং পদ্ধতি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। রেস্তোরঁা মালিকরা বারবার মোবাইল কোটর্ কাযর্ক্রমে জরিমানা দেয়ার ফলে আমাদের কাছে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন। আমরা তাদের জন্য এই সিস্টেম এনেছি। এতে রেস্তোরঁা মালিকরাও খুশি হয়েছেন। ভবিষ্যতে দেশব্যাপী রেস্তোরঁাগুলোকে এই গ্রেডিংয়ের আওতায় আনা হবে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<33177 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1