মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তামিমের কুমিল্লার কাছেই বিপিএলের শিরোপা

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:৫৪
শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর শিরোপা হাতে এভাবেই উচ্ছ্বাসে মাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স শিবির -বিসিবি
পারল না ঢাকা ডায়নামাইটস। এক তামিম ইকবালের কাছেই হেরে গেল তারা। দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা উঁচিয়ে ধরার যে স্বপ্নটা দেখেছিলেন সাকিব আল হাসান, প্রিয় বন্ধু তামিমের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে অপূর্ণই থাকল সেই স্বপ্ন। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকাকে ১৭ রানে হারিয়ে শিরোপার উৎসব করল তামিম-ইমরুল কায়েসদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
দ্বিতীয়বার বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তামিম শিরোপার স্বাদ পেলেন প্রথমবার। যে জয়ে তার কৃতিত্বই থাকল সব থেকে বেশি। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ভীত গড়ে দিয়েছিলেন তিনিই। কুমিল্লাকে এনে দিয়েছিলেন ১৯৯ রানের বড় পুঁজি। শুরুটা ভালো না হলেও সেই পুঁজিটাকেই ঢাকার ব্যাটসম্যানদের সামনে অনতিক্রম্য করে তুলেন কুমিল্লার বোলাররা। রনি তালুকদার-উপুল থারাঙ্গাদের স্বপ্নজাগানীয়া ব্যাটিংয়ের পর ঢাকার ইনিংস থামে ১৮২ রানে।
৬১ বলে ১০টি চার আর ১১টি ছক্কায় ১৪১ রানে অপরাজিত রইলেন তামিম। বিপিএলে যেটা বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ সাব্বির রহমানের ১২২ টপকে যেভাবে এগোচ্ছিলেন তাতে ক্রিস গেইলের সর্বোচ্চ ১৪৬* রানটাও পেছনে ফেলবেন, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকলেও বিপিএলে নিজের প্রথম ফাইনালটাকে দারুণভাবেই রাঙালেন দেশসেরা ওপেনার।
অথচ ২৪ রানেই থেমে যেতে পারতেন তামিম। কাজী অনিকের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন, নুরুল হাসান সোহান সেটি গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি। ম্যাচের পরবর্তী সময়ে ওই না পারারই মাশুল দিয়ে গেছে ঢাকা। জীবন পেয়ে এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েছে ৮৯ রানের জুটি। এক রানের ব্যবধানে এনামুল (২৪) আর শামসুর রহমান শুভ (০) বিদায় নেয়ার পর দলপতি ইমরুলকে কাটায় কাটায় ১০০ রানের জুটিতে কুমিল্লাকে পৌঁছে দেন রানের চূড়ায়।
জুটিতে ইমরুলের অবদান মাত্র ১৭ রান। ২১ বল খেলে একটি ছক্কায় ওই রান করেছেন তিনি। দলের পক্ষে দ্বিতীয় ২৪ রান করতে এনামুল খেলেছেন ৩০ বল। ওপেনার এভিন লুইস ৭ বলে করেছেন ৬ রান। চার ব্যাটসম্যান ৫৯ বল মোকাবেলা করে কুমিল্লার ঝুলিতে যোগ করেছেন মোটে ৪৭ রান, ৬১ বল খেলা তামিম ১৪১! চ্যাম্পিয়নদের ইনিংসটা রীতিমতো ওয়ানম্যান শো হয়ে রইল।
ওয়ানম্যান তামিম শো’তেই কুমিল্লার স্বপ্নের জাল বুনা শুরু। স্বপ্নটা আরও রঙিন হয় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সুনিল নারিনের রানআউটে। কিন্তু এরপর আরেক ওপেনার থারাঙ্গাকে সঙ্গী করে রীতিমতো তা-ব শুরু করেন রনি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান আর ওয়াহাব রিয়াজরা বনে গেলেন পাড়া-মহল্লার বোলার। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই ঢাকার ঝুলিতে জমা ৭১ রান, ২০০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় এমন শুরুই চেয়েছিল ঢাকা।
দলের খাতায় কোনো রান জমা হওয়ার আগেই ধাক্কা খাওয়া ঢাকাকে ১০২ রানের দুর্দান্ত এক জুটিতে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন রনি আর থারাঙ্গা। কিন্তু জুটি ভাঙতেই আবার ছন্দ হারায় দলটি। স্বদেশি থিসারা পেরেরার শিকার হওয়ার আগে লংকান ওপেনার থারাঙ্গা ২৭ বলে ৪টি চার আর ৩টি ছক্কায় করেন ৪৮ রান। এরপর দ্রুত বিদায় নেন দলপতি সাকিব (৩)। ২৬ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেয়া রনি হাল ছেড়ে দেন।
দল আর সময়ের দাবি মিটিয়ে খেলে যাওয়া রনি ৬টি চার আর ৪টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৬৬ রান করার পর নিজের বিপদ নিজেই ডাকলেন। রানআউটের খড়গে কাটা পড়লেন। ১৯ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচটাকে কঠিন করে তুলে ঢাকা। এরপর দুই ক্যারিবিয়ান কায়রন পোলার্ড (১৩) আর আন্দ্রে রাসেল (৪) দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। ১৩২ রানের মাথায় রাসেল পেরেরার শিকার, ১৪১ রানে পোলার্ড ওয়াহাবের।
উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচটা মুলত ওখানেই হেলে পড়ে কুমিল্লার দিকে। নুরুল হাসান সোহান (১৮) আর মাহমুদুল হাসান (১৫) শেষদিকে আশা দেখিয়েছিলেন। তবে শেষ তিন ওভারে ৪৮ রানের জয়ের সমীকরণ মেলাতে পারেননি।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে