বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ঠাকুরগাঁওয়ে গরু নিয়ে সংঘর্ষ

বিজিবির গুলিতে নিহত ৩

নিহত ব্যক্তিরা হলেন হরিপুর উপজেলার রুহিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব উদ্দিন (৩৫), একই গ্রামের জহিরউদ্দিনের ছেলে সাদেক (৪৫) ও বহরমপুর গ্রামের নূরল ইসলামের ছেলে জয়নুল (১২)
যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:২৪
ঠাকুরগঁাওয়ের হরিপুর উপজেলায় বডার্র গাডর্ বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘষের্র পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের তৎপরতা Ñযাযাদি

ঠাকুরগঁাওয়ের হরিপুর উপজেলায় বডার্র গাডর্ বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘষের্ গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত ২০ জন আহত হন। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বেতনা সীমান্ত এলাকার বহরমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিজিবির দাবি, নিহতরা গরু চোরাচালানকারী দলের সদস্য। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হরিপুর উপজেলার রুহিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব উদ্দিন (৩৫), একই গ্রামের জহিরউদ্দিনের ছেলে সাদেক (৪৫) ও বহরমপুর গ্রামের নূরল ইসলামের ছেলে জয়নুল (১২)। গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার হরিপুর উপজেলার যাদুরানী হাট বসে। হাটটি গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ। স্থানীয় বহরমপুর গ্রামের হবিবর রহমানসহ কয়েকজন গ্রামবাসী ওই হাটে বিক্রির জন্য গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় বিজিবির বেতনা ক্যাম্পের সদস্যরা গরুগুলো ভারত থেকে চোরাচালান করে আনা দাবি করে সেগুলো জব্দ করেন। এ নিয়ে বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে গ্রামবাসীর বাগ্বিতÐা হয়। একপযাের্য় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘষর্ বেধে যায়। সংঘষের্র একপযাের্য় বিজিবি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে ঠাকুরগঁাও ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কনের্ল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদের ভাষ্য, চোরাচালান করা চারটি গরু জব্দ করে বিজিবির সদস্যরা যখন ক্যাম্পের দিকে ফিরছিলেন, তখন চোরাকারবারিরা তাদের ওপর হামলা চালায়। বিজিবির সদস্যরা আত্মরক্ষাথের্ গুলি চালাতে বাধ্য হন। হতাহত ব্যক্তিরা সবাই গরু চোরাচালানকারী দলের সদস্য বলে তিনি দাবি করেন। বহরমপুর গ্রামের গরু ব্যবসায়ী হবিবর রহমানের দাবি, তিনি সপ্তাহ দুয়েক আগে স্থানীয় নেকমরদহাট থেকে নিলামের মাধ্যমে দুটি গরু কিনেছিলেন। গরু কেনার পক্ষে তার কাগজপত্রও আছে। গুলিবিদ্ধ অন্য লোকজনকে উদ্ধার করে প্রথমে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কমর্কতার্ আব্দুস সামাদ বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুলিবিদ্ধ ১৪ জনকে দিনাজপুর ও রংপুরে পাঠানো হয়। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১৩ জন দিনাজপুর আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হরিপুর উপজেলা নিবার্হী কমর্কতার্ (ইউএনও) এম জে আরিফ বেগ বিজিবির গুলিতে হতাহতের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিকে গুলিতে হতাহতের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম দুপুরে বহরমপুর গ্রামে যান। ঘটনাস্থলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘চোরাই গরু ঢুকেছে সন্দেহে বিজিবি অভিযান চালায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি গরু জব্দ করে। তখন গ্রামবাসীর সঙ্গে বিজিবির সংঘষর্ বাধে এবং গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।’ এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ হরিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমর্কতার্ (ওসি) আমিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে