শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কেমিক্যালে ঠাঁসা সেই ভবনের বেজমেন্ট

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
ওয়াহেদ ম্যানশনের আন্ডারগ্রাউন্ডে বিভিন্ন কেমিক্যালের ড্রামের গুদাম

পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকান্ডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে 'ওয়াহেদ ম্যানশন'। আগুনে ভবনের চারতলার পুরোটাই পুড়েছে। খসে পড়েছে পলেস্তারা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় বিভিন্ন কেমিক্যালের গোডাউন থাকায় এ আগুন উপরের দিকে এবং আশপাশে দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে। ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনা। তবে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের তৎপরতায় আগুন ছড়ায়নি ভবনের বেজমেন্টে। সাধারণত যে কোনো ভবনের বেজমেন্ট ব্যবহৃত হয় পার্কিংয়ের জন্য। তবে 'সর্বনাশা' ওয়াহেদ ম্যানশনের আন্ডারগ্রাউন্ড ভর্তি বিভিন্ন কেমিক্যালের ড্রামে। যদি সেখানে কোনোভাবে আগুন ছড়িয়ে যেত তাহলে পরিণতি কতোটা ভয়াবহ হতো বিষয়টি ধারণার বাইরে সংশ্লিষ্টদের। শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির পার্কিং পেস্নসে বিভিন্ন ধরের লিকু্যইড ভর্তি ড্রামের সারি। বস্তাভরে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন কেমিক্যাল। অর্থাৎ পার্কিং স্পটের পুরোটাই ঠাসা বিভিন্ন কেমিক্যালে। স্থানীয়রা জানান, এ গোডাউনের মালিকের কোটি কোটি টাকার কেমিক্যাল ব্যবসা। প্রায়ই কনটেইনার ভর্তি কেমিক্যাল এনে গোডাউনে তোলেন। অগ্নিকান্ডের দু'দিন আগেও বিপুল পরিমাণ (প্রায় সাত ট্রাক) কেমিক্যাল গোডাউনে নিয়ে এসেছেন। তবে সেই গোডাউনের মালিকের বিস্তারিত পরিচয় তুলে ধরতে পারেননি তারা। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় আগুনটা আন্ডারগ্রাউন্ডে যেতে পারেনি। যদি সেখানে আগুন যেত বিশাল বড় বিস্ফোরণে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতো তা ধারণার বাইরে। বাংলাদেশ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক শামসুল আলম জানান, নিমতলী অগ্নিকান্ডের পর থেকে ওই এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসার জন্য একটি লাইসেন্সও দেয়া হয়নি। ওই এলাকায় বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্সধারী কোনো গুদামও নেই। যে ভবনটিতে আগুন লেগেছিল সেটিতেও রাসায়নিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ রাখার অনুমতি ছিল না। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইব্রাহিম খান বলেন, 'আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করব। যেহেতু তদন্ত হয়নি, তাই অজ্ঞাতনামার নাম উলেস্নখ করে মামলা হয়েছে। কোর্টের বিচারের স্বার্থে দ্রম্নত তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।' বুধবার রাতের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৭৮ জন পুড়ে মারা যায়। চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানশনে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। আবাসিক ভবনটিতে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় আগুন দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে