শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হোটেল বিলই ১৫০ কোটি টাকা

রোহিঙ্গা দেখভালে এনজিও কর্মকর্তাদের পেছনে বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ খরচ
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৪ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
কক্সবাজারের টেকনাফে একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ত্রাণের অপেক্ষায় শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে আছেন এক মা -ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বিদেশি এনজিওগুলোর বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই বাংলাদেশে আসা তাদের কর্মীদের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বর থেকে এই ছয় মাসেই এনজিওগুলোর কর্মকর্তাদের হোটেল বিল বাবদ খরচ করা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। আর তাদের জন্য ফ্ল্যাট ভাড়ায় ব্যয় হয়েছে আট কোটি টাকা।

মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমনাভিযানের মুখে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থাও দেশ সাড়া দিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন বিদেশি এনজিও কাজ করছে।

বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় এসব এনজিও'র অনেকগুলোর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আমরা লক্ষ্য করেছি সেখানে কিছু এনজিও আছে, ধারণা করা হচ্ছে অনেক এনজিওই, আমাদের গোয়েন্দা রিপোর্টেও সেগুলো লক্ষ্য করছি 'ইল মোটিভ' নিয়ে কাজ করে।

আপনারা শুনলে অবাক হবেন সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত হোটেল বিল দিয়েছে দেড়শ কোটির বেশি টাকা, আর ফ্ল্যাট-বাড়ির ভাড়া দিয়েছে আট কোটি টাকার বেশি।

তিনি বলেন, এনজিওগুলো বিদেশ থেকে যে টাকা আনে সেটা যারা ভুক্তভোগী অর্থাৎ রোহিঙ্গা তাদের জন্য 'পঁচিশ শতাংশও' খরচ হয় না। ৭৫ শতাংশ খরচ করা হয় দেখাশুনা করার জন্য যারা আসে, উনাদের জন্য।

এ বিষয়টি খুবই দুঃখজনক মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, এটা আরও খতিয়ে দেখার জন্য গোয়েন্দা বাহিনীকে বলেছি বাস্তব অবস্থা কী তা বের করতে। যে অভিযোগ পেয়েছি তা যথাযথ নিরূপণের জন্য তাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের দ্রম্নত ভাসানচরে স্থানান্তরে সরকারের 'সর্বোচ্চ চেষ্টা' রয়েছে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।

ওই চরে রোহিঙ্গাদের নেয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, সরকারের দায়িত্ব কী? সরকারের দায়িত্ব তাদের (রোহিঙ্গা) আমাদের আশ্রয় দেয়া, তাদের নিরাপত্তা দেয়া, খাবার দেয়াসহ অন্যান্য মানবিক দিকগুলো দেখা।

তাদের কোথায় রাখব এটা বিদেশের কনসার্নড হওয়ার কথা নয়। তাদের কনসার্নড হওয়ার বিষয় তারা (রোহিঙ্গা) যেন মানবেতর জীবনযাপন যাতে না করে, লেখাপড়ার, চিকিৎসার সুযোগ আছে কি না?

এ বিষয়ে তারা কনসার্নড থাকলে সরকার বিবেচনায় নেবে। কিন্তু কোথায় থাকবে সেটা বাংলাদেশর নিজস্ব ব্যাপার।

আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর শুরু হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। সেখানে আমাদের প্রস্তুতিও সম্পন্ন।

নেয়ার মতো উপযোগী ব্যবস্থাসম্পন্ন হয়েছে। কাজেই যে কোনো সময় আমরা নিতে পারি।

সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<40897 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1