শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই পর্দা ফরজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৭ মে ২০১৯, ০০:০০

শুধু নারীই নয়, ইসলামে পুরুষের জন্যও পর্দা পালন ফরজ করা হয়েছে। পর্দা পালন করা মুসলিম নারীর অনন্য রুচিবোধ ও সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ। পর্দা পুরুষের উন্নত চরিত্র গঠনের মাধ্যম; পাশাপাশি নারীর মানসম্মান, ইজ্জত-আবরুর রক্ষাকবচও বটে।

আলস্নাহতায়ালা নারী ও পুরুষদের প্রতি পর্দা পালনের বিষয়টি কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন। আলস্নাহতায়ালা বলেন, '(হে নবী, আপনি) মুমিন (পুরুষদের) বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নিচু করে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, এটা তাদের জন্য অধিকতর পবিত্র। তারা যা কিছু করে আলস্নাহ সে বিষয়ে অবগত।

এবং (হে নবী, আপনি) ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নিচু রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তাছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত দাসি, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ তারা ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আলস্নাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।' (সুরা নূর : আয়াত ৩০-৩১)

আলস্নাহ্‌?তায়ালা আরো বলেছেন, 'হে নবী, আপনি আপনার স্ত্রীগণ ও কন্যাদের এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না।' (সূরা আহযাব : ৫৯)

কুরআনুল করিমের অন্যত্র বলা হয়েছে, হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া আর কারো ঘরে প্রবেশ করো না যতক্ষণ তোমরা তোমাদের সম্পর্কে পরিচিতি করিয়ে না নেবে এবং ঘরের লোকদের প্রতি সালাম না পাঠাবে। এ নীতি অনুসরণ করা তোমাদের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর। সম্ভবত তোমরা এ উপদেশ গ্রহণ করে তদানুযায়ী কাজ করবে। (সুরা-আন নূর, আয়াত-২৭) যদি সেখানে কোনো পুরুষ ব্যক্তি না থাকে এবং জরুরি ভিত্তিতে সে বাড়ি থেকে কিছু সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয়, তবে তার বিধানও দয়াময় আলস্নাহ্‌ দিয়েছেন।

এরশাদ হচ্ছে : যখন তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইবে, পর্দার আড়াল থেকেই চাইবে। (সত্যি কথা বলতে কি) তোমাদের ও তাদের দিলের পবিত্রতা রক্ষার জন্য এটাই উত্তম পন্থা। (সূরা আল আহযাব, আয়াত-৫৩)।

সর্বশক্তিমান আলস্নাহ্‌? বলেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যারাই আমার আয়াতসমূহকে অবজ্ঞা করবে, আমি তাদের জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আমি সেখানে নতুন চামড়া দিব, যাতে তারা আজাব পূর্ণভাবে আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আলস্নাহ মহাপরাক্রমশালী, মহাজ্ঞানী। (সূরা আন নিসাঃ ৫৬)

নারী এবং পুরুষের পর্দার স্বরূপ কেমন হবে হাদিসে পাকে রাসূলুলস্নাহ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নামের একটি হাদিসেই প্রমাণ পাওয়া যায়। বিশ্বনবী সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নামের অন্ধ সাহাবি আবদুলস্নাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়ালস্নাহু আনহুর আগমনে প্রিয় নবীর নসিহতটি সবার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

হজরত উম্মে সালমা রাদিয়ালস্নাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আমি ও মায়মুনা (রাদিয়ালস্নাহু আনহা) রাসূলুলস্নাহ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নামের দরবারে ছিলাম। এমতাবস্থায় (দৃষ্টিহীন সাহাবি) আবদুলস্নাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়ালস্নাহু আনহু রাসুলুলস্নাহ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নামের দরবারে আগমন করলেন। তখন রাসূলুলস্নাহ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম বললেন, তোমরা পর্দার অন্তরালে চলে যাও।

আমি বললাম, হে আলস্নাহর রাসূল! ইনি (আবদুলস্নাহ ইবনে উম্মে মাকতুম) কি দৃষ্টিহীন নন? ইনি তো আমাদের দেখছেন না। জবাবে আলস্নাহর রাসূল বললেন, তোমরা কি তাকে দেখছো না? (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি, মিশকাত)

উলেস্নখিত হাদিস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে জানা যায়, কোনো নারী পর্দার ভেতরে থেকে কোনো পুরুষকে দেখাও বৈধ নয়। পুরুষের জন্য যেমন নারীদের সঙ্গে অবাধ দেখা-সাক্ষাৎ বৈধ নয়; ঠিক তেমনি নারীদের জন্য পুরুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ বৈধ নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<49821 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1