শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাগনের খোঁজে নিজেই তদন্তে নামবেন সোহেল তাজ

নতুনধারা
  ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৯ জুন ২০১৯, ০০:২৮

যাযাদি রিপোর্ট

সংবাদ সম্মেলন করেও সুফল না পেয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ নিজেই নিখোঁজ ভাগনে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভকে খুঁজে বের করার ঘোষণা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকালে ফেসবুক লাইভে আসেন তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। নিয়মিত তদন্তের বিষয়ে তিনি লাইভ করার কথাও জানান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সোহেল তাজ বলেন, তদন্তের প্রথম ধাপ হিসেবে তিনি যেখান থেকে তার ভাগনে সৌরভ অপহৃত হয়েছেন, সেখানে যাবেন এবং প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের বিবৃতি নেবেন।

তিনি বলেন, ইফতেখার শুধু তার আত্মীয় নয়, সে এই দেশের ছেলে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে বিচারের মাধ্যমে সাজা হওয়াই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। তিনি নিজে এই শিক্ষা নিয়েই বড় হয়েছেন।

ফেসবুক লাইভের শুরুতে সোহেল তাজ বলেন, 'ফেসবুকে এটাই হচ্ছে আমার প্রথম লাইভ ব্রডকাস্ট। ... আপনারা সবাই জানেন আমার মামাতো বোনের ছেলে সৌরভ গত নয় দিন ধরে নিখোঁজ। তো আমরা সার্বিকভাবে সৌরভকে (ইফতেখার) অক্ষত অবস্থায়, জীবিত অবস্থায়, সুস্থ অবস্থায় ফেরত চাই। তার বাবা আমার সঙ্গেই আছেন। আমার বাসায়। তো আমার পেছনে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমার মায়ের ছবি। এ বাসাতেই আমি এখন ভাড়া থাকি। কারণ বাংলাদেশে আমি অনেক সময় দিচ্ছি, কয়েকটা প্রজেক্ট করছি। কিছু ভালো কাজ করার জন্য। সেটা আগে আপনাদের জানিয়েছি। এ রকম একটা কাজের মাঝখানে এমন একটা দুর্ঘটনার সম্মুখীন আমরা হয়েছি। আমি নিজেই তদন্ত করব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করব। আমরা যতটুকু তথ্য সংগ্রহ করতে পারি, ততটুকু সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করব। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করব।'

এদিকে সচিবালয়ে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, 'সৌরভকে (ইফতেখার) উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। তিনি উদ্ধার হয়ে যাবেন।' সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার মধ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এর আগে সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন সোহেল তাজ। তার সঙ্গে ছিলেন ইফতেখারের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ও বাবা মো. ইদ্রিস আলী। সংবাদ সম্মেলনে তারা ছেলের দু'দফা গুম হয়ে যাওয়ার বিবরণ দিতে গিয়ের্ যাব-১, বনানী থানার পুলিশ ও দুটি গোয়েন্দা সংস্থার সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, যারা প্রথম দফায় গত ১৬ মে বনানী থেকে ইফতেখারকে তুুলে নিয়ে গিয়েছিল, তারাই ফোন করে চট্টগ্রামে মিমি সুপার মার্কেটের আগোরার সামনে থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

ফেসবুক লাইভে আজ সোহেল তাজের বোন ও বোনের স্বামী, মামাতো বোন ও বোনের স্বামী উপস্থিত ছিলেন। সোহেল তাজ বলেন, ইফতেখারকে ফোন ট্র্যাক করে শনাক্ত করা হয়েছিল। 'এলিট ফোর্স' ছাড়া কারও কাছে প্রযুক্তির এই সুবিধা নেই। তার মামাতো বোন ও বোনের স্বামী সোহেল তাজের নানা প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংবাদ সম্মেলনের পরও পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। উল্টো পাঁচলাইশ থানার পুলিশ জানতে চেয়েছে তারা কোনো খোঁজখবর পেয়েছেন কি না। তারা বলেন, গত ১৬ মে বনানীর বাসা থেকের্ যাব পরিচয়ে ইফতেখারকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন একদল লোক। এক দিন পর তাকে তারা বাসায় নামিয়ে দিয়ে যান। এ সময় 'সৌরভকে অক্ষত অবস্থায় বুঝে পেলাম' ধরনের বক্তব্য লেখা একটি কাগজে বনানীর ওই বাসার সদস্যদের স্বাক্ষর নেয়া হয়। যারা বনানী থেকে প্রথমে তুলে নিয়ে যান তারাই ৯ জুন ফোন করে ইফতেখারকে ডেকে নিয়ে যান। ইফতেখারকে যখন প্রথম দফায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তারা আবার যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। ইফতেখার বলেছিলেন, তার চোখ বাঁধা। তিনি কীভাবে চিনবেন কে ডাকছেন। জবাবে তারা বলেন, জিন জিন করে জপতে থাকলেই তারা চলে আসবেন। অপহৃত অবস্থায় যারা কথা বলেছেন, তাদের প্রত্যেকের হাতে ওয়াকিটকি ছিল, কথাবার্তার বেশির ভাগই বলেছেন ইংরেজিতে।

যারা ইফতেখারকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন, তারাই ৯ জুন চাকরি দেয়ার কথা বলে, বিভিন্ন পরীক্ষার ফলের সনদ চান এবং পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে বলেন। টেরাকোটা নামের একটি রেস্তোরাঁয় তাদের বসার কথা ছিল। সৌরভের বাবা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ফুটেজে দেখা গেছে একটি প্রাডো গাড়িতে পাঁচ-ছয়জন এসে ইফতেখারকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। ফুটেজ পরিষ্কার। গাড়ি কার এবং ভেতরে কারা, সেটা চেষ্টা করলেই শনাক্ত করা যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54325 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1