বিক্রেতা পণ্যের দাম বেশি রেখেছে? পণ্যের মান নিয়ে সমস্যা? কিংবা অন্য কোনো উপায়ে ভোক্তাকে ঠকাতে চাইলে বিক্রেতার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাপসের মাধ্যমে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারবে ভোক্তা। পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক প্রতারণাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যকর হতে আরও মাস দুয়েক সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ইনোভেশন সোকেশিং ফেয়ার-২০১৯ এ এমন উদ্ভাবনী পদ্ধতি নিয়ে হাজির হয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোকেশিং ফেয়ারে এ পদ্ধতি উপস্থাপন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মাসুম আরেফিন।
সোকেশিং ফেয়ার প্রাঙ্গণে মাসুম আরেফিনের অনুপস্থিতিতে এ বিষয়ে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করে। ভোক্তাদের সেবা আরও সহজ করতে আমরা কিছু নতুন ফিচার নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভোক্তা অধিকার অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত অ্যাপস এবং ইউটিউব চ্যানেল।'
অ্যাপসের মাধ্যমে জনগণ কীভাবে সুবিধা পাবে জানতে চাইলে সোহেল শেখ জানান, আগে ভোক্তাকে অফিসে এসে কিংবা অনলাইনে অভিযোগ করতে হতো। এখন সেটা ভোক্তা হাতের স্মার্টফোনের মাধ্যমে করতে পারবে। যেখানে পণ্য ক্রয় করেছেন সেখান থেকেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারবেন।
এই অ্যাপসে ক্রয় রশিদটি আপলোড করা যাবে, নাম ঠিকানা, কী ধরনের প্রতারণার শিকার সবকিছুই লেখা যাবে। কেউ যদি অ্যাপস ব্যবহার করতে না চায়, তাহলেও অ্যাপসের মাধ্যমে ফোনে কথা বলেও লিখিত অভিযোগ করতে পারবেন। এ
অ্যাপসের মাধ্যমে নাগরিকের আরও দোরগোড়ায় ভোক্তা অধিকারের সেবা পৌঁছে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অ্যাপসটি কি এখনও চালু হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এখনও চালু হয়নি। তবে আশা করছেন আগামী দুই মাসের মধ্যে এটি চালু হয়ে যাবে।
সোহেল শেখ আরও বলেন, ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের অনেক ভিডিও ভোক্তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। এর মাধ্যমে ভোক্তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে পারবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাজ কী? কীভাবে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। অর্থাৎ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে জনগণের উপকারী সেবাগুলো রাখা হয়েছে। এগুলো ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের ইউটিউব চ্যানেলে অনেক ধরনের সেবা তারা দিতে পারবেন। চ্যানেলেই ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের লিংক, ফেসবুক পেজ, হটলাইন নম্বর, অ্যাপস যুক্ত থাকবে। এছাড়া তাদের বিদ্যমান যতো কার্যক্রম রয়েছে, ভিডিওগুলো এ চ্যানেলে দেয়া থাকবে। যাতে ভোক্তারা তাদের কার্যক্রম দেখতে পায় এবং তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে উৎসাহী হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ প্রচার সহজীকরণে এ চ্যানেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, দায়েরকৃত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত ও জরিমানা আরোপ করা হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭৬(৪) অনুযায়ী আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগকারীকে প্রদান করা হয়।