বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
বন্যার আরও অবনতি

বানভাসী এলাকায় খাদ্য সংকট

উজানের ঢল আর সপ্তাহব্যাপী টানা বর্ষণে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বন্যাদুর্গত মানুষ
যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
জামালপুরের বকশীগঞ্জে বন্যার পানি হুহু করে বাড়ছে। অব্যাহতভাবে বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকা পস্নাবিত হচ্ছে। বন্যার পানির কারণে সাধারণ মানুষ তাদের গরু-ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ছবিটি সোমবার তোলা -যাযাদি

উজানের ঢল আর সপ্তাহব্যাপী টানা বর্ষণে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বানভাসী মানুষ। কোথাও কোথাও সুপেয় পানি ও শুকনো খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।

যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা এবং ধুনট উপজেলার শতাধিক গ্রাম পস্নাবিত হয়েছে। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার সংকট দেখা দিয়েছে এসব এলাকায়। এছাড়া পানি ওঠায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ৪৭টি বিদ্যালয়।

কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদনদীর পানি বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন পস্নাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। জেলার ৯ উপজেলার ২৬২টি গ্রাম ভাসছে বানের পানিতে। পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন দুই লক্ষাধিক মানুষ। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু জায়গায়।

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। টাঙ্গন নদীর পানি বাড়ায় ঠাকুরগাঁও শহর ও নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পৌর এলাকার স্কুল- কলেজগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জিঞ্জিরাম ও ঝিনাই নদীর পানি বাড়ছে হুহু করে। বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে জেলার ৬ উপজেলার ৩ শতাধিক গ্রাম। বন্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে জেলার ৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এদিকে জেলা প্রশাসন থেকে বন্যাকবলিত এলাকায় ৯০ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নেত্রকোনার কংশ ও উব্দাখালী নদীর পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে পস্নাবিত হয়েছে সদর ও কলমাকান্দা উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বন্যায় এ জেলার ৮০ হেক্টর জমির আউশ-আমন এবং ১২০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।

এদিকে পদ্মা ও যমুনার পানি বাড়ায় ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়েছে মানিকগঞ্জ সদর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা। হুমকির মুখে রয়েছে বসতবাড়িসহ স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি।

যমুনার পানি বাড়ায় ভাঙনের কবলে পড়েছে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী কষ্টাপাড়া, ভালুটিয়া ও খান্নুরবাড়ি এলাকা। ভাঙনে ভিটে মাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন অনেকে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এছাড়া নদনদীর পানি বাড়ায় পদ্মা তীরবর্তী শরীয়তপুরসহ দেশের বেশকিছু এলাকার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার চার উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমাসহ সবকটি নদনদীর পানি বাড়তে থাকায় নতুন করে পস্নাবিত হচ্ছে চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা।

সরকারি হিসেবে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ১৫২টি চরাঞ্চল ও নিম্নঞ্চলের ১ লাখ ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হিসাবে চার উপজেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ছোট হাটবাজার, ব্রিজ-কালভার্ট। এছাড়া শত শত বিঘা জমির আমন ধানের বীজতলা, পাট, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। পানি ঢুকে পড়ায় ভেসে গেছে শত শত পুকুর ও খামারের মাছ। এদিকে, বন্যার কারণে জেলার চার উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকসহ আড়াই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারিভাবে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বানভাসীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে।

টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত চার দিন ধরে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও ঘাঘট নদীর পানি প্রতিদিনেই হুহু করে বাড়ায় তা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙা অংশে বালুর বস্তা ফেলে মেরামতের কাজ চলছে। সেই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের অংশগুলোও মেরামতে বালুর বস্তা ফেলানোর কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, পানিবন্দি হয়ে পড়া অধিকাংশ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, উঁচু জায়গা ও আশ্রয়কেন্দ্রে। গত তিন দিন ধরে দুর্গত এলাকার মানুষরা চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন। নিম্ন আয়ের মানুষরা খাবার সংগ্রহ করতে না পেরে থাকছেন অর্ধাহারে-অনাহারে। গো-খাদ্যের সংকটসহ হাঁস-মুরগি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা।

লালমনিরহাট : ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল কিছুটা কমে যাওয়ায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত কয়েক দিন থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হলেও সোমবার বিকাল ৩টা থেকে তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে পানি কমে বিপৎসীমার ০১ সে. মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। বসতবাড়ির চারপাশে এখনো পানি থাকায় পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে পাঁচ উপজেলার নদীসংলগ্ন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।

বন্যাদুর্গতরা জানান, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদি পশু-পাখি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তারা। পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও মিলছে না চিকিৎসা সেবা। যে ত্রাণ বরাদ্দ হিসেবে পেয়েছেন তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে কম বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের।

বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ): কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের ভান্ডা মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩-৪ হাজার মানুষ গত ৬-৭ দিন ধরে একাধারে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় তারা এখন বিপর্যস্থ অবস্থায় আছেন। জানা যায়, ভান্ডা মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮জন শিক্ষক বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও স্কুল করিডোরে হাঁটুপানি ভেঙে ৩১০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দিতে ওয়াকিবহাল অবস্থায় আছেন। এছাড়া স্কুলের ৪২ শতাংশ জায়গার বাহিরে পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরের লোকজন তাদের ড্‌ে্রন না থাকার কারণে স্কুলে পানি জমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্কুলে আসতে এ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। অন্যদিকে, সরাচর ছাড়াও নদীর পার্শ্ববর্তী এলকার আছানপুর, বোয়ালী, শিবপুর, চেংগাহাটি, লালখারচর, দয়ারামপুর, বাবুনগরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ নদীভাঙনে কবলের মধ্যে আতঙ্ক অবস্থায় রয়েছেন।

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম): অবিরাম বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা ও ধরলার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের ২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। দেখা দিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও ৭ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

১৫ জুলাই সোমবার বন্যাকবলিত এলাকা তিস্তা নদীর তীরবর্তী আনন্দ বাজার, শিয়াল খাওয়ার চর, চতুরা, রামহরি, তৈয়বখাঁ ও চর তৈয়বখাঁ, বিদ্যানন্দ ও চর বিদ্যানন্দ, গাবুর হেলান, চর খিতাব খাঁ, চর গতিয়াসাম এবং ধরলা নদীর তীরবর্তী ছিনাই ইউনিয়নের জয়কুমর, ছাট কালুয়া, নামা-জয়কুমর ও কিং ছিনাই ঘুরে দেখা গেছে ওই সব চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকার ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দিদের মাঝে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও গবাদি পশুর গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে উপজলার ৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের (ভারপ্রাপ্ত) সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনের বীজতলা।

ইসলামপুর: জামালপুরে বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীতে সোমবার বিকালে বন্যার পানি বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যার পানি ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ইসলামপুর উপজেলা ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৯০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে বলে জানান ইউপির চেয়ারম্যানরা। ইসলামপুর সদরের সাথে অন্তত ৩টি অভ্যন্তরীণ সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

\হসোমবার সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, বন্যায় ইসলামপুর-উলিয়া এবং ইসলামপুর-গুঠাইল ও ইসলামপুর-কুলকান্দি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইসলাপুরের ৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের দক্ষিণ চিনাডুলি, দেওয়ানপাড়া, ডেবরাইপেচ, বলিয়াদহ, সিংভাঙ্গা, পশ্চিম বামনা, পূর্ববামনা, গিলাবাড়ী, সাপধরী ইউনিয়নের আকন্দ পাড়া, পশ্চিম চেঙ্গানিয়া, পূর্ব চেঙ্গানিয়া ও কাশাড়ীডোবার, কুলকান্দি ইউনিনের বেরকুসা, টিনেরচর, সেন্দুরতলী, মিয়া পাড়া, বেলাগাছা ইউনিয়নের কাছিমারচর, দেলীপাড়, গুঠাইল, পাথর্শী ইউনিয়নের শশারিয়াবাড়ী, মোরাদাবাদ, মুকশিমলা, হাড়িয়াবাড়ী পশ্চিম মুজাআটা, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের ওলিয়া, রামভদ্রা, কাজলার অঞ্চলসমূহের বিস্তীর্ণ জনপদের বন্যা পরিস্থিতি মারাত্নক আকার ধারণ করেছে।

বকশীগঞ্জ (জামালপুর): জামালপুরের বকশীগঞ্জে বন্যার পানি হুহু করে বাড়ছে। অব্যাহতভাবে বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকা পস্নাবিত হচ্ছে। বন্যার পানির কারণে সাধারণ মানুষ তাদের গরু- ছাগল ও হাঁস-মুরগী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্যার পানিতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে গণি মিয়া (৩০) নামে এক যুবক মারা গেছেন।

জানা গেছে, বন্যার পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধির ফলে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বিলের পাড়, ঠান্ডার বন, ডেরুরবিল, আচ্চা কান্দি গাজীর পাড়া, বাঙ্গাল পাড়া, নয়া বাড়ি, বাচ্চাগাঁও নতুন করে পস্নাবিত হয়েছে। একই সাথে মদনের চর ও তালতলা গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

মেরুরচর ইউনিয়নের শেকেরচর, বেতমারী, জাগির পাড়া, ভাটি খেওয়ারচর, রবিয়ারচর এলাকা নতুন করে পস্নাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও বগারচর ইউনিয়নের বালুরচর, পেরিরচর, সাতভিটা, হামিদুপর, আলীরপাড়া গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা): গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছেন। বন্যার পানিতে ডুবে আনারুল ইসলাম (৩২) নামে এক যুবকের মৃতু্য হয়। নিহত আনারুল ইসলাম উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের গেন্দুরাম গ্রামের দুলা মিয়ার ছেলে।

একটানা ১০ দিন থেকে লাগাতার বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানির ঢলে উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গাইবান্ধা পাউবো কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তিস্তা নদীতে পানির স্তর ২৯.২২ সে.মি এবং ২ সে.মি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীতে বন্যার পানি বিপৎসীমার ৭৪ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকায় অনেকে অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। গবাদিপশু নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরি বাঁধ ও উঁচু স্থানসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে বন্যাকবলিত মানুষ। তারা খাদ্য, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও জ্বালানি না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58472 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1