বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিষ্ক্রিয়, স্থবির

হাসান মোলস্না
  ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

সর্বশেষ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক থেকে ঘোষণা এসেছিল ফ্রন্টের পরিধি বাড়বে। বাস্তবে হয়েছে এর উল্টোটা। ফ্রন্ট থেকে বের হয়ে গেছে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ১০ জুনের পরে দ্রম্নত সময়ের মধ্যে শীর্ষ নেতা কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে বৈঠকেরও কথা ছিল। তাও হয়নি। বৈঠক কবে হবে তাও জানেন না শীর্ষ কোনো নেতা। ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কথা বললেও সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম নেই তাদের। সবমিলে শরিক দলগুলোর কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে ঐক্যফ্রন্ট।

বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে ড. কামাল হোসেনকে নেতা মেনে ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। নির্বাচনে চরম বিপর্যয়ে তাদের কোনো আশা পূরণ হয়নি। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঐক্যফ্রন্টের বলিষ্ঠ ভূমিকারও আশা করেছিলেন অনেকে। তাও হয়নি। বরং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার মতো কোনো কার্যক্রম সামনে না আসার পাশাপাশি দুটি দল নিজেদের স্বার্থে ফ্রন্টের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায় জটিলতা আরও বেড়েছে। গণফোরাম ও বিএনপির সংসদ সদস্যদের সংসদে যোগদান, বগড়ুা-৬ উপনির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ অন্য শরিকরা মেনে নেয়নি। সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কারণ জানতে চেয়ে প্রথমে আল্টিমেটাম এবং পরে ফ্রন্ট ছাড়েন কাদের সিদ্দিকী। শরিক অন্যদের মধ্যেও সন্দেহ অবিশ্বাস বেড়েছে। সঙ্গত কারণে ফ্রন্টের শরিক দলগুলো ফ্রন্টকে বেগবান করার ব্যাপারে আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

সূত্রমতে, নেতাদের মধ্যে দূরত্ব ঘুচিয়ে ও 'ভুল বোঝাবুঝি' নিরসন করে ফের রাজপথে সক্রিয় করার মিশন নিয়ে সর্বশেষ গত ১০ জুন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও দ্রম্নত সময়ের মধ্যে ড. কামাল হোসেনের উপস্থিতিতেই পরবর্তী বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা ও সুরাহা হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। জোটের পরিধি বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরে আর কোনো বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আর বৈঠক করার ব্যাপারে এখন কেউ আর আগ্রহও দেখাচ্ছে না।

ঐকফ্রন্টের পরবর্তী কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলের ফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান যায়যায়দিনকে বলেন, ফ্রন্টের পরবর্তী কার্যক্রমের কোনো তথ্য তার কাছে নেই। সবার সঙ্গে আলোচনা করে জানাতে পারবেন।

ঐক্যফ্রন্টের পরবর্তী করণীয় প্রসঙ্গে ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ঐক্যফ্রন্ট কার্যক্রম আপাতত না থাকার প্রধান কারণ হচ্ছে শীর্ষ নেতাদের অসুস্থতা। ড. কামাল হোসেন, আ স ম আব্দুর রব অসুস্থ। এখন কার্যক্রম কিছুটা ঝিমিয়ে পড়লেও আগামী এক মাসের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। এই সংগঠন টিকবে বলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাবি করেন সুব্রত চৌধুরী।

বিএনপি ছাড়া শরিক কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলের জানা যায়, ঐক্যফ্রন্টের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন। তাই নতুন কোনো পস্নাটফর্মের মাধ্যমে ভিন্ন কিছু করার কথাও জানান কেউ কেউ। আর বিএনপি নেতারাও ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে ভালো কিছু আশা করেন না। এজন্য শুধু নিজেদের শক্তি নিয়ে সামনে দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করছে দলটি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট বিলুপ্ত করার কোনো সিদ্ধান্ত বিএনপি নেবে না।

বিএনপির সূত্রমতে, ভোটের মাঠের নিয়ামক শক্তি না হওয়া সত্ত্বেও ড. কামাল হোসেনকে নেতা মেনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পতাকাতলে শরিক হয়েছিল বিএনপি। দলটির অনেকের আশা ছিল শীর্ষ নেতৃত্বে অনুপস্থিতিতে ফ্রন্টকে সামনে রেখে ক্ষমতায় যাওয়ারও। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঐক্যফ্রন্টের বলিষ্ঠ ভূমিকাও আশা করেছিল বিএনপি। তাও হয়নি। সঙ্গত কারণে ঐক্যফ্রন্টকে এখন আর আগের মতো গুরুত্ব দিচ্ছে না বিএনপি। তবে ফ্রন্টকে বিলুপ্ত করার কথাও ভবছে না তারা। শুধু নিজেদের শক্তি নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<59031 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1