মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া মহাসড়ক নির্মাণকাজে ধীরগতি

নতুনধারা
  ১১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী

রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক পুনঃ নির্মাণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। তিনশ ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্যাকেজের মাধ্যমে এ কাজ চলছে গত দুই বছর ধরে। প্যাকেজগুলোর মধ্যে একটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে একটির মেয়াদ। তৃতীয় প্যাকেজের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ধীরগতিতে কাজ চলার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাচ্ছে যাত্রী সাধারণ ও পরিবহন শ্রমিকরা। মহসড়কের বিভিন্ন স্থানে এখনও রয়ে গেছে খানাখন্দ। ধুলাবালিও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

আঞ্চলিক এই মহাসড়কটি দিয়ে ফরিদপুর, ঢাকা, কুষ্টিয়া, বরিশাল, খুলনা, পাবনা, যশোরসহ বিভিন্ন জেলায় বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে থাকে।

রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ সূত্র জানায়, আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরন প্রকল্প' গোপালগঞ্জ জোন এর আওতায় চারটি প্যাকেজের মাধ্যমে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটির রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় থেকে পাংশা উপজেলার শিয়ালডাঙ্গি ৪৫ কিলোমিটার এলাকার পুনঃ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের শেষ দিকে।

প্রথম প্যাকেজে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত আট কিলোমিটার রাস্তার কাজটি ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর শুরু হয়। ৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে কাজটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র রাস্তার দুপাশে সংকেত স্থাপনের কাজ বাকী রয়েছে।

দ্বিতীয় প্যাকেজে জেলা পরিষদ থেকে আহমেদ আলী মৃধা কলেজ পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠা স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ার্স ও অহিদ কনস্ট্রাকশন এ প্যাকেজের কাজ করছে। এ প্যাকেজের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত ২৬ জুন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৫০ ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে নির্মাণ ব্যয়ও। নতুন করে নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ কোটি ২০ লাখ টাকা।

তৃতীয় প্যাকেজটি সবচেয়ে বড়। ২২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে আহমেদ আলী মৃধা কলেজ থেকে শিয়ালডাঙ্গি পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজটি করছে মীর হাবিবুল আলম ও শামীম এন্টার প্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ৩৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই- একথা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ স্বীকার করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শহরের বড়পুল থেকে পাংশা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে কোথাও কোথাও সমতল আবার কোথাও খানাখন্দে ভরা। বৃষ্টির পানি আটকে আছে অনেক জায়গায়। বাস, ট্রাক, অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলছে হেলেদুলে। কোথাও ধুলায় একাকার।

প্যাকেজ ২ এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মীর্জা বেগ জানান, ৪.১ কিলোমিটারের মধ্যে ২.১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদের নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হবে।

প্যাকেজ ৩ এর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর হাবিবুল আলম লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী মীর হাবিবুল আলম জানান, যখন ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছিলেন তখন বর্ষা মৌসুম ছিল। তাই তারা কাজ করতে পারেননি। এখন বর্ষা মৌসুম চলছে। আমরা মালামাল নিয়ে প্রস্তুত আছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হয়তো কাজ শেষ হবেনা। কিছুটা সময় লাগবে। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করেন তিনি।

রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আশিকুল ইসলাম বলেন, তিনটি প্যাকেজের মধ্যে ১ম প্যাকেজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ করতে সময় লাগার কারণে ২য় প্যাকেজের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা যায়নি। এ পর্যন্ত ৩৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। শহরের বড়পুল পর্যন্ত বিটুমিন প্রথম পর্যায় শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ বাকী রয়েছে। এ প্যাকেজের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এ প্যকেজের নির্মাণ ব্যয় বাড়ানোর কারণ সম্পর্কে বলেন, রাজবাড়ী পৌরসভার ডিজাইন অনুযায়ী ড্রেন করার কারণে নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। ৩য় প্যাকেজের কাজের গতি বাড়ানোর জন্য ঠিকাদারকে বারবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। যে গতিতে কাজ চলছে তার চেয়ে অনেক বেশি গতিতে কাজ করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হতে পারে। এ ভাবে চললে কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আসন্ন ঈদুল আযহায় ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নির্মাণাধীন মহাসড়কের খানাখন্দ ভরাট করা হবে।

অপরদিকে চতুর্থ প্যাকেজে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাগমারা থেকে জৌকুড়া ঘাট পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলছে। এ রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<62224 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1